বিশ্বের সকল মুশরিক সম্প্রদায়ের শির্কের মূল ভিত্তি আল্লাহর দয়া বা ক্ষমা লাভ করতে মধ্যস্থ গ্রহণ প্রয়োজন বলে বিশ্বাস করা। তারা বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ তাঁর প্রিয়তম কিছু বান্দাকে বিশেষ ক্ষমতা বা মধ্যস্থতার ক্ষমতা দিয়েছেন। এদের মাধ্যম ছাড়া আল্লাহর রহমত পাওয়া যায় না। যেমন রাজার নিকট যেতে প্রজাদের রাজার প্রিয়ভাজন খাদিমদের মধ্যস্থতার প্রয়োজন হয়। আর এ বিশ্বাসের ভিত্তিতেই তারা দেবতা, মুর্তি, সেন্ট ইত্যাদির পূজা করেন বা তাদের কাছে ধর্ণা দেন।
আসমানী গ্রন্থগুলির শিক্ষা: আল্লাহর দীন, ইবাদত ও কল্যাণ লাভের পদ্ধতি জানতে নবী-রাসূল ও আলিমগণের সহায়তা লাগে। তবে তাঁকে ডাকতে, প্রার্থনা করতে, তাঁর করুণা, সান্নিধ্য বা মুক্তি লাভ করতে কোনো মধ্যস্থতা লাগে না। কারণ তিনি মহারাজার মত প্রজা থেকে দূরে নন, প্রজা বিষয়ে অজ্ঞ নন এবং প্রজার প্রতি কঠোর নন। বরং তিনি মমতাময়, সর্বজ্ঞ এবং বান্দার সবচেয়ে নিকটবর্তী। এ বিষয়ে মাসীহ বলেন: “তোমাদের পিতার কাছে চাইবার আগেই তিনি জানেন তোমাদের কি দরকার” (মথি ৬/৮) “চাও, তোমাদের দেওয়া হবে, খোঁজ কর, পাবে, দরজায় আঘাত দাও, তোমাদের জন্য খোলা হবে।” (মথি ৭/৭)
কিতাবুল মোকাদ্দসের নবীদের গ্রন্থগুলিতে এবং প্রচলিত ইঞ্জিলের মধ্যে বিদ্যমান ঈসা মাসীহের বাণীতে কোথাও এ মধ্যস্থতার আকীদার বিন্দুমাত্র স্থান নেই। মধ্যস্থ (mediator) শব্দটি আপনি সাধু পলের পত্র ছাড়া কিতাবুল মোকাদ্দসের কোথাও পাবেন না। সাধু পল গ্রীক-রোমান পৌত্তলিকদের “মধ্যস্থ” বিশ্বাসকে ভিত্তি করে ঈসা মাসীহকে মধ্যস্থ বলে প্রচার করেন। তিনি বলেন: “কারণ একমাত্র ঈশ্বর আছেন; ঈশ্বরের ও মনুষ্যদের মধ্যে একমাত্র মধ্যস্থও আছেন; তিনি মনুষ্য খৃস্ট যীশু।” (১-তিমথীয় ২/৫-৬) এভাবে তিনি সর্বত্র মধ্যস্থ (mediator)-এর প্রয়োজনীয়তা এবং যীশুই মধ্যস্থ বলে প্রচার করতে থাকেন। দেখুন: গালাতীয় ৩/১৯, ২০; ইব্রীয় ৮/৬, ৯/১৫, ১২/২৪)