সুতরাং এখানে হাদীছটা ছহীহ এবং উহার অর্থ ও তাৎপর্যও বোধগম্য; কিন্তু তা রহিত। আর উক্ত আলেম যেহেতু হাদীছটা রহিত হওয়ার বিষয়ে জানেন না, সেহেতু সেটা তার জন্য ওযর হিসাবে গণ্য হবে। কেননা [শরঈ বিধানের ক্ষেত্রে] আসল হল, রহিত না হওয়া, যতক্ষণ না রহিতকারী নতুন বিধান সম্পর্কে জানা যায়।
এই কারণে মুছল্লী রুকূতে যেয়ে কিভাবে তার হস্তদ্বয় রাখবে, সে বিষয়ে ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু ভিন্নমত পোষণ করেছেন। [ঘটনা হচ্ছে], ইসলামের প্রাথমিক যুগে [রুকূতে] মুছল্লীর জন্য নিয়ম ছিল, দুই হাত একত্রে করে দুই হাঁটুর মাঝখানে রাখা। কিন্তু পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে নতুন বিধান চালু হয়। নতুন বিধান হচ্ছে, দুই হাত দুই হাঁটুর উপরে রাখা। ছহীহ বুখারীসহ অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থে রহিত হওয়ার বিষয়টা প্রমাণিত হয়েছে।[1] কিন্তু ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু রহিত হওয়ার বিষয়টা জানতেন না। ফলে, তিনি দুই হাত একত্রে করে দুই হাঁটুর মাঝখানেই রাখতেন। [একদিন] তাঁর পাশে আলক্বামা ও আল–আসওয়াদ রাযিয়াল্লাহু আনহুমা নামায পড়তে দাঁড়ালেন এবং তাঁরা তাঁদের দুই হাত দুই হাঁটুর উপর রাখলেন। কিন্তু ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু তাঁদেরকে অনুরূপ করতে নিষেধ করলেন এবং দুই হাতকে একত্র করতঃ দুই হাঁটুর মাঝখানে রাখার আদেশ করলেন।[2] কিন্তু কেন?
কারণ তিনি রহিত হওয়ার বিষয়টা জানতে পারেন নি। আর মানুষের উপর তার সাধ্যের বাইরে কোন কিছু চাপানো হয়নি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না। সে তাই পায়, যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায়, যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ। হে আমাদের প্রভু! আমাদের দ্বারা এমন বোঝা বহন করাইও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর’।[3]
>[2]. মুসলিম, ‘মসজিদসমূহ’ অধ্যায়, হা/৫৩৪।
[3] . সূরা আল-বাক্বারাহ ২৮৬।