প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তারাবীর সালাত প্রসঙ্গে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর কথা “খুব সুন্দর বিদ‘আত” থেকে কি বুঝা যায় এবং উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর যুগে দ্বিতীয় আযান বৃদ্ধি করার হুকুম কি?

উত্তর: বল, তারাবীর সালাত সম্পর্কে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর উক্তি: “এটি খুব সুন্দর বিদ‘আত” দ্বারা বিদ‘আতের আভিধানিক অর্থ উদ্দেশ্য। শরী‘ঈ অর্থ উদ্দেশ্য নয়। কেননা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বাক্যটি কেবল সেই তারাবীর সালাত প্রসঙ্গে বলেছেন, যা তিনি চালু করেছেন। তাই তার কর্মটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কর্মের অনুসরণ মাত্র। আর যেটি রাসূলের কর্মের পুনরুজ্জীবিত করা তা বিদ‘আত নয়; বরং তা হলো নতুনত্ব করা ও মানুষকে বিস্মৃত ও পরিত্যক্ত সুন্নাত স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে যার দিকে আহ্বান ও আমল করেছেন তার প্রতি দাওয়াত দেওয়া।আর উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর কর্মটি সে সব ব্যক্তির কর্মের অন্তর্ভুক্ত যাদের অন্যান্য খলীফায়ে রাশেদীনের সাথে স্বীয় সুন্নাতের অনুসরণ করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাওয়াত দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “তোমরা আমার সুন্নাত ও হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাদের সুন্নাতের অনুসরণ কর”। হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাগণ ছাড়া অন্যান্যরা তাদের মতো নয়। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্নাতকে তাঁর সাথে ও তাঁর পরে হিদায়াত প্রাপ্ত খলীফাগণের সাথে খাস করেছেন। অন্যদের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। অথচ সাহাবীগণও বিদ‘আত ও নতুন উদ্ভাবন থেকে সতর্কতা ব্যাপারে অধিক কঠোর ছিলেন। তাদের একজন হলেন ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু যিনি দীনের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টিকারী একদল লোককে বলেছেন, যারা ভালো উদ্দেশ্যে দলবদ্ধভাবে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আল্লাহর যিকির করছিল। “তোমরা কি জ্ঞানের দিক দিয়ে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদেরকে ডিঙ্গিয়ে গেছো? নাকি অন্যায়ভাবে বিদ‘আত নিয়ে এসেছো? উত্তরে যখন তারা বলল, “আমরা ভালো নিয়তে করছি”। তিনি তাদের বললেন, “যতজন কল্যাণের ইচ্ছা করে, সে সঠিক করে না।” দারিমী স্বীয় সুনানে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। অনেক সময় তিনি তার মজলিসে স্বীয় সাথীদের বার বার বলতেন, “তোমরা অনুসরণ কর; কিন্তু বিদ‘আত করো না”। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, “প্রত্যেক বিদ‘আত গোমরাহী, যদিও মানুষ তা উত্তম মনে করে”।