উত্তর : বিশৃংখলা সৃষ্টি করা এবং বিধ্বংসী কার্যক্রম পরিচালনা করা জায়েয নয়। এর দ্বারা মুসলিমদের নানাবিধ ক্ষতি সাধিত হয়। মুসলিমগণ গণহত্যা ও দেশান্তরিত হওয়ার শিকার হন। মুসলিমদের শক্তি-সামর্থ থাকলে একমাত্র জিহাদের ময়দানে কাফিরদের মুখোমুখি হওয়া ও তাদের মুক্বাবিলা করা জায়েয। যেমনভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছেন। বিধ্বংসী কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং বিশৃঙখলা সৃষ্টি করার দ্বারা মুসলিমদের সমূহ ক্ষতি সাধিত হয়।[1]
হিজরাতের পূর্বে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মক্কায় ছিলেন তিনি কাফিরদের থেকে হাত গুটিয়ে রাখতে আদিষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
{ أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ قِيلَ لَهُمْ كُفُّوا أَيْدِيَكُمْ وَأَقِيمُوا الصَّلاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ }
তুমি কি তাদেরকে দেখনি যাদেরকে বলা হয়েছিল, তোমরা তোমাদের হাত গুটিয়ে নাও এবং সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর? (সূরা আন নিসা আয়াত নং ৭৭)
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফিরদের থেকে হাত গুটিয়ে রাখতে আদিষ্ট ছিলেন। কেননা তখন মুসলিমদের নিকট কাফিরদের বিরুদ্ধে কিতাল বা সশস্ত্র সংগ্রাম করার মত সামর্থ ছিল না। যদি তারা একজন কাফিরকেও হত্যা করত তাহলে কাফিরেরা সকল মুসলিমকে হত্যা করত। মুসলিমদের মূলোৎপাটন করত। কেননা তারা মুসলিমদের থেকে শক্তিশালী ছিল। তারাই ছিল সে সময়ে প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পন্ন। বর্তমানে যে সকল বিশৃঙখলা ও বিস্ফোরণ প্রত্যক্ষ করছেন এবং শুনছেন এগুলো আল্লাহর পথে দাওয়াত অথবা জিহাদের কোন পদ্ধতি নয়।
বর্তমানের বাস্তবতা হলো এর দ্বারা মুসলিমগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচেছন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হিজরাত করলেন তার নিকট সৈন্যবাহিনী এবং আনছার বা সাহায্যকারীগণ প্রস্ত্তত ছিল তখন তিনি জিহাদের জন্য আদিষ্ট হলেন।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং ছাহাবীগণ যখন মাক্কায় ছিলেন তখন কি তারা কাফিরদের মালিকানাধীন কোন সম্পদ ধ্বংস সাধন করেছেন?
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাওয়াত ও তাবলীগের ব্যাপারেও আদিষ্ট ছিলেন। জিহাদ, কিতাল, প্রতিরোধ ইত্যাদি মাদীনা হতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ফরয হয়।
[1]. এই বিশৃঙ্খলা সমূহ ফিতনা ও বিপদ আপদের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো মূলত মূর্খতার পরিণামে সৃষ্টি হয়। ইসলাম বিশৃঙ্খলা নিয়ে আসেনি। বরং ইসলাম আল্লাহর পথের দাওয়াত, হকের বর্ণনা এবং মানুষকে সতর্ক করার আহবান নিয়ে এসেছে। ইলম-প্রজ্ঞা এবং বিবেক-বিবেচনাহীন লোকেরাই শুধু মনে করে যে, প্রত্যেক কাফিরকেই হত্যা করা ওয়াজিব। ইলমহীন এই লোকের দাওয়াত প্রদান করার মত সামর্থ না থাকায় এহেন পন্থা অবলম্বন করে থাকে। তাদের এসকল কাজকর্ম দ্বারা মূলত অপরের উদ্দেশ্যই বাস্তবায়িত করা হয়। তাদের দ্বারা কৃত এ কাজ মূলত তাদের কাজ নয় বরং তারা শত্রুদেরই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে। শায়খ আব্দুল আযীয আলি শায়খ (আল-ফাতওয়া আল মুহিম্মাহ ফি তাবছীরিল উম্মাহ)।