উপরের উদ্ধৃতিগুলো থেকে আরেকটা সাংঘর্ষিক বৈপরীত্য ফুটে ওঠে। মথি ও মার্ক উভয়ে উল্লেখ করেছেন যে, ইহুদি মহাযাজক (মহা-ইমাম) ও মহাসভা/ মাহফিল (council) যীশুর বিচার করেন। তারা তাঁর অপরাধ প্রমাণের জন্য সাক্ষী অনুসন্ধান করেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং শেষে কুফরীর (blasphemy) অপরাধে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের ঘোষণা দেন। লূকও সাক্ষী সন্ধান ও বিচারের কথা লেখেছেন। কিন্তু তিনি কোনো রায়ের কথা লেখেননি। যোহন সম্পূর্ণ বিপরীত বর্ণনা দিয়েছেন। যোহনের বর্ণনায় মহা-ইমাম কোনো সাক্ষী খুঁজেন নি, বিচার করেননি বা কোনো রায়ও দেননি। তিনি শুধু কয়েকটা প্রশ্ন করে তাঁকে কাইয়াফার কাছে পাঠিয়ে দেন। এরপর কাইয়াফার নিকট থেকে তাঁকে পীলাতের কাছে নেওয়া হয়।
উপরন্তু যোহনের বর্ণনা নিশ্চিত করে যে, ইহুদিরা যীশুর বিচার করেননি এবং মৃত্যুদণ্ড প্রদানের মত বিচার করার কোনো অধিকারও তাদের ছিল না। যোহন লেখেছেন: ‘‘লোকেরা ঈসাকে কাইয়াফার কাছ থেকে খুব ভোরে রাজপ্রাসাদে নিয়ে গেল। ... অতএব পীলাত বাইরে তাদের কাছে গেলেন ও বললেন, তোমরা এই ব্যক্তির উপরে কি দোষারোপ করছো? তারা জবাবে তাঁকে বললো, এ যদি দুস্কর্মকারী না হত, আমরা আপনার হাতে একে তুলে দিতাম না। তখন পীলাত তাদেরকে বললেন, তোমরাই ওকে নিয়ে যাও এবং তোমাদের শরীয়ত মতে ওর বিচার কর। ইহুদীরা তাঁকে বললো, কোন ব্যক্তিকে হত্যা করতে আমাদের অধিকার নেই... ’’ (যোহন ১৮/২৮-৩৩)
এখানে পীলাত যখন যীশুকে ইহুদি আইনে বিচার করতে ইহুদি ধর্মগুরুদের বললেন, তখন তারা বলছেন না যে, আমরা তার বিচার করেছি, মৃত্যুদণ্ড-র রায় প্রদান করেছি, তবে তা কার্যকর করার ক্ষমতা আমাদের নেই, সেজন্য আপনার কাছে এনেছি। বরং যোহনের পূর্ববর্তী বর্ণনা ও এ বক্তব্য নিশ্চিত করে যে, ইহুদি নেতারা যীশুর বিচার করেননি, মৃত্যুদণ্ড-র রায় দেওয়া তো দূরের কথা। বরং তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে হত্যার ষড়যন্ত্র করে তাঁকে পীলাতের কাছে সমর্পণ করেন।