এ বিষয়ে ফুকাহাদের মতামত নিম্নে তুলে ধরা হলো:
১. দাড়ির কোন অংশই কাটা জায়েয নেই । রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, '...তোমরা দাড়ি লম্বা কর', (বুখারী: ৫৮৯২)। এ নির্দেশের আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, দাড়ি কাটছাট করার কোন সুযোগ নেই।
২. হানাফী ফকীহগণের মতে, দাড়ির পরিমাণ এক মুষ্ঠি । আর এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত কেটে ফেলা জায়েয । (বাহরুর রায়েক) নিমে দুজন সাহাবীর আমল তুলে ধরা হলো:
ক. আবু যুর'আ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আবু হোরায়রা (রা) তাঁর দাড়ি ধরে এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন।”
খ. তাছাড়া মারওয়ান ইবনে সালেম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি দেখেছি ইবনে উমর (রা) তাঁর দাড়ি ধরে এক মুষ্ঠির বর্ধিতাংশ কেটে ফেলতেন।” উল্লেখ্য যে, আবু হোরায়রা (রা)-এর আমল সংক্রান্ত হাদীসটি দুর্বল। তাই এটা দলীলযোগ্য নয়। আর দ্বিতীয় হাদীস ইবনে ওমর (রা)-এর আমল হিসেবে যা বর্ণিত হয়েছে এটা বিশুদ্ধ বটে; কিন্তু এটা ছিল তার শুধুমাত্র হজ্জ পালনকালীন আমল । তাই এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলা জায়েযের পক্ষে এ দুটো হাদীস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয় না।
৩. ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ (র)সহ জমহুর আলেমগণের মতে, দাড়ির কোন অংশই না কাটা উত্তম।
৪. ইমাম ইবনে তাইমিয়্যার মতে, দাড়ির কোন অংশ না কাটা উত্তম বটে। তবে এক মুষ্ঠির বর্ধিতাংশ কেটে ফেললে মাকরূহ হবে না। (শরহুল উমদা)
৫. ইমাম কুরতুবী (র) বলেন, দাড়ি মুণ্ডন, খাটো করা বা উঠিয়ে ফেলা কোনটাই জায়েয নেই ।
৬. আবু বকর আল জাযায়েরী বলেন, দাড়ি এমনভাবে ছেড়ে দেবে, যাতে মুখমণ্ডল ভরে যায়।
৭. গালের দু'পাশে কেচি দিয়ে ছাঁটা বা ব্লেড দিয়ে কিছু অংশ কামানো- এগুলোকেও ফকীহগণ সুন্নাতের খেলাফ বলেছেন।
৮. কেউ কেউ তার দাড়ি চতুর্দিকে মুণ্ডন করে শুধু থুতনির মাথায় সামান্য পরিমাণ রাখে, যা দেখলে দাড়ির মতো মনে হলেও এর বৈধতার পক্ষে কোন দলীল নেই । সার্বিক বিশ্লেষণে এক মুষ্ঠির পর বর্ধিত অংশ কাটার কথা থাকলেও তা না কাটাই উত্তম।