উত্তর : মেশার লক্ষ্য যদি হয় তাদেরকে সুন্নাহ ধারণ ও ভুল বর্জনের দিকে আহবান করা, তাহলে তা ভাল কাজ। বিশেষ করে যাদের নিকট জ্ঞান আছে, তারা যদি একাজ করেন।[1] এটা আল্লাহর পথে আহবান করার অংশ। আর যদি তাদের সাথে উঠাবসা দ্বারা উদ্দেশ্য হয় শুধু বন্ধুত্ব স্থাপন করা; আল্লাহর পথে আহ্বান করা উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে তা বৈধ নয়।
সুতরাং শারঈ কোনো উপকারের উদ্দেশ্য ছাড়া আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত বিরোধী লোকদের সাথে মেশা বৈধ নয়। শারঈ উপকার যেমন তাদেরকে বিশুদ্ধ ইসলামের দিকে আহবান করা, তাদের সামনে হক-স্পষ্ট করে দেওয়া, যাতে তারা ইসলামে প্রত্যাবর্তন করে।[2]
যেমন: আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহ আনহু মাসজিদে অবস্থানকারী বিদাতীদের নিকট গিয়ে তাদের সম্পর্কে অবগত হয়েছেন, এরপর তাদের বিদআতের বিরোধিতা করেছেন।
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা খারিজীদের নিকট গিয়েছেন, তাদের সাথে বিতর্ক করে তাদের সন্দেহ নিরসন ও দাবি খণ্ডন করেছেন। তাদের যারা ফিরে আসতে ইচ্ছুক, তাদেরকে ফিরিয়ে এনেছেন।
অতএব, এ উদ্দেশ্যে যদি তাদের সাথে মেশা হয় তাহলে ভালো। আর যদি তারা তাদের বাতিল মতবাদের উপর অনড় থাকে তাহলে আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা, বিরোধিতা করা এবং জিহাদ করা অত্যাবশ্যক।
[1]. যদি নিজের মানহাজ ঠিক রেখে তাদের সাথে চলাফেরার দ্বারা তাদেরকে আহ্বান করা এবং প্রভাবিত করা সম্ভব হয় তাহলে উত্তম। পক্ষান্তরে নিজের মানহাজ পরিবর্তন করে তাদের আহ্বান করতে গেলে তা কখনই সম্ভব হবে না, আহ্বানকারীই তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যায়।
এই দলগুলো দাওয়াতের ক্ষেত্রে সাধারণত তাদের নেতার শিক্ষা থেকে বের হয় না। যেমন ইখওয়ানুল মুসলিমীন ও তাবলিগ জামাত ফিরকা। কত একনিষ্ট উপদেশ দাতাই না তাদেরকে উপদেশ দিয়েছে এবং দিচ্ছে তাদের ব্যাপারে কত বই না লেখা হয়েছে এবং হচ্ছে। ইখওয়ানুল মুসলিমীনের প্রতিষ্ঠাতা, হাসানুল বান্না (পুস্তিকা সমগ্র) তে ২৪নং পৃষ্টায় ‘‘দাওয়াতের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান’’ শিরোনামে বলেন, বিভিন্ন দাওয়াতের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান হলো আমরা সকল দাওয়াতকে আমাদের দাওয়াতের সাথে পরিমাপ করে দেখব। সকল দাওয়াত আমাদের দাওয়াতের সাথে মিললে আমরা তা গ্রহণ করব, আর যা মিলবে না তা থেকে আমরা মুক্ত/ সম্পর্কহীন থাকব!!।
আমি বলছি: আয় আল্লাহ, তুমি সাক্ষী থাকো। আমি ইখওয়ানুল মুসলিমীন ও তার প্রতিষ্ঠাতার কুরআন সুন্নাহ ও এ উম্মাহের সালাফে সালেহীনের মানহাজ বিরোধী আহ্বান/দাওয়াত থেকে মুক্ত বা সম্পর্কহীন। তাদের নীতি হলো তারা কারো দাওয়াতই কখনও গ্রহণ করবে না কেননা তারা অন্যকে তাদের অনুসারী, অনুগামী বানানোর জন্য দাওয়াত দিতে চায়। আল্লাহই ভালো জানেন।
[2]. যদি তাদের দাওয়াত দেয়ার/ আহবান করা ও পূর্ববতীদের কর্মপদ্ধতি স্পষ্ট দেয়ার জন্য তাদের সাথে মিশতেই হয় তাহলে তা বিশুদ্ধ আকীদা ও সালাফে সালেহীনের মানহাজ সম্পর্কে ইলম দান আলিম ও ত্বলিবে ইলম/ইলম শিক্ষার্থীদের জন্যই শুধু বৈধ, অন্যদের জন্য নয়।