عام এর শব্দরূপ ৭ টি। যথা:
(১) মৌলিকগত ভাবে শব্দ ব্যাপক অর্থের উপর প্রমাণ করে। যেমন:
كل وجميع، وكافة، وقاطبة، وعامة؛
كل- সব, সবাই, جميع - সবাই, كافة - সকল, قاطبة - সমস্ত, عامة - ব্যাপক।
আল্লাহর বাণী:
إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ
আমি সব কিছু পরিমিত করে সৃষ্টি করেছি (সূরা আল-ক্বামার ৫৪:৪৯)।
(২) أسماء الشرط শর্তের অর্থ জ্ঞাপক বিশেষ্য। যেমন: আল্লাহর বাণী:
مَنْ عَمِلَ صَالِحاً فَلِنَفْسِه
যে কেউ ভালো কাজ করে, সে তার নিজের জন্যই করে (সূরা আল-জাছিয়া ৪৫:১৫)।
فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ
তোমরা যে দিকেই মুখ ফেরাও সে দিকেই আল্লাহর চেহারা রয়েছে (সূরা আল-বাক্বারা ২:১১৫)।
أسماء الاستفهام প্রশ্নবোধক বিশেষ্য: আল্লাহর বাণী:
فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ
কে তোমাদের নিকট পৌছে দিবে প্রবাহমান পানি? (সূরা আল-মূলক ৬৭:৩০)।
مَاذَا أَجَبْتُمُ الْمُرْسَلِينَ
তোমরা রসূলদের কি জবাব দিয়েছিলে? (সূরা আল-ক্বাছাছ ২৮:৬৫)।
فأين تذهبون
তোমরা যাচ্ছো কোথায়? (সূরা আত-তাকভীর ২৯:২৬)।
(৪) (الأسماء الموصولة) সম্বন্ধ সূচক বিশেষ্য: আল্লাহ বলেন,
وَالَّذِي جَاءَ بِالصِّدْقِ وَصَدَّقَ بِهِ أُولَئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ) [الزمر:33]
যারা সত্য এনেছে এবং সত্যকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে তারাইতো আল্লাহভীরু (সূরা আয-যুমার ৩৯:৩৩)।
তিনি আরো বলেন,
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا
যারা আমার পথে সাধনায় আত্ন নিয়োগ করে অবশ্যই আমি তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করবো (সূরা আল-আনকাবূত ২৯:৬৯)।
إِنَّ فِي ذَلِكَ لَعِبْرَةً لِمَنْ يَخْشَى
যারা ভয় করে, তাদের জন্য এতে উপদেশ রয়েছে (সূরা আন-নাযি‘আত ৭৯:২৬)।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْض
আসমান সমূহ ও জমিনের মাঝে যা কিছু রয়েছে সব কিছু আল্লাহর জন্যই (সূরা আলে ইমরান ৩:১২৯)।
(৫) النكرة في سياق النفي أو النهي أو الشرط أو الاستفهام الإنكاري (না বোধক অথবা নিষেধ সূচক অথবা শর্ত কিংবা অস্বীকৃতিজ্ঞাপক প্রশ্নবোধক শব্দের প্রেক্ষাপটে অনির্দিষ্ট বিশেষ্য ব্যবহৃত হওয়া। আল্লাহর বাণী:
وما من اله الا الله
আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই (সূরা আলে-ইমরান ৩:৬২)। তিনি আরোও বলেন,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً
আল্লাহর ইবাদত করো, তার সাথে কাউকে শরীক করো না (সূরা আন-নিসা ৪:৩৬)।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
إِنْ تُبْدُوا شَيْئاً أَوْ تُخْفُوهُ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيماً
তোমরা কোন বিষয় প্রকাশ করো অথবা গোপন করো আল্লাহ সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত (সূরা আল-আহযাব ৩৩:৫৪)।
مَنْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ يَأْتِيكُمْ بِضِيَاءٍ أَفَلا تَسْمَعُونَ
আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন ইলাহ আছে কি যে তোমাদেরকে আলো এনে দিতে পারে? তবুও কি তোমরা শুনবে না? (সূরা ক্বাছাছ ২৮:৭১)।
(৬) المعرّف بالإضافة তথা বিশেষ্যপদ إضافة- সম্বন্ধ সূচক পদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট হওয়া হোক তা একবচন অথবা বহুবচন। যেমন: আল্লাহর বাণী:
وأذكروا نعمة الله عليكم
তোমরা ঐ নি‘আমতের কথা স্মরণ করো যা আল্লাহ তোমাদের দান করেছেন (সূরা আ‘রাফ ৭:৭৪)।
(৭) المعرف بأل الاستغراقية সমুদয় অর্থ জ্ঞাপক أل এর মাধ্যমে বিশেষ্যপদ নির্দিষ্ট হওয়া। হোক তা একবচন বা বহুবচন। যেমন: আল্লাহর বাণী:
وَخُلِقَ الْإِنْسَانُ ضَعِيفاً
মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে (সূরা নিসা ৪:২৮)।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
وَإِذَا بَلَغَ الْأَطْفَالُ مِنْكُمُ الْحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُوا كَمَا اسْتَأْذَنَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِم
তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তারাও যেন তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি প্রার্থনা করে (সূরা আন-নূর ২৪:৫৯)।কোন বিষয়ে বক্তা ও শ্রোতার অবগত হওয়া অনুসারে أل العهدية দ্বারা মা‘রেফা বা নির্দিষ্ট হয়। যদি তাদের জ্ঞাত বিষয়টি عام হয় তাহলে এ أل দ্বারা মা‘রেফা বা নির্দিষ্ট শব্দটি عام হবে। আর শব্দের জ্ঞাত বিষয়টি خاصًّ হলে أل দ্বারা নির্দিষ্ট বিশেষ্য পদটিও خاصًّ হবে।[1]
যেমন: ১. ذكري -যেখানে উদ্দেশ্যপুর্ণ বিষয়টি পূর্বে উল্লেখ করা থাকে। যেমন: فعصى فرعون الرسول -আয়াতে الرسول দ্বারা উদ্দেশ্য মুসা আ: যার উলেখ পূর্বে করা হয়েছে।
২.حضوري -উদ্দেশ্যপূর্ণ বিষয়টি উপস্থিত থাকে। যেমন বলা: أكرم الرجل
৩. ذهني -উদ্দেশ্যপূর্ণ জিনিস বক্তা ও শ্রোতার মস্তিস্কে থাকে। যেমন: তুমি বলবে, قال الامام এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইমাম আহমাদ।