তিন শ্রেণীর মানুষের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে দা‘ওয়াতদাতা (দাঈ) গণকে আল্লাহ পরীক্ষা করেন। প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষেরই তাদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিছু অনুসারী, বাণী, লেনদেন ও দা‘ওয়াত রয়েছে।
প্রথম: যারা সত্য উপলব্ধি করা সত্ত্বেও হিংসা ও সীমালঙ্ঘন বশতঃ তার বিরোধিতা করে। যেমন- ইয়াহূদী। অথবা যারা সত্য জেনেও পথভ্রষ্ট হয়। যেমন-খ্রিস্টান। আল্লাহ বলেন:
(وَدَّ كَثِيرٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَوْ يَرُدُّونَكُمْ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِكُمْ كُفَّارًا حَسَدًا مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِهِمْ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ فَاعْفُوا وَاصْفَحُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ) [البقرة: 109]
‘আহলে কিতাবের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর কাফের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারত! সত্য স্পষ্ট হওয়ার পর তাদের পক্ষ থেকে হিংসাবশতঃ (তারা এরূপ করে থাকে)। সুতরাং তোমরা ক্ষমা কর এবং এড়িয়ে চল, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর নির্দেশ দেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১০৯)।
দ্বিতীয়: নেতৃস্থানীয় ও সম্পদশালী ব্যক্তিবর্গ, যারা দুনিয়াদার ও প্রবৃত্তির অনুসারী। যখন তারা বুঝতে পারে যে, দ্বীন তাদেরকে পরিচালিত করবে এবং তাদের পছন্দনীয় বিষয়ে বাধাগ্রস্ত করবে, তখন তারা দ্বীনের বিরোধিতায় লিপ্ত হয়।
যেমন- আল্লাহ বলেন:
(فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ (50)) [القصص: 50]
‘অতঃপর তারা যদি তোমার আহবানে সাড়া না দেয়, তাহলে জেনে রাখ, তারা তো নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে। আর আল্লাহর দিকনির্দেশনা ছাড়া যে নিজের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হেদায়াত করেন না’ (সূরা আল-ক্বাছাছ: ৫০)।
তৃতীয়: যারা বাতিলের উপর বেড়ে উঠে। এ শ্রেণীর মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের যে অবস্থায় পায়, তাকেই হক্ব মনে করে; অথচ তারা বাতিলের উপর। বেশীরভাগ মানুষই এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন:
(إِنَّهُمْ أَلْفَوْا آبَاءَهُمْ ضَالِّينَ (69) فَهُمْ عَلَىآثَارِهِمْ يُهْرَعُونَ (70)) ..[الصافات: 69 - 70]
‘নিশ্চয় এরা নিজেদের পিতৃপুরুষদেরকে পথভ্রষ্ট পেয়েছিল; (৬৯) ফলে তারাও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে দ্রুত ছুটেছে’ (সূরা আছ-ছফফাত: ৬৯-৭০)।
আর তারা অন্ধ অনুসারীও:
(وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ (170)) .. [البقرة: 170]
‘আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা অনুসরণ কর, যা আল্লাহ নাযিল করেছেন, তার; তারা বলে, বরং আমরা অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি। যদি তাদের পিতৃ-পুরুষরা কিছু না বুঝে এবং হেদায়াতপ্রাপ্ত না হয়, তাহলেও কি?’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৭০)।