শাফা‘আত (الشفاعة) অর্থ সুপারিশ করা বা কারো দাবি বা আব্দারকে সমর্থন করা। শব্দটি ‘আশ-শাফউ (الشفع) থেকে গৃহীত, যার অর্থ জোড়া বা জোড়া বানানো। শাফা‘আতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনুল আসীর (৬০৬ হি) বলেন: ‘‘হাদীসে বিভিন্ন স্থানে শাফা‘আত শব্দটি এসেছে জাগতিক বা আখিরাতের বিষয়ে। এর অর্থ পাপ বা অপরাধের শাস্তি না দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করা।’’[1]
আমরা দেখেছি যে, আরবের মুশরিকগণ, খৃস্টানগণ ও অন্যান্য বিভ্রান্ত জাতি ফিরিশতা ও নবী-ওলীগণের শাফা‘আতকে তাঁদের অধিকার ও ক্ষমতা বলে বিশ্বাস করে বিভ্রান্ত হয়েছে। তারা মনে করত যে, মহান আল্লাহ তাঁদেরকে শাফা‘আত করার জন্য নিঃশর্ত ও উন্মুক্ত অনুমতি, অধিকার বা ক্ষমতা প্রদান করেছেন। কাজেই তাঁরা তাঁদের ইচ্ছামত যে কাউকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিতে পারবেন। এ বিশ্বাসের ভিত্তিতে তারা তাঁদের শাফা‘আত লাভের আশায় অতিভক্তি বা শিরকে লিপ্ত হতো।
পক্ষান্তরে মুসলিম উম্মাহর খারিজী, মু’তাযিলা ও অন্যান্য কতিপয় ফিরকা পাপীদের জন্য নবীগণের বা অন্যদের শাফা‘আত অস্বীকার করে। এক্ষেত্রে তাদের দলিলগুলি মূলত দু প্রকারের: (১) কুরআন কারীমের শাফা‘আত অস্বীকার বিষয়ক আয়াতগুলি এবং (২) তাদের মতবাদ ভিত্তিক যুক্তি। তাদের মতে পাপী মুসলিমের শাস্তি না দেওয়া আল্লাহর ন্যায়বিচারের পরিপন্থী, কাজেই আল্লাহ নিজের রহমতে বা অন্য কারো শাফা‘আতে কোনো পাপীকে ক্ষমা করতে পারেন না। আমরা কুরআন-হাদীসের আলোকে শাফা‘আত বিষয়ে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আকীদাহ ব্যাখ্যা করব।