المفتي (ফাতাওয়া দানকারী): মুফতি হলেন শরীয়তের কোন হুকুম সম্পর্কে সংবাদ দানকারী।

المستفتي (ফাতাওয়া প্রার্থী): শরীয়াতের কোন হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাকারী ব্যক্তিকে المستفتي (ফাতাওয়া প্রার্থী) বলে।

ফাতাওয়ার শর্তাবলী (شروط الفتوى):

ফাতাওয়া প্রদান জায়েয হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো-

(১) মুফতিকে শারঈ হুকুমটি সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জ্ঞাত থাকতে হবে। অথবা অগ্রাধিকার যোগ্য প্রবল ধারণা থাকতে হবে। অন্যথায় তার জন্য আবশ্যক হলো ফাতাওয়া প্রদান স্থগিত রাখা।

(২) প্রশ্নটি নিয়ে পরিপূর্ণভাবে চিন্তা করে দেখা, যাতে করে তিনি ঐ ব্যাপারে শারঈ হুকুম বলতে সমর্থ হন। কেননা, কোন কিছু সম্পর্কে হুকুম দেয়া বিষয়টি ভালো-ভাবে বুঝার অংশ বিশেষ।

ফাতাওয়া প্রার্থীর কথার অর্থ বুঝতে সমস্যা হলে, তাকে জিজ্ঞাসা করে নিবেন। ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে ব্যাখ্যা জেনে নিবেন অথবা বিস্তারিত জবাব দিবেন। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে, যিনি কন্যা, ভাই ও আপন চাচা রেখে মারা গেছেন। এক্ষেত্রে মুফতি জিজ্ঞেস করে নিবেন ভাই সম্পর্কে যে, ভাই বৈপিত্রিয় কি না? অথবা বিস্তারিত জবাব দিবেন। তা এভাবে যে, ভাই যদি বৈপিত্রিয় হয়, তাহলে উত্তরাধিকার সম্পদে তার কোন অংশ নেই। কন্যার নির্ধারিত অংশ (সম্পদের অর্ধাংশ) দেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পদ চাচার জন্য হবে। আর ভাই যদি বৈপিত্রিয় না হয় (বরং বৈমাত্রেয় বা সহদর হয়) তাহলে কন্যার নির্ধারিত অংশ দেওয়ার পর বাকী সম্পদ ভাই পাবে এবং চাচা কোন অংশ পাবে না।

(৩) মুফতিকে শান্ত থাকতে হবে। যাতে মাসআলাটি অনুধাবন করে শারই দলীলের সাথে সমন্বয় করতে পারেন। তাই রাগ, দুশ্চিন্তা, বিরক্তি প্রভৃতি কারণে চিন্তাগত অস্থির অবস্থায় ফাতওয়া প্রদান করবেন না। ফাতাওয়া প্রদান করা ওয়াজিব হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো-

(ক) জিজ্ঞাসিত বিষয়ের বাস্তবতা থাকা। তাই যদি জিজ্ঞাসিত বিষয়টির বাস্তবতা না থাকে, তাহলে প্রয়োজন না থাকার কারণে ফাতাওয়া প্রদান করা ওয়াজিব হবে না। তবে যদি প্রশ্নকারীর উদ্দেশ্য শিক্ষা লাভ করা হয়, তাহলে ফাতাওয়া প্রদান করা ওয়াজিব হবে। কেননা, জ্ঞান গোপন করা জায়েয নেই। বরং সর্বাবস্থায় যখনই প্রশ্ন করা হবে তখনই উত্তর প্রদান করবেন।

(খ) প্রশ্নকারীর এ রকম অবস্থা না জানা যে, তার উদ্দেশ্য হলো, একগুয়েমী করা অথবা সুযোগ সন্ধান করা অথবা আলেমদের মতামতকে পরস্পরের বিপক্ষে পেশ করা প্রভৃতি অসৎ উদ্দেশ্য। যদি প্রশ্নকারীর অবস্থা এরূপ জানা যায়, তাহলে ফাতাওয়া প্রদান করা ওয়াজিব হবে না।

(গ) ফাতাওয়া প্রদানের ফলে তুলনামূলক বেশি ক্ষতিকর জিনিস সাব্যস্ত হবে না। যদি এ ধরণের অবস্থা হয়, তাহলে ফাতাওয়া প্রদান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। যাতে অল্প ক্ষতিকর জিনিসের মাধ্যমে অধিক ক্ষতিকর জিনিস প্রতিহত হয়।