দা‘ওয়াতী কাজে অংশগ্রহণকারীরা চার ধরনেরঃ
প্রথম: দাঈদের চারিত্রিক সৌন্দর্যে প্রভাবিত হয়ে কতিপয় মানুষ দা‘ওয়াতী কাজে অংশ নেয়। কিন্তু কোন দাঈর সাথে তার কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে সে দা‘ওয়াতী কার্যক্রম ছেড়ে দেয় এবং দাঈদের সাথে শত্রুতা করে। এই ধরনের দাঈর ত্রুটিপূর্ণ উদ্দেশ্যের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাকে অন্য পথে পরিচালিত করেন।
দ্বিতীয়: কিছু দাঈ এমন আছে, যারা দা‘ওয়াতের মধ্যে তাদের সমস্যার সমাধান এবং চাহিদা পূরণের পথ খুঁজে পায়। যখনই তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটে এবং দুনিয়াবী প্রভাব-প্রতিপত্তি ও ধন-সম্পদ বেড়ে যায়, তখনই দা‘ওয়াতী কার্যক্রম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ ব্যক্তিকেও আল্লাহ তা‘আলা অন্য পথে ফিরিয়ে দেন। কেননা, সে ত্রুটিপূর্ণ উদ্দেশ্য নিয়ে দা‘ওয়াতী কাজে প্রবেশ করেছে।
তৃতীয়: কিছু দাঈ এমন আছে, যারা পূণ্য ও প্রতিদানের আশায় দা‘ওয়াতী কাজ করে। তারা শুধু নেকী হাছিল করতে চায়। তাদের উদ্দেশ্য তাদের নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই প্রকার দাঈ যখন দা‘ওয়াতী কাজ ব্যতীত অন্য কাজে অপেক্ষাকৃত সহজে নেকী পায়, তখন দা‘ওয়াতী কাজ ছেড়ে দেয়।
চতুর্থ: যারা দা‘ওয়াতী কাজ করে এ কারণে যে, আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মুসলিমের উপর দা‘ওয়াত দেয়া ফরয করেছেন। তারা ইবাদত করে, কারণ তা আল্লাহর নির্দেশ এবং দা‘ওয়াতী কাজ করে, কারণ তাও আল্লাহর নির্দেশ। এই প্রকার দাঈর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ। তাদের বিশুদ্ধ নিয়্যত ও বুঝের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সাহায্য করেন এবং দা‘ওয়াতী কাজ ও আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য সুযোগ করে দেন। এ শ্রেণীর দাঈগণ সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। তার নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসাবে মুসলিম জাতির জন্য কাজ করে। মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থন করি, তিনি যেন আমাদের সকলকে এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করেন, যারা নবীগণের উত্তরাধিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ (33)) [فصلت: 33]
‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যিনি আল্লাহর দিকে দা‘ওয়াত দেন, সৎকর্ম করেন এবং বলেন যে, অবশ্যই ‘আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’ (সূরা হা-মীম সাজদা: ৩৩)।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا (21)) [الأحزاب: 21]
‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য, যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহর অনেক যিকর করে’ (সূরা আল-আহযাব: ২১)।