আভিধানিক অর্থে উসীলা হলো এমন উপায়-উপকরণ, যা উদ্দেশ্য বিষয় অর্জনে সহায়তা করে, উদ্দেশ্য লাভের নিকটবর্তী হওয়া, আগ্রহ নিয়ে কোনো উদ্দেশ্যের দিকে ধাবিত হওয়া।
তার আরো একটি অর্থ হলো, শাসকের নিকট সম্মান, মর্যাদা ও নৈকট্য লাভ।
পারিভাষিক অর্থে উসীলা বলা হয়,
- শরী‘আত অনুমোদিত ঐ সকল পন্থা অবলম্বন, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জন করা যায়।
- এমন সব ইবাদত-বন্দেগী, যেগুলো শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করা হয়। অনুরূপভাবে যেসব আমল-ইবাদতকে আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যবানীতে প্রবর্তন করেছেন, মহান আল্লাহর কাছে উঁচু মর্যাদা অর্জন করার জন্য বা কোনো প্রার্থীত বস্তু লাভ ও কোনো অনিষ্ট থেকে রক্ষার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বা দুনিয়া-আখিরাতের কোনো আশা পূরণের জন্য।
তবে মনে রাখতে হবে, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন শরী‘আত অনুমোদিত মাধ্যম ছাড়া সম্ভব নয়।
উসীলার ভিত্তি তিনটি বিষয়:
১. যার নৈকট্য লাভের জন্য উসীলা গ্রহণ করা হয়, আর তিনি হলেন মহা-মহিম, অপার করুণার আধার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা।
২. নৈকট্যপ্রার্থী। সে হলো অক্ষম, দুর্বল ও প্রয়োজন পূরণে মুখাপেক্ষী বান্দা।
৩. নৈকট্য লাভের উপায়। তা হলো ঐ সব নেক আমল যা বান্দাকে তার মা‘বুদের নৈকট্য লাভে ধন্য করে।
কোনো উসীলা উপকারী ও তার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য লাভ ও প্রয়োজন পূরণ করার জন্য উসীলা গ্রহণকারীকে অবশ্যই কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। সে শর্তগুলো হলো:
১. উসীলা গ্রহণকারী বান্দাকে অবশ্যই সৎ ও নেক মুমিন হতে হবে এবং তার আমলের উদ্দেশ্য অবশ্যই শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন হতে হবে।
২. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে বান্দাদের জন্য যেসব আমল অনুমোদন করেছেন, আমল হতে হবে তারই মধ্য থেকে।
৩. উসীলাকৃত আমলটি হতে হবে শরী‘আত অনুমোদিত এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত অনুযায়ী। তাতে কোনো কম-বেশি করা যাবে না এবং কোনো সময় ও স্থানের সঙ্গে নির্দিষ্ট করা হয়ে থাকলে সে সীমা লংঘন করে অন্য সময় ও স্থানে করা যাবে না।
উপরোক্ত বক্তব্যে এই বিষয়টি স্পষ্ট হলো যে, অমুসলিমদের আমল-ইবাদত যেমন কোনোভাবে নৈকট্য লাভের মাধ্যম বা উসীলা হতে পারে না, তেমনি বিদ‘আতপূর্ণ কর্মকাণ্ড দিয়েও আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় না।