খাদ্য-পানীয়ের চেয়ে মানুষের জীবনে দ্বীনের প্রয়োজন অনেক বেশি। বরং এতদুভয়ের মধ্যে কোন তুলনাই চলে না। কেননা, দ্বীন ব্যতীত মানুষ দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই হারায়। কিন্তু খাদ্য-পানীয়ের অভাবে কেবল দুনিয়া হারায়।
সুতরাং দ্বীন হলো জীবন, আলো, হেদায়াত, আরোগ্য, সৌভাগ্য, নিরাপত্তা, সফলতা, কল্যাণ এবং মুক্তি। দ্বীন ব্যতীত মানুষ চতুষ্পদ জন্তু, হিংস্র জানোয়ার ও শয়তানের মত হয়ে যায়। যেমন- চতুষ্পদ জন্তু খেয়াল-খুশী মত চলাফেরা করে, সে কারো পরোয়া করে না। আর হিংস্র প্রাণী অন্যদেরকে নির্দয়ভাবে শিকার করে।
মন্দ কর্ম ও ফাসাদ বা বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেয়া ছাড়া শয়তানের আর কোন কর্ম নেই। এসব অধঃপতন থেকে মানুষকে বাঁচাতে হলে আল্লাহর পথে তাদেরকে দা‘ওয়াত দেয়া আবশ্যক। এর মাধ্যমে মানুষ উচ্চস্থান লাভ করে, যা আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন ও সন্তুষ্ট হন। যেমনটি নবী-রাসূলগণ তাদের জীবনে এটা পেয়েছেন।
১। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَوَمَنْ كَانَ مَيْتًا فَأَحْيَيْنَاهُ وَجَعَلْنَا لَهُ نُورًا يَمْشِي بِهِ فِي النَّاسِ كَمَنْ مَثَلُهُ فِي الظُّلُمَاتِ لَيْسَ بِخَارِجٍ مِنْهَا كَذَلِكَ زُيِّنَ لِلْكَافِرِينَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ (122)) [الأنعام: 122]
‘যে ছিল মৃত, অতঃপর আমি তাকে জীবন দিয়েছি এবং তার জন্য নির্ধারণ করেছি আলো, যার মাধ্যমে সে মানুষের মধ্যে চলে, সে কি তার মত, যে ঘোর অন্ধকারে রয়েছে, যেখান থেকে সে বের হতে পারে না? এভাবেই কাফেরদের জন্য তাদের কৃতকর্ম সুশোভিত করা হয়’ (সূরা আল-আন‘আম: ১২২)।
২। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَالَّذِينَ كَفَرُوا يَتَمَتَّعُونَ وَيَأْكُلُونَ كَمَا تَأْكُلُ الْأَنْعَامُ وَالنَّارُ مَثْوًى لَهُمْ ) [محمد: 12]
‘কিন্তু যারা কুফরী করে, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং তারা খায় যেমন চতুস্পদ জন্তুরা খায়। আর জাহান্নামই তাদের বাসস্থান’ (সূরা মুহাম্মাদ: ১২)।
৩। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى (123) وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّلَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى (124) قَالَ رَبِّ لِمَحَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنْتُ بَصِيرًا (125) قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنْسَى (126) وَكَذَلِكَ نَجْزِي مَنْ أَسْرَفَ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِآيَاتِ رَبِّهِ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَشَدُّ وَأَبْقَى (127)) [طه: 123 - 127]
‘তখন যে আমার হেদায়াতের অনুসরণ করবে, সে বিপথগামী হবে না এবং দুর্ভাগাও হবে না। আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, নিশ্চয়ই তার জন্য হবে এক সংকীর্ণ জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, হে আমার রব! কেন আপনি আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন? অথচ আমি তো ছিলাম দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন? তিনি বলবেন, এমনিভাবেই তোমার নিকট আমার নিদর্শনাবলী এসেছিল, কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হল। আর এভাবেই আমি প্রতিফল দান করি তাকে, যে বাড়াবাড়ি করে এবং তার রবের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে না। আর আখেরাতের আযাব তো অবশ্যই কঠোরতর ও অধিকতর স্থায়ী’ (সূরা ত্বহা: ১২৩-১২৭)।
৪। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا إِنَّمَا يَدْعُو حِزْبَهُ لِيَكُونُوا مِنْ أَصْحَابِ السَّعِيرِ ) [فاطر: 6]
‘নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু। অতএব, তোমরা তাকে শত্রু হিসাবে গণ্য কর। সে তার দলকে কেবল এজন্যই ডাকে যাতে তারা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসী হয়’(সূরা ফাতির: ৬)।