ব্যাখ্যা: আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার ব্যাপারে জাহিলদের মধ্যে বৈপরীত্য দেখা যায়। তাদের কতিপয় আল্লাহর সকল আয়াতকে মিথ্যা মনে করে এবং আল্লাহর কোন কিতাব বিশ্বাস করে না। যেমনভাবে মুশরিকরা নাবী-রসূলগণকে বিশ্বাস করে না। আর চুড়ান্ত কথা হলো আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ কোন কিতাবই তারা বিশ্বাস করে না।
আর জাহিলদের কতিপয় কিছু আয়াতকে বিশ্বাস করে এবং কতেককে অস্বীকার করে। যেমন ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান। যারা কতিপয় আয়াত বিশ্বাস করে এবং কতিপয়কে বিশ্বাস করে না, তারা মূলতঃ তাদের মতই যারা সকল আয়াতকেই অস্বীকার করে। মহান আল্লাহ বলেন,
(أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ) [البقرة: 85]
তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ব্যতীত তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? (সূরা বাক্বারাহ ২:৮৫)।
কেবল তাদের কুপ্রবৃত্তি অনুসারেই তারা বিশ্বাস করে। তাদের কু-প্রবৃত্তি বিরোধী যা মনে করে সেটাকেই তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। কিতাবের আংশিক অস্বীকার করার কারণে অবশিষ্ট আংশিক বিশ্বাস জাহিলদের কোন কাজে আসবে না। যদিও কুরআনের একটি আয়াত বা কথা হয়ে থাকে তা জাহিলদের কোন উপকারে আসবে না। জাহিলদের মধ্যে আশা‘ইরা (أشاعرة) বলে, কুরআনের শব্দ ও অর্থ উভয়ই সৃষ্ট অথবা কুরআনের অর্থ ব্যতীত শুধু শব্দাবলী সৃষ্ট। এটা কুরআনের প্রতি মিথ্যারোপ করা বুঝায়। আর জাহমিয়্যাহ (الجهمية) সম্প্রদায়ও বলে, কুরআনের শব্দ ও অর্থ উভয়ই সৃষ্ট অথবা শুধু শব্দ সৃষ্ট ও অর্থ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত, এটাও কুফরী।
শুধু শব্দ অথবা অর্থের অনুসরণ অথবা অপব্যাখ্যা করলে বিপথগামী হবে। কেননা শব্দ ও অর্থের সমন্বয়ে কুরআন আল্লাহর কালাম। কুরআনের অক্ষর ও সমুদয় অর্থ মিলেই মহান আল্লাহর বাণী হিসাবে গণ্য। অর্থ ছাড়া অক্ষর আল্লাহর কালাম নয়, তেমনই অক্ষর ছাড়া অর্থও আল্লাহর কালাম নয়।