মূল হিব্রু-আরামাইক ইঞ্জিল হারিয়ে যাওয়ার অন্য কারণ হিব্রু খ্রিষ্টানদের ক্রমান্বয়ে নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল হয়ে যাওয়া। প্রথম যুগগুলোতে খ্রিষ্টানরা মতবিরোধকারী দলগুলোকে ‘মুরতাদ’ বা ধর্মদ্রোহী (heretic) বলে আখ্যায়িত করে নির্মূল করতেন এবং তাদের ধর্মগ্রন্থ ও পুস্তকাদিও নির্মূল করতেন। নতুন নিয়মের পুস্তকাদি প্রসঙ্গে আমরা দেখেছি যে, টিটানকে ধর্মদ্রোহী ঘোষণার পর টিটানের ইঞ্জিলের সকল পাণ্ডুলিপি কিভাবে বিশপরা নির্মূল করেন। রোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ইহুদিদের বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে ৭০ খ্রিষ্টাব্দে জেরুজালেম ধ্বংস হয়। এ সময়ে ইহুদিদের সাথে জেরুজালেমের হিব্রু-খ্রিষ্টানরাও নির্মূল হন। ফলশ্রুতিতে পলীয় গ্রিক-খ্রিষ্টানরা প্রাধান্য পেয়ে যান। প্রাধান্য লাভের পর তারা পরাজিত হিব্রু-খ্রিষ্টানদের নির্মূল করার পাশাপাশি হিব্রু-আরামীয় ইঞ্জিলের সকল পাণ্ডুলিপি নির্মূল করেন। প্রথম যুগগুলো খ্রিষ্টান ধর্মগুরু, যাজক, পোপ ও রাষ্ট্র কর্তৃক ভিন্ন ধর্ম ও ভিন্নমতের মানুষদের সাথে ভিন্নমতের পুস্তক, ধর্মগ্রন্থ ও ইঞ্জিলগুলো নির্মূল করার বিষয়ে পাশ্চাত্য ইহুদি ও খ্রিষ্টান গবেষকদের পরিচালিত stewartsynopsis.com, easysurf.cc/christ.htm ইত্যাদি ওয়বেসাইট দেখতে পারেন। এখানে সংক্ষিপ্ত একটা বিবরণ দেখুন:
“In A.D. 303, the pagan emperor Diocletian ordered the destruction of all Christian writings. In A.D. 324 Constantine became the ruler of the entire Roman Empire. The pagan emperor Constantine wanted to unify the rival Christian factions in the Roman Empire for political reasons. In A.D. 325, he convened the Council of Nicea. The followers of Paul gained control of the council. They ordered great changes: Jesus of Nazareth was declared divine. Jesus was now a god, not a mortal prophet. Only four of the gospels were chosen as the official gospels of the Church. New versions of the gospels had to be written. They were edited to make the Romans less culpable and the Jews more culpable for the Crucifixion of Jesus. Over three hundred other gospels were ordered to be destroyed (including all Gospels written in Hebrew). An edict was issued stating that anyone found in possession of an unauthorized gospel would be put to death.”
‘‘৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে পৌত্তলিক রোমান সম্রাট ডায়াকিলটিয়ান সকল খ্রিষ্টধর্মীয় লেখনি ধ্বংস করার নির্দেশ প্রদান করেন। ৩২৪ খ্রিষ্টাব্দে কন্সটান্টাইন সমগ্র রোমান সাম্রাজ্যের অধিপতি হন। পৌত্তলিক সম্রাট কন্সটান্টাইন রাজনৈতিক স্বার্থে পারস্পরিক শত্রুতায় লিপ্ত খ্রিষ্টান দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। ৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিসিয়ার সম্মেলন আহবান করেন। পলের অনুসারীরা এ সম্মেলনের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যান। তারা ব্যাপক পরিবর্তনের নির্দেশ দেন। নাসরতীয় যীশুকে ঐশ্বরিক সত্ত্বা বলে ঘোষণা করা হল। এখন তিনি ঈশ্বর, তিনি আর মানুষ নবী নন। শুধু চারটা ইঞ্জিলকে চার্চের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃত ইঞ্জিল বলে গ্রহণ করা হল। ইঞ্জিলগুলোর নতুন সংস্করণ লেখতে হল। যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার অপরাধে রোমানদেরকে কম নিন্দনীয় ও ইহুদিদেরকে অধিক নিন্দনীয় করার জন্য ইঞ্জিলগুলো সম্পাদনা করা হল। তিন শতেরও অধিক অন্যান্য ইঞ্জিল বিনষ্ট ও নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া হল। হিব্রু ভাষায় রচিত সকল ইঞ্জিল এ বিনষ্ট-তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। একটা ফরমান জারি করা হয় যে, যার কাছেই অস্বীকৃত কোনো ইঞ্জিল পাওয়া যাবে তাকেই হত্যা করতে হবে।’’[1]