৪৩. ইস্তিগফার ও তাওবাহ্ সম্বলিত নির্দিষ্ট দু‘আ পাঠ
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া অন্যতম কাবীরা গুনাহ। মহান আল্লাহ বলেছেন,
يٰۤاَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ الْأَدْبَارَ - وَمَنْ يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَه إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلٰى فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِنَ اللهِ وَمَأْوَاهُ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
‘‘হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন কাফিরদের মুখোমুখি হবে বিশাল বাহিনী নিয়ে, তখন তাদের থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না। আর যে ব্যক্তি সেদিন তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তাহলে সে আল্লাহর গযব নিয়ে ফিরে আসবে। তবে যুদ্ধের জন্য (কৌশলগত) দিক পরিবর্তন অথবা নিজ দলে আশ্রয় গ্রহণের জন্য হলে ভিন্ন কথা এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর সেটি কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।’’[1]
এ কাজটি হাদীসে বর্ণিত সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজের অন্যতম। নাবী (সা.) বলেছেন :
اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ وَالسِّحْرُ وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِىْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَكْلُ الرِّبَا وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ وَالتَّوَلِّىْ يَوْمَ الزَّحْفِ وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلَاتِ
‘‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ হতে দূরে থাক।’’ সকলে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তা কী কী? তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহর সাথে শির্ক করা, যাদু করা, ন্যায় সঙ্গত অধিকার ছাড়া আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা করা হারাম করেছেন তা হত্যা করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের মাল খাওয়া/জবরদখল করা, (যুদ্ধক্ষেত্র হতে) যুদ্ধের দিন পলায়ন করা এবং সতী সরলা মু’মিনা নারীর চরিত্রে মিথ্যা অপবাদ দেয়া।’’[2]
কিন্তু এমন একটি দু‘আ আছে, যা পড়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে ঐ পাপও মাফ হয়ে যায়। নাবী (সা.) বলেছেন :
مَنْ قَالَ أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ غُفِرَ لَه وَإِنْ كَانَ فَرَّ مِنَ الزَّحْفِ
‘‘যে ব্যক্তি এ দু‘আ পড়বে,
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি।
অর্থ : আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোন সত্য মা’বুদ (‘ইবাদাতের যোগ্য) নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। এবং আমি তাঁর কাছে তাওবাহ্ করছি।
সে ব্যক্তির পাপরাশি মার্জনা করা হবে; যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে (যাওয়ার পাপ করে) থাকে।’’[3]
অবশ্য এটিও এক প্রকার তাওবাহ্ ও ইস্তিগফার। আর যা শর্তানুযায়ী করলে তার ফলে কাবীরা গুনাহও ক্ষমা করা হতে পারে।
[2]. সহীহুল বুখারী : ২৭৬৬, ৬৮৫৭; সহীহ মুসলিম : ২৭২।
[3]. সুনান আবূ দাঊদ : ১৫১৯; জামি‘ আত্ তিরমিযী : ৩৫৭৭, হাদীসটি সহীহ।