উত্তর: বল, তাদের সবাইকে ভালোবাসা, সম্মান ও শ্রদ্ধা করা এবং তাদের সবার ক্ষেত্রে রাদিয়াল্লাহু আনহুম বলা ওয়াজিব। কারণ আল্লাহ তাদের সবার ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাদের কাউকে এর থেকে বাদ রাখেননি। যেমন তিনি বলেন,
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
“আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা তাদেরকে অনুসরণ করেছে সুন্দরভাবে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাতসমূহ, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। এটাই মহা সাফল্য”। [সূরা তাওবাহ, আয়াত: ১০০] আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
لَّقَدۡ رَضِيَ ٱللَّهُ عَنِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذۡ يُبَايِعُونَكَ تَحۡتَ ٱلشَّجَرَةِ [الفتح: ١٨]
“আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা তোমার কাছে গাছের নিচে বায়‘আত করতে ছিল”। [সূরা ফাতহ,আয়াত: ১৮] আল্লাহ তাদের সম্পর্কে বলেন:
وَكُلّٗا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ [الحديد: ١٠]
“আর প্রত্যেকের জন্যই আল্লাহ নেকির ওয়াদা করেছেন”। [সূরা আল-হাদীদ আয়াত: ১০] অনুরূপ মু’মিনদের মায়েদেরকে ভালোবাসা ও সম্মান করা ওয়াজিব এবং তাদের কাউকে গাল-মন্দ করা হারাম। কারণ তা কবিরা গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَأَزۡوَٰجُهُۥٓ أُمَّهَٰتُهُمۡۗ [الاحزاب : ٦]
“আর তার স্ত্রীগণ তোমাদের মা”। [সূরা আহযাব, আয়াত: ৬] অতএব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সকল স্ত্রী মু’মিনদের মা। কারণ আল্লাহ তা‘আলা তাদের কাউকে বাদ দেননি। আর আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে এসেছে, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তোমরা আমার সাহাবীদের গাল-মন্দ করো না। তোমাদের কেউ যদি উহুদের সমান স্বর্ণ সাদকা করে, তাদের একজনের এক মুদ ও তার অর্ধেকেও পৌঁছবে না”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
তাদের এমন সম্মান ও মর্যাদার কারণে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। তারা হলেন সেসব লোক, যারা আল্লাহর দীনের সাহায্যে নিজেদের জান ও সম্পদ ব্যয় করেছেন এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াতে আত্মীয় ও অনাত্মীয় সবার সাথেই যুদ্ধ করেছেন। আল্লাহর রাস্তায় পরিবার ও স্বদেশ ত্যাগ করেছেন। কিয়ামত পর্যন্ত এ উম্মত যত কল্যাণ লাভ করবে তার কারণ হলেন সাহাবীগণ। আল্লাহ যমীন ও তার ওপরের সব কিছুর ওয়ারিস না হওয়া পর্যন্ত তাদের পরে আগত সকল মুমিনের ন্যায় তারা সাওয়াব হাসিল করবেন। তাদের পূর্বে তাদের মত যেমন কেউ ছিল না ঠিক তেমনি তাদের পরেও তাদের মত আর কেউ হবে না। আল্লাহ তাদের সবার ওপর সন্তুষ্ট হন এবং তাদের সবাইকে সন্তুষ্ট করুন। ধ্বংস তার জন্যে যে তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তাদের গাল-মন্দ করে, তাদের কুৎসা রটনা করে ও তাদের ছিদ্রান্বেষণ করে।