উত্তর: বল, (ক) আল্লাহর নামসমূহের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য হাসিল করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আল্লাহর জন্যে রয়েছে অতি সুন্দর নামসমূহ। অতএব তোমরা তাঁকে তাঁর নাম দ্বারাই আহ্বান কর”। আর তাঁর সিফাতসমূহের মাধ্যমে। যেমন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীতে এসেছে, يا حي يا قيوم برحمتك استغيث “হে চিরঞ্জীব ও চির প্রতিষ্ঠিত-সবকিছুর ধারক! তোমার রহমতের উসিলায় তোমার কাছে ফরিয়াদ করছি। এখানে রহমত সিফাত দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করা হয়েছে।
(খ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত মোতাবেক আল্লাহর জন্য সম্পাদিত খালেস সৎ আমল দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করা। যেমন কেউ বলে, হে আল্লাহ! তোমার জন্যে আমার ইখলাস ও তোমার নবীর সুন্নাতের অনুসরণ করার উসিলায় আমাকে আরোগ্য ও রিজিক দান করো। অনুরূপ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়নের উসীলায় তাঁর নৈকট্য হাসিল করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
رَّبَّنَآ إِنَّنَا سَمِعۡنَا مُنَادِيٗا يُنَادِي لِلۡإِيمَٰنِ أَنۡ ءَامِنُواْ بِرَبِّكُمۡ فََٔامَنَّاۚ رَبَّنَا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرۡ عَنَّا سَئَِّاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ ٱلۡأَبۡرَارِ [ال عمران: ١٩٣]
“হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা এক আহ্বায়ককে ঈমানের দিকে আহবান করতে শুনেছি যে, তোমরা তোমাদের রবের প্রতি ঈমান আনো। তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! আমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করো এবং মোচন করো আমাদের গুনাহসমূহ আর নেককারদের সাথে আমাদের মৃত্যু দাও”। [সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৯৩] এভাবে উসীলা পেশ করার পর তারা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছে যে,
رَبَّنَا وَءَاتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلَىٰ رُسُلِكَ وَلَا تُخۡزِنَا يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۖ إِنَّكَ لَا تُخۡلِفُ ٱلۡمِيعَادَ [ال عمران: ١٩٤]
“হে আমাদের রব! তোমার রাসূলদের জবানে তুমি আমাদেরকে যা দেয়ার ওয়াদা করেছো, তা আমাদেরকে দান করো। আর কিয়ামতের দিন তুমি আমাদেরকে অপমান করো না। নিশ্চয় তুমি ভঙ্গ করো না অঙ্গিকার”। [সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৯৪] পাথরের কারণে গুহায় আটকা পড়া লোকেরা তাদের সৎ আমল দ্বারা আল্লাহর শরণাপন্ন হয়েছিল, আল্লাহ যেন তাদেরকে মুসীবত থেকে উদ্ধার করেন। যেমন সহীহ বুখারী ও মুসলিমে ইবনে উমারের হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন তিন লোকের ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যারা গর্তে থাকাবস্থায় একটি পাথর গুহার মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে তারা নিজেদের নেক আমল দ্বারা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেন যাতে বিপদে তিনি তাদের উদ্ধার করেন। ফলে পাথর সরে যায়।
(গ) উপস্থিত সক্ষম নেককার বান্দার দু‘আর উসীলা দেয়া। যেমন, কোনো নেককার লোকের নিকট আবদার করল, তিনি যেন তার জন্যে আল্লাহর নিকট দু‘আ করেন। যেমন সাহাবীগণ আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি যেন বৃষ্টির জন্যে আল্লাহর নিকট দু‘আ করেন। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়াইস কারনীকে বলেছিলেন, তিনি যেন তার জন্যে দু‘আ করেন। ইয়াকুব আলাইহিস সালামের সন্তানেরা তাঁর নিকট আবেদন করেছিল, তিনি যেন আল্লাহর নিকট তাদের জন্য ক্ষমা চান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: قَالُواْ يَٰٓأَبَانَا ٱسۡتَغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَآ إِنَّا كُنَّا خَٰطِِٔينَ [يوسف: ٩٦] “তারা বলল, হে আমাদের পিতা! আমাদের পাপ মোচনের জন্যে ক্ষমা চান। নিশ্চয় আমরা ছিলাম অপরাধী”। [সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৯৭]