জানা সত্ত্বেও কুফরীর দিকেই দা‘ওয়াত দেয়া।

ব্যাখ্যা: এটি ভ্রষ্ট দা‘ঈর আরেকটি শ্রেণীবিভাগ। যারা বাড়াবাড়ি ও বিরোধিতার উদ্দেশ্যে জেনে-বুঝে মানুষকে হক্ব থেকে বিমুখ করার দা‘ওয়াত দেয়। আর প্রথম প্রকার দা‘ঈ হলো যারা হক্ব না জেনে মানুষকে মিথ্যার দিকে আহবান করে। এ উভয় প্রকার দা‘ঈ মানুষের জন্য বিপজ্জনক। অথচ তারা মানুষকে বলে না যে, তোমরা কুফরী কর। কেবল তাদের সাজানো পদ্ধতি তারা মানুষের কাছে প্রচার করে, যা বাহ্যিকভাবে সুন্দর মনে হলেও তা মূলতঃ কুফরী। আর ভ্রষ্ট দা‘ঈরা এরূপই হয়। ইবলিশ নূহ আলাইহিস সালাম এর সম্প্রদায়ের নিকট এসে দেখলো যে, নেকলোকদের মৃত্যুতে তারা শোকাহত। সে তখন তাদের নিকট তার দীনি পদ্ধতি উপস্থাপন করে বললো, তোমরা এ সব নেকলোদের প্রতিচ্ছবি তৈরি করো, কারণ তা দেখলে যেন তাদের ইবাদতে তোমরা উদ্যমী হও, তাদের অবস্থা, সততা এবং দীন স্মরণ করতে পার। ফলে তারাও তোমাদের ইবাদতে খুশি হবে। এভাবে সে তাদেরকে উপদেশ দেয় এবং তার দীনি পদ্ধতি তুলে ধরে। আর ছবিগুলো অবশেষে মূর্তিতে পরিণত হবে; ইবলিশের এটাই ছিল ইচ্ছা।

পরে ছবিগুলোকে মূর্তি বানানো হয়। বিদ্বান এবং এ (মূর্তি নির্মাতা) সম্প্রদায় মারা গেলে মূর্খ সম্পদায়ের আগমন ঘটে। তাদের কাছে শয়তান এসে বলে, তোমাদের পূর্বপুরুষরা ইবাদতের জন্যই এসব মূর্তি নির্মাণ করতো। এ সব মূর্তির নামেই তারা বৃষ্টি প্রার্থনা করতো। অতঃপর তারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে মূর্তিগুলোর ইবাদত করে। ঠিক এরূপই ভ্রষ্ট দা‘ঈরা মানুষকে প্রকাশ্যে খারাপ কর্মের দা‘ওয়াত দেয় না। বরং তারা মানুষকে সাজানো পদ্ধতির মাধ্যমে দা‘ওয়াত দেয়, যা তাদের নিকট উত্তম মনে হয়। ফলে অবশেষে দা‘ঈর উদ্দেশ্যে অর্জিত হয়। পথ ভ্রষ্ট দা‘ঈরা মানুষকে কবর পূজার মাধ্যমে শিরকের দিকে আহবান করে, তারা মানুষকে বলে না যে, তোমরা কবর পূজা কর। বরং তারা বলে, ঐসব ব্যক্তিরাই ওলী ও সৎ। আল্লাহর নিকট তাদের মর্যাদা রয়েছে। তোমরা তাদের নৈকট্য অর্জন করবে, যাতে তারা তোমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে তোমাদের জন্য তারা মাধ্যম ও ওসীলা স্বরূপ। নেকলোকদের ভালবাসা ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে তাদেরকে মাধ্যম ও ওসীলা হিসাবে গ্রহণ করার পদ্ধতি নিয়ে ভ্রষ্ট দা‘ঈরা মানুষের কাছে আসে। অতঃপর লোকেরা এ শয়তানী ধোঁকায় পড়ে কবর ও ওলী-আউলিয়ার ইবাদত করে, ফলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে শিরকে লিপ্ত হয়।

কুফরীর দিকে আহবানকারীরা মানুষকে বিভিন্ন পন্থায় দা‘ওয়াত দেয়। তাদের মাঝে কোন আনুগত্য প্রকাশ পায় না। আর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া তাদেরক কেউ চিনতে পারে না। এ দু’টি বিষয় থেকে স্পষ্ট হলো ভ্রষ্ট দা‘ঈ দু’প্রকার:

প্রথম: কোন ইলম-জ্ঞান ছাড়াই মানুষকে দাওয়াত দেয়।

দ্বিতীয়: জেনে-বুঝে হকের বিরূদ্ধে মানুষকে দা‘ওয়াত দেয়।

প্রথম প্রকার দা‘ঈ হচ্ছে ভ্রষ্ট (ضال), আর দ্বিতীয় প্রকার দাঈ হচ্ছে ফাসিক (فاسق)।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে