ইসলামী তাক্বদীরে বিশ্বাস ও অনৈসলামিক ভাগ্যে বিশ্বাসকে অনেক সময় এক করে ফেলা হয়। অনেকে মনে করেন ভাগ্য অনুসারেই যখন সবকিছু হবে তখন কর্মের কি দরকার। আমরা দেখলাম যে, এ সকল চিন্তা ওহীর বিকৃতি ও যুক্তি-তর্ক ভিত্তিক ‘ধারণা’ মাত্র, মক্কার কাফিরদের ধারণার মতই একটি বিকৃত ধারণা মাত্র।
যে অবিশ্বাসী তাক্বদীর নিয়ে বিবাদ করে, তাক্বদীরের দোহাই দিয়ে কর্ম ছেড়ে দেয় সে মূলত নিজেকে আল্লাহর কর্মের পরিদর্শক ও বিচারক নিয়োগ করেছে। সে বলতে চায়, কর্ম করা আমার দায়িত্ব নয়, আমার কাজ হলো আল্লাহর কাজের বিচার করা।
আর মুমিনের বিশ্বাস, আল্লাহর কর্মের বিচার করা মানুষের কর্ম নয়। তিনি কি জানেন, কি লিখেছেন, কি মুছেন আর কি রেখে দেন কিছুই মানুষকে জানাননি। কারণ, এসব জানা মানুষের কোনো কল্যাণে আসবেনা। এসব কিছুই তাঁর মহান রুবূবিয়্যাতের অংশ। মানুষের দায়িত্ব আল্লাহর রহমত ও করুণার উপরে আস্থা রেখে আল্লাহর নির্দেশ মত কর্ম করা, ফলাফলের জন্য উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা মনে স্থান না দেওয়া। ইসলামের তাক্বদীরে বিশ্বাস মুসলিমকে কর্মমূখী করে তোলে, কখনই কর্মবিমূখ করেনা। তাক্বদীরে বিশ্বাসের ফলে মানুষ সকল হতাশা, অবসাদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পায়। মুসলিম জানে যে, তার দায়িত্ব কর্ম করা, ফলাফলের জন্য দুশ্চিন্তা বা উৎকণ্ঠা তার জীবনে অর্থহীন, কারণ ফলাফলে দায়িত্ব এমন এক সত্তার হাতে যিনি তাকে তার নিজের চেয়েও ভাল জানেন, ভালবাসেন, যিনি দয়াময়, যিনি কাউকে জুলুম করেন না। যিনি তাঁর বান্দাকে কর্মের চেয়ে বেশি পুরস্কার দিতে চান। তাই মুমিন উৎকণ্ঠা মুক্ত হয়ে কর্ম করেন।
তাক্বদীরের বিশ্বাস মুসলিমকে অহংকার, অতিউল্লাস ও হতাশা থেকে রক্ষা করে। তার জীবনে সফলতা বা নিয়ামত আসলে সে অহংকারী হয়ে উঠেনা। সে জানে আল্লাহর ইচ্ছায় ও রহমতেই সে সফলতা লাভ করেছে। তার হৃদয় কানায় কানায় ভরে ওঠে কৃতজ্ঞতায়। কৃতজ্ঞ হৃদয় আর অহংকারী হৃদয়ের মধ্যে রয়েছে মানবিক ও পাশবিক হৃদয়ের পার্থক্য।
অপরদিকে মুমিন ব্যর্থতায় বা পরাজয়ে হতাশ হয় না। সে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর ইচ্ছা ও জ্ঞান অনুযায়ী সে ফল পেয়েছে, নিশ্চয় এর মধ্যে কোনো কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সে জানে যে, তার প্রচেষ্টা ও কর্মের জন্য সে অবশ্যই আল্লাহর কাছে পুরস্কার লাভ করবে। কাজেই সে হতাশ না হয়ে নিজের কর্মের ভুল দূর করে আল্লাহর নির্দেশ মত চেষ্টা করতে থাকে, ফলাফলের দায়িত্ব আল্লাহর উপর ছেড়ে দেয়।
তাক্বদীরে বিশ্বাসের ফল আমরা দেখতে পাই এ বিশবাস সর্বপ্রথম যাদের জীবনে এসেছিল তাঁদের জীবনে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবীগণের জীবনে। আমরা দেখেছি তাক্বদীরের উপর সবচেয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ছিল মহানবী (ﷺ)-এর, আর তাই তিনি সবচেয়ে ছিলেন বেশি দৃঢ় প্রত্যয়ী কর্মবীর। তিনি তার সাধ্যমত কর্ম করেছেন, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন তার করুণার জন্য, আর ফলাফলের ভার ছেড়ে দিয়েছেন তার প্রতিপালকের কাছে। ঠিক তেমনি অকুতোভয় দুঢ়প্রত্যয়ী কর্মবীর ছিলেন তাঁর সাহাবীগণ, তাক্বদীরে বিশ্বাস তাদের সকল সংশয়, ভয়, দুশ্চিন্তা দূর করে বিশ্বজয়ে প্রেরণা জুগিয়েছে।
এ বিশ্বাসের জন্যই অতি নগন্য সংখ্যক বিশ্বাসী মুসলিম বিপুল সংখ্যক অবিশ্বাসীর বিরুদ্ধে অকুতোভয়ে দাঁড়াতে পেরেছেন। এইরূপ অকুতোভয় শক্তিশালী তাক্বদীরে বিশ্বাসী কর্মবীর মুমিনকে আল্লাহ ভালবাসেন, যার তাক্বদীরে বিশ্বাস তাকে পরাজয়ের হতাশা, হা হুতাশ ও গ্লানি থেকে রক্ষা করে। অতীতের পরাজয় বা ব্যর্থতা নিয়ে যিনি আফসোস বা হা-হুতাশ করেন না, আবার ভবিষ্যতের পরাজয়ের দুশ্চিন্তাও তাকে দ্বিধান্বিত করতে পারে না। বরং সকল পরাজয় পায়ে দলে তাকদীরের বিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে তিনি সামনে এগিয়ে যান। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
الْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ وَفِي كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَلا تَعْجَزْ وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلا تَقُلْ لَوْ أَنِّي فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللَّهِ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ
‘‘শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর নিকট দূর্বল মুমিন থেকে বেশি প্রিয় ও বেশি ভাল, তবে তাদের উভয়ের মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। তোমার যাতে কল্যাণ ও মঙ্গল রয়েছে সে বিষয়ে আগ্রহী ও সচেষ্ট হও এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা কর। অক্ষম, দূর্বল বা হতাশ হয়ে যেওনা। যদি তোমার কিছু হয় (যদি তুমি আশানুরূপ ফল না পাও বা ব্যর্থ হও) তবে কখনো বলবেনা: হায়, যদি আমি ঐ কাজ করতাম বা সেই কাজ করতাম তাহলে হয়ত এরূপ হতো.. (অতীতের ব্যার্থতা নিয়ে হা হুতাশ করবে না) বরং (তাক্বদীরের বিশ্বাসের বলীয়ান হয়ে) বলবে: আল্লাহর তাক্বদীরে যা ছিল হয়েছে, আল্লাহর যা মর্জি হয়েছে তাই করেছেন। কারণ, অতীতকে নিয়ে আফসোস করে ‘‘যদি ঐ কাজ করতাম তবে হয়ত এরূপ হতো’’-এ ধরনের কথা শয়তানের দরজা খুলে দেয়।’’[1]
তাক্বদীরে বিশ্বাস হৃদয়ের দরজা শয়তানের জন্য বন্ধ করে দেয়। সেখানে শয়তান হতাশা বা অবসাদের বীজ বপন করতে পারে না। আল্লাহর আমাদের সবাইকে ঈমান দান করুন। আমাদেরকে ঈমানের শক্তিতে, কর্মের শক্তিতে, দেহের শক্তিতে, জ্ঞানের শক্তিতে শক্তিশালী করে তাঁর প্রিয় শক্তিশালী মুমিন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকদীরে বিশ্বাসের বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) বলেন: ‘‘আল্লাহ তা‘আলা দয়া ও মেহেরবানী পূর্বক যাকে ইচ্ছা সুপথ প্রদর্শন করেন। আর তিনি ন্যায়পরায়ণতা পূর্বক যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন। বিভ্রান্ত করার অর্থ সাহায্য পরিত্যাগ করা। সাহায্য পরিত্যাগের ব্যাখ্যা এই যে, মহান আল্লাহ সে বান্দাকে তাঁর সন্তুষ্টির প্রতি তাওফীক প্রদান করেন না। বিষয়টি তাঁর ন্যায়পরায়ণতার প্রকাশ। অনুরূপভাবে যে পাপীকে তিনি পাপা ও অবাধ্যতার কারণে পরিত্যাগ করেছেন তার পাপের কারণে শাস্তি প্রদানও তাঁর ন্যায়পরায়ণতার প্রকাশ। আমাদের জন্য এ কথা বলা বৈধ নয় যে, শয়তান জবরদস্তি করে বা জোর করে মুমিন বান্দার ঈমান কেড়ে নেয়। বরং আমার বলি: বান্দা তার ঈমান পরিত্যাগ করে, তখন শয়তান তা তার থেকে ছিনিয়ে নেয়।’’[2]
‘‘মহান আল্লাহ সৃষ্টজগত সৃষ্টি করেছেন ঈমান ও কুফর থেকে বিমুক্ত অবস্থায়। অতঃপর তিনি তাদেরকে সম্বোধন করেছেন এবং আদেশ ও নিষেধ প্রদান করেছেন। যে ব্যক্তি কুফ্রী করেছে সে নিজের কর্ম দ্বারা, অস্বীকার করে, সত্যকে অমান্য করে এবং আল্লাহর সাহায্য, রহমত ও তাওফীক থেকে বঞ্চিত হয়ে কুফ্রী করেছে। আর যে ব্যক্তি ঈমান এনেছে সে তার কর্ম দ্বারা, স্বীকৃতি দ্বারা, সত্য বলে ঘোষণা করে এবং আল্লাহর তাওফীক ও সাহায্য লাভের মাধ্যমে ঈমান এনেছে। তিনি আদমের পিঠ থেকে তাঁর বংশধরদেরকে পরমাণুর আকৃতিতে বের করে তাদেরকে সম্বোধন করেন। তিনি তাদেরকে ঈমানের নির্দেশ দেন এবং কুফ্র থেকে নিষেধ করেন। তারা তাঁর রুবূবিয়্যাতের স্বীকৃতি দিয়েছে। এ ছিল তাদের পক্ষ থেকে ঈমান। আদম সন্তানগণ এই ফিতরাতের উপরেই জন্মলাভ করে। এরপর যে কুফ্রী করে সে নিজেকে পরিবর্তন করে ও বিকৃত করে। আর যে ঈমান আনে এবং সত্যতার ঘোষণা দেয় সে তার প্রকৃতিগণ ঈমানের উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকে। তিনি তাঁর সৃষ্টির কাউকে কুফরী করতে বাধ্য করেন নি এবং ঈমান আনতেও বাধ্য করেন নি। তিনি কাউকে মুমিন-রূপে বা কাফির-রূপে সৃষ্টি করেন নি। তিনি তাদেরকে ব্যক্তি-রূপে সৃষ্টি করেছেন। ঈমান ও কুফ্র বান্দাদের কর্ম। কাফিরকে আল্লাহ তার কুফরী অবস্থায় কাফির হিসেবেই জানেন। যখন সে এরপর ঈমান আনয়ন করে তখন আল্লাহ তাকে তার ঈমানের অবস্থায় মুমিন হিসেবে জানেন এবং ভালবাসেন। আর এতে আল্লাহর জ্ঞান ও বিশেষণে কোনো পরিবর্তন হয় না। বান্দাদের সকল কর্ম ও নিষ্কর্মতা- অবস্থান ও সঞ্চলন সবই প্রকৃতভাবে তাদের উপার্জন, আল্লাহ তা‘আলা তার স্রষ্টা। এ সবই তাঁর ইচ্ছায়, জ্ঞানে, ফয়সালায় ও নির্ধারণে। আল্লাহর আনুগত্যের সকল কর্ম আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে জরুরী এবং তা আল্লাহর মহববত, সন্তুষ্টি, জ্ঞান, ইচ্ছা, ফয়সালা ও নির্ধারণ অনুসারে। সকল পাপকর্ম আল্লাহর জ্ঞান, ফয়সালা, নির্ধারণ ও ইচ্ছার মধ্যে সংঘটিত, তবে তা আল্লাহর মহববত, সন্তুষ্টি এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে সংঘটিত নয়।’’[3]
উপরের আলোচনা থেকে তাকদীরের বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা এবং এবং আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিশ্বাস জানতে পেরেছি। এখানে মূল বিষয়, বান্দার নিজের দায়িত্ব অনুভব করা। মহান আল্লাহ বলেছেন, বান্দা তুমি কর্ম কর, আমি কখনোই কারো কর্মফল নষ্ট করব না, কারো উপর জুলুম করব না, প্রত্যেককে তার প্রত্যেক কাজের ফল দান করব। আবার তিনি বলেছেন, বান্দা আমি জানি তুমি কি করবে, আমি ইচ্ছা করলে তোমার কর্ম পরিবর্তন করতে পারি এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তুমি যেতে পার না। এখন বান্দার সামনে দুটি বিকল্প: একজন বান্দা জানে যে আল্লাহ সবই জানেন এবং তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই হয় না, সে এও জানে যে আল্লাহ তাকে কর্ম করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এখন তার মনে নানন প্রশ্ন। আল্লাহ যখন সবই জানেন তাহলে আর কষ্ট করে কি লাভ। আল্লাহ কাজ করতে বলেছেন বটে, তবে তাতে কী লাভ হবে? আল্লাহর ইলমে কী আছে আমার বিষয়ে? এভাবে বান্দা আল্লাহ জ্ঞান ও কর্মের হিসাব গ্রহণে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং নিজের দায়িত্বে অবহেলা করে। এ বান্দা মূলত আল্লাহর নিদের্শেও বিশ্বাস করে নি এবং আল্লাহর ওয়াদাতেও বিশ্বাস করেনি। সে নিজেকে আল্লাহর কাজের হিসাব গ্রহণকারী বলে মনে করেছে। নিঃসন্দেহে সে ধ্বংসগ্রস্ত।
অন্য একজন বান্দা জানে যে, আল্লাহ সবই জানেন এবং তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই হয় না, সে এও জানে যে আল্লাহ তাকে কর্ম করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সে জানে আল্লাহর মহান জ্ঞান ও ইচ্ছার প্রকৃতি অনুধাবন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, আমার দায়িত্বও নয়। আমি আল্লাহর জ্ঞান ও ইচ্ছায় বিশ্বাস করি এবং আল্লাহর ওয়াদা ও দয়ায় বিশ্বাস করি। আমি আমার দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করি এবং আল্লাহর সাহায্য ও দয়া চাইতে থাকি। নিঃসন্দেহে এ বান্দা সফলতার পথ পেয়েছে।
এ বিষয়ে ইমাম তাহাবী (রাহ) বলেন: ‘‘মূল তাক্বদীর হলো সৃষ্টিজগতে আল্লাহ্ তা’আলার এক রহস্য। এ সম্পর্কে আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত কোনো ফিরিশতাও যেমন অবগত নন, তেমনি কোনো নবী রাসূলও অবগত নন। এ বিষয়ে গভীরভাবে তলিয়ে দেখার চেষ্টা করা বা চিন্তা ভাবনা করার পরিনতি ব্যর্থতা, বঞ্চনা ও সীমা লংঘন ব্যতীত আর কিছুই নয়। কাজেই, এ নিয়ে চিন্তা ভাবনা ও কুমন্ত্রনা হতে পূর্ণ সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা স্বয়ং তাক্বদীরের জ্ঞান তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে গোপন রেখেছেন এবং তাদেরকে এর তত্ত্ব উদঘাটনের প্রচেষ্টা চালানো থেকে বারণ করেছেন। আললাহ্ তা’আলা তাঁর পবিত্র কিতাবে বলেন: ‘‘তিনি যা করেন সে সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করা যাবে না বরং তারাই আপন কৃতকর্মের জন্য জিজ্ঞাসিত হবে।’’[4] সুতরাং যে ব্যক্তি প্রশ্ন করলো, তিনি কেন এ কাজ করলেন? সে আসলে আল্লাহর কিতাবের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করলো। আর যে ব্যক্তি কিতাবের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে সে কাফিরদের অর্ন্তভূক্ত হয়ে যায়। এ হচ্ছে ইসলামী আক্বীদার মোটামোটি বিষয় যার প্রতি আলোজ্জল হৃদয়ের অধিকারী আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ মুখাপেক্ষী। আর এটাই্হচ্ছে সুগভীর প্রজ্ঞা সম্পন্ন ব্যক্তিদের পর্যায়। কারণ, জ্ঞান দু প্রকার, এক প্রকার জ্ঞান: যা সৃষ্টিকুলের মধ্যে বিদ্যমান (যা আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে জানিয়েছে)। অতএব বিদ্যমান জ্ঞানের অস্বীকৃতি কুফরী কাজ এবং অবিদ্যমান জ্ঞানের (ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ যা জানান নি সেরূপ গাইবী জ্ঞান) দাবীও কুফরী কাজ। প্রকৃত ঈমান কেবল তখনই প্রতিষ্ঠিত হয় যখন বিদ্যমান জ্ঞানকে বরণ করা হয় এবং অবিদ্যমান জ্ঞানের অন্বেষণ বর্জন করা হয়। (মহান আল্লাহ যতটুকু বলেছেন ততটুকু গ্রহণ ও বিশ্বাস এবং যা বলেন নি তা নিয়ে গবেষণা বা আলোচনা বর্জন করা।)’’[5]
[2] মোল্লা আলী কারী, শারহুল ফিকহিল আকবার, পৃ. ১৬৯-১৭০।
[3] মোল্লা আলী কারী, শারহুল ফিকহিল আকবার, পৃ. ৮২-৯৪।
[4] সূরা আম্বিয়া: ২৩ আয়াত।
[5] আবূ জাফর তাহাবী, মাতনুল আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ, পৃ. ১১-১২।