আল্লাহর কাছে তাঁর পাশে দারুস সালামে যেতে এগিয়ে এসো, যেখানে যেতে অতবেশি কষ্ট-ক্লেশ, দুঃখ-বেদনা, পরিশ্রম করতে হবে না; বরং এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজ পথ। সেখানে যাওয়ার উপায় হলো, তুমি দু’টি সময়ের যে কোনো একটি সময়ে অবস্থান করছো। আর এটি মূলত তোমার হায়াত। তোমার হায়াত অতীত থেকে বর্তমান জীবন এবং ভবিষ্যৎ জীবন। তোমার যে জীবন শেষ হয়ে গেছে সে জীবনের অন্যায়ের জন্য তাওবা, লজ্জিত হওয়া ও ইসতিগফার দ্বারা সংশোধন করা যাবে। আর এ কাজ করতে তোমাকে কষ্ট-ক্লেশ, দুঃখ-বেদনা সহ্য করতে হয় না এবং এটি কোনো কঠিন কাজও নয়; বরং এটি অন্তরের কাজ এবং ভবিষ্যতে এ গুনাহ থেকে বিরত থাকা। তোমার গুনাহর কাজটি থেকে বিরত থাকা তোমার জন্য গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা ও সাচ্ছন্দ্যে থাকা। এটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ নয় যে কষ্টকর হবে, এ কাজটি শুধু দৃঢ় সংকল্প, চুড়ান্ত নিয়াত যা তোমার শরীর, মন ও গোপনীয় কাজকে আরাম দিবে। অতএব, যা কিছু ছুটে গেছে তা তাওবার দ্বারা সংশোধন করা এবং ভবিষ্যৎ জীবনে সে কাজ করা থেকে বিরত থাকা, এ ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প ও নিয়াত করা। এদুটি কাজ করতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কোনো কষ্ট-ক্লেশ ও ব্যথা-বেদনা হয় না। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে তোমার হায়াত নিয়ে, যে সময় তোমার এদুটি সময়ের মধ্যকার। যদি তুমি এ সময়কে অপচয় করো, নষ্ট করো তাহলে তোমার সুখ-সৌভাগ্য, নাজাত সব কিছুই নষ্ট করে ফেলবে। আর যদি তুমি পূর্বের ও পরের সময়ের সংশোধনের সাথে তোমার চলমান জীবনকেও সংরক্ষণ করো তাহলে তুমি নাজাত পাবে, জান্নাতের আরাম-আয়েশ, ভোগ-বিলাস ও নি‘আমত লাভে সফলকাম হবে।
পূর্বের ও পরের অপরাধের সংশোধনের চেয়ে বর্তমান জীবনকে সংরক্ষণ করা অধিক কঠিন। কেননা এ জীবনকে গুনাহ থেকে রক্ষা করতে হলে যা কিছু তোমার জন্য উত্তম, উপকারী ও সৌভাগ্য অর্জনে অধিক গুরুত্বপূর্ণ সে কাজগুলো আঁকড়ে ধরা। এখানেই মানুষের মাঝে অনেক পার্থক্য। আল্লাহর কসম, এটি তোমার বিগত জীবন যাতে আগত জীবনের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করতে হয়। সে পাথেয় অনুযায়ী তুমি হয়ত জান্নাতে যাবে নতুবা জাহান্নামে। পরকালের তুলনায় এ ক্ষুদ্র সময়ে যদি তুমি তোমার রবের পথে চলো তাহলে তুমি মহাসাফল্য ও মহাবিজয় অর্জন করবে। আর যদি প্রবৃত্তি, আরাম-আয়েশ, হাসি-তামাশায় জীবন কেটে দাও যা খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে, তাহলে পরকালে তোমার পরিণতি সর্বদা যন্ত্রনাদায়ক আযাব, যা হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা, আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্যধারণ করা ও প্রবৃত্তি বিপরীত কাজ করার তুলনায় সে আযাবের দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রনা ও বেদনা অত্যধিক কঠিন, শক্ত ও সর্বদা বিদ্যমান।