উত্তর: বল, এটা এমন বড় শির্ক, যা আমলসমূহ বিনষ্টকারী, দীন থেকে বহিস্কারকারী, যে তাতে পতিত হলো অথচ মৃত্যুর পূর্বে তা থেকে তাওবা করল না, তাকে চিরস্থায়ী ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিল। দলীল, আল্লাহ তা‘আলার বাণী, أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ “অথবা কে আছে যিনি নিরুপায়ের আহ্বানে সাড়া দেন এবং বিপদ দূরীভূত করেন?”। [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬২] অর্থাৎ বিপদে পতিত ব্যক্তির ডাকে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ সাড়া দেয় না এবং তিনি ব্যতীত কেউ তার সমস্যা দূরীভূত করে না। যে গায়রুল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করে আল্লাহ তাকে প্রশ্নবোধক শব্দ ব্যবহার করে শাসিয়েছেন। এ ছাড়াও কারণ, আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করা ও সাহায্য চাওয়া ইবাদত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِذۡ تَسۡتَغِيثُونَ رَبَّكُمۡ [الانفال: ٩] “তোমরা যখন তোমাদের রবের নিকট সাহায্য চাচ্ছিলে”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৯]
সহীহ বুখারীতে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমি যেন তোমাদের কাউকে এ অবস্থায় আসতে না দেখি, সে স্বীয় কাঁধের ওপর একটি চিৎকার রত উট বহন করছে, আর সে আমাকে চিৎকার দিয়ে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল, আমাকে বাঁচান! আর আমি বলব, আজ তোমার জন্যে আমার করার কিছুই নেই। আমি তো তোমাকে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি তোমাদের কাউকে যেন কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় দেখতে না পাই, সে নিজের কাঁধের ওপর হ্রেষা রত ঘোড়া বহন করছে, আর আমাকে চিৎকার দিয়ে বলছে, হে আল্লাহর রাসূল আমাকে বাঁচান! আর আমি বলব, আজ আমি তোমার জন্যে কিছুই করতে পারব না। আমি তো তোমাকে পৌঁছে দিয়েছি”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) আমরা জানি, জীবিত উপস্থিত দৃশ্যমান কোনো লোকের ক্ষমতাধীন বিষয়ে তার নিকট ফরিয়াদ করা আমাদের জন্য বৈধ। জীবিত মাখলুকের নিকট ফরিয়াদ করার অর্থ হলো, মানুষ যে বিষয়ে সক্ষম সে ক্ষেত্রে তার কাছে সাহায্য চাওয়া মাত্র। যেমন মুসার সাথী মুসা আলাইহিস সালামের নিকট তাদের উভয়ের শত্রুর বিপক্ষে সাহায্য চেয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَٱسۡتَغَٰثَهُ ٱلَّذِي مِن شِيعَتِهِۦ عَلَى ٱلَّذِي مِنۡ عَدُوِّهِ [القصص: ١٥] “তার নিজের দলের লোকটি তার শত্রুদলের লোকটির বিরুদ্ধে তার কাছে সাহায্য চাইল”। [সূরা আল-কাসাস, আয়াত: ১৫] কিন্তু অনুপস্থিত জিন, মানুষ ও কবরবাসীদের নিকট ফরিয়াদ করা বাতিল, হারাম ও শির্ক হওয়ার ব্যাপারে সব ইমাম একমত হয়েছেন।