এভাবে বাইবেলে বহু স্থানে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য সৃষ্টিকে: নবী, ফেরেশতা, বাদশাহ বা অন্যদেরকে সাজদা করা হয়েছে এবং নবীরা ও ধার্মিকরাই এরূপ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি ‘ওয়র্শিপ’ বা ‘ইবাদত’ শব্দটাও আল্লাহ ছাড়া অন্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। উপরে আমরা দেখেছি যে, ইউসা বা যিহোশূয় ফেরেশতাকে ‘ইবাদত’ করেছেন বলে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেরির অনুবাদে সকল স্থানে ‘প্রণিপাত’ লেখা হয়েছে। কিন্তু কিতাবুল মোকাদ্দসের অনুবাদে অনেক হেরফের রয়েছে। এ পুস্তকেই অনেক স্থানে ওয়র্শিপ অর্থ সেজদা (সাজদা) বা এবাদত (ইবাদত) লেখা হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য স্থানে ‘ওয়র্শিপ’ শব্দের এমন সব অর্থ লেখা হয়েছে যা শব্দটার আভিধানিক বা ব্যবহারিক অর্থ থেকে বহু দূরবর্তী।
কোথাও ওয়র্শিপের অর্থ লেখা হয়েছে ‘উবুড় হওয়া’। মথি লেখেছেন: ‘‘there came a certain ruler, and worshipped him, saying’’: ‘‘তখন একজন নেতা/শাসক আসলেন এবং তাঁকে ইবাদত/উপাসনা/ ভজনা করে বললেন।’’ (মথি ৯/১৮)। এখানে কিতাবুল মোকাদ্দসের অনুবাদ: ‘‘তখন একজন ইহুদি নেতা তাঁর কাছে আসলেন এবং তাঁর সামনে উবুড় হয়ে বললেন।’’
অন্যত্র মথি লেখেছেন: ‘‘Then came she and worshipped him, saying: তখন স্ত্রীলোকটি এসে তাঁকে ইবাদত করে বলল...।’’ (মথি ১৫/২৫)। কিতাবুল মোকাদ্দসের অনুবাদ: ‘‘সেই স্ত্রীলোকটি কিন্তু ঈসার কাছে এসে তাঁর সামনে উবুড় হয়ে পড়ে বলল।’’
এভাবে বারবার ওয়র্শিপ শব্দের অর্থ লেখা হচ্ছে ‘উবুড় হওয়া’। অথচ অন্যান্য স্থানে এ শব্দেরই অর্থ লেখা হয়েছে ‘এবাদত করা’ বা ‘সেজদা করা’। আর এ কথা তো সকলেরই জানা যে, দেবতার সামনে উবুড় হয়ে সাজদা করা ছাড়া সাধারণ চিত, কাত বা উবুড় হওয়ার সাথে ‘ওয়র্শিপ’ শব্দটার কোনো সম্পর্ক নেই।