বস্তুবাদী শক্তি আর ক্ষমতার মালিক হয়ে ইউরোপ যখন তার মাটিতে অসংখ্য শিল্প-কারখানা গড়ে তোলে, তখন এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের বাজার ও কাঁচামালের সন্ধানে তারা গোটা পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে। আর সেসব ভূখণ্ড যেহেতু অল্প পরিশ্রমে কিংবা সম্পূর্ণ মুফতে নিজস্ব স্বার্থ সিদ্ধিতে সর্বদা তৎপর ছিল, যার ফলে সেটা অর্জনের জন্য তারা তাদের সামরিক শক্তি ব্যয় করা শুরু করে। অপরদিকে কপাল খারাপ ছিল ইসলামী দুনিয়ার। এটা তখন দারিদ্র্য, পশ্চাৎপদতা, রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে দুর্বলতার সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছে গিয়েছিল। পরিণতিতে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক হামলার সামনে এটা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। ফলে অস্ত্রের লড়াইয়ে ইউরোপের সামনে আত্মসমর্পণ করে বসলো ইসলামী দুনিয়া। সামরিক পরাজয়ের ধারাবাহিকতা এক সময় আকীদা ও বিশ্বাসের পরাজয় পর্যন্ত গিয়ে ঠেকলো। ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক নাস্তিকদের প্রচণ্ড ঝড়ের সামনে ইসলামী দুনিয়ার আকীদার ভীত নড়বড়ে হয়ে ধ্বসে পড়ার উপক্রম হলো। এক পর্যায়ে ইসলামী উম্মাহ নিজের ইতিহাস-ঐতিহ্য পেছনে ছুঁড়ে ফেলে ইউরোপীয় উপনিবেশের অনুসরণ করতে শুরু করলো। ধীরে ধীরে তাদের ভেতরে অনুপ্রবেশ ঘটলো নাস্তিক্যবাদী এই বিশ্বাসের যে, ধর্মকে পরিত্যাগ করেই ইউরোপ উন্নতির সানুদেশে পৌঁছে গেছে। গোটা বিশ্বব্যাপী নাস্তিক্যবাদের বিস্তারের ক্ষেত্রে ইসলামী দুনিয়ার এই স্খলনও ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল।