আল্লাহ আমাদের এবং আপনাদের সকলকে রহমত করুন, জেনে রাখুন! কবরের কঠোরতা ও বালা-মুসিবত হলো: কবরের চাপ দেওয়া, যা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয়ই কবরের একটি চাপ রয়েছে, যদি কেউ এ থেকে রক্ষা বা নিরাপদ পেয়ে থাকে তবে সা‘দ ইবন মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রক্ষা পেয়েছেন।”[1]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “এ সেই ব্যক্তি যার জন্য ‘আরশ কেঁপে উঠেছিল, আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সত্তর হাজার ফিরিশতা তার জানাযায় অংশ গ্রহণ করেছে, তবুও তাকে একটি চাপ দেওয়ার পর তা সরিয়ে নেওয়া হয়।[2]

এ বিষয়ে হাফেজ যাহাবীর রহ. একটি সূক্ষ্ণ তা‘লীক বা সংযুক্তি রয়েছে। তিনি সিয়ারে ‘আলামীন নুবালাতে (১/২৯০-২৯১) যেভাবে নিয়ে এসেছেন এখানে আমি হুবহু তুলে ধরেছি। তিনি বলেন, এ চাপ দেওয়াটা কবরের ‘আযাব বলতে কিছু না বরং এটি একটি সাধারণ যন্ত্রনা যা মুমিন বান্দা পেয়ে থাকে, যেমন পৃথিবীতে কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ছেলে সন্তানের বিয়োগে পেয়ে থাকে, যা তার অসুখের যন্ত্রনা, আত্মা বের হয়ে যাওয়ার যন্ত্রনা, কবরে পরীক্ষা এবং প্রশ্নের যন্ত্রনা, তার জন্য তার পরিবার পরিজনদের ক্রন্দনের প্রতিক্রিয়ার যন্ত্রনা, তার কবর হতে উঠার যন্ত্রনা, হাশরের ময়দানে অবস্থান ও এর ভয়াবহতার যন্ত্রনা এবং জাহান্নামে গমণের যন্ত্রনা ইত্যাদি।

এ সকল ফিতনা সৃষ্টিকারী যন্ত্রনা বা মিথ্যা সংবাদ সবগুলোই মুমিন বান্দাকে পৌঁছাবে আর এগুলো কবরের ‘আযাব নয় এবং জাহান্নামের ‘আযাবও নয়; কিন্তু পরহেজগার বান্দার সাথে আল্লাহ সব কিছুর ব্যাপারে নম্রতা অবলম্বন করবে।

আল্লাহর সাক্ষাৎ ব্যতীত মুমিন ব্যক্তির কোনো প্রশান্তি নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَأَنذِرۡهُمۡ يَوۡمَ ٱلۡحَسۡرَةِ﴾ [مريم: ٣٩]

“এবং আফসোসের দিন তাদেরকে ভীতিপ্রদর্শন করুন।” [সূরা মারিয়ম, আয়াত: ৩৯]

তিনি আরো বলেন,

﴿وَأَنذِرۡهُمۡ يَوۡمَ ٱلۡأٓزِفَةِ إِذِ ٱلۡقُلُوبُ لَدَى ٱلۡحَنَاجِرِ كَٰظِمِينَۚ﴾ [غافر: ١٨]

“আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করে দিন, যখন প্রাণ কন্ঠগত হবে।” [সূরা গাফির, আয়াত: ১৮]

সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার নিকট ক্ষমা এবং অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। এ সকল আন্দোলন সত্যেও আমরা যতটুকু জানি সা‘দ ইবন মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জান্নাতবাসী এবং শহীদদের সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছেন।

মনে হয় আপনি এ ধারণা করে আছেন যে, যারা সফলকাম হবে তাদের হয়তো ইহকাল এবং পরকালে কোনো বিভীষিকা, আতঙ্ক, দুঃখ-যাতনা এবং ভয় পৌঁছাবে না। আল্লাহর নিকট সুস্থতা কামনা করুন এবং সা‘দ-এর দলের সাথে আমাদিগকে হাশর করার জন্য প্রার্থনা করুন।হে অল্লাহ! আমরা তোমার নিকট ক্ষমা ও সুস্থতা প্রার্থনা করছি এবং তুমি আমাদেরকে মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিনি তোমার বান্দা ও রাসূল; তাঁর এবং তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহাবীদের দলে হাশর করুন।

>
[1] এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (মুসানাদ ৬/৫৫) এবং অন্যান্যরা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেছেন।

[2] সুনান নাসাঈ ৪/১০০; সিলসিলা সহীহায় হাদীসের তাখীরজ করা হয়েছে, পৃষ্ঠা নং ১৬৯৫; ৪/২৬৮ আলবানী।