আল্লাহ তা‘আলা ভাগ্যে কুফরী নির্ধারণ করেছেন বলে অজুহাত পেশ করা

কুফরীর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার কথার দলীল পেশ করা।

............................................

ব্যাখ্যা: অর্থাৎ ভাগ্যের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার কথার উপর এভাবে প্রমাণ পেশ করা যে, কুফরী ও অবাধ্যতায় জাহিলরা ওযরগ্রস্থ; আল্লাহ তা‘আলাই তাদের জন্য এসবের ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য কোন দলীল পেশ করেননি। বরং তাদেরকে তিনি স্বাধীনতা, শক্তিমত্তা ও ইচ্ছাশক্তি দান করেছেন। আর তাদের জন্য বর্ণনা করেছেন ভাল-মন্দ উভয় পন্থা। আর তাদেরকে তিনি দান করেছেন ক্ষমতা, এর মাধ্যমে তারা কিছু করা বা না করার সক্ষমতা রাখে। তারা যা বলে তাতে তারা বাধ্য নয়। আল্লাহ তা‘আলা এটাও বর্ণনা করেন, তিনি তার বান্দার কুফরীকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(وَلا يَرْضَى لِعِبَادِهِ الْكُفْرَ) [الزمر: 7]

আর তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফরী পছন্দ করেন না (সূরা যুমার ৩৯:৭)।

তিনি যদি কুফরীকে নির্ধারণই করতেন এবং তা চাইতেন তাহলে তার সন্তুষ্টি অর্জন আবশ্যক হত না। আল্লাহ তা‘আলা কুফরীর প্রতি শত্রুতা রেখে এর পরিণাম নির্ধারণ করেন। যাতে তিনি কতিপয় মানুষ থেকে কতিপয়কে যাচাই করতে পারেন, মিথ্যাবাদী হতে সত্যবাদী এবং কাফির হতে মুমিন বাছাই করতে পারেন। আর খাঁটি মুমিন হতে মুনাফিককে স্পষ্ট করতে পারেন। আল্লাহ তা‘আলা হিকমতের জন্য এসব অপছন্দনীয় বিষয়ের নিয়তি নির্ধারণ করেন। তিনি অনর্থক এসব পরিণাম নির্ধারণ করেননি। স্বাধীনভাবে এসব কৃত কর্মের উপর জাহিলদের জন্য তিনি মন্দ প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন।

এ কারণে পাগল, নির্বোধ, নিরুপায় ও অচেতন ব্যক্তিকে পাঁকড়াও করা হবে না। কেননা তাদের কোন স্বাধীনতা নেই এবং বিবেক-বুদ্ধিও নেই। তাদের মাধ্যমে কুফরী সংঘটিত হলে তাদেরকে পাঁকড়াও করা হবে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা যাকে বিবেক-বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তি দান করেছেন এবং কুফরী করতে বাধ্য করা হয়নি, তাকে জবাবদিহী করা হবে। কেননা স্বাধীনভাবে সে মন্দ গ্রহণে অগ্রগামী। সুতরাং ব্যভিচারী তার ইচ্ছায় ব্যভিচার করে, ছ্বলাত পরিত্যাগকারী তার ইচ্ছায় ছ্বলাত পরিত্যাগ করে অথচ তার সক্ষমতা আছে যে, সে ছ্বলাত প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

এরূপই ব্যভিচারীর জন্য বর্ণনা করা হয়েছে যে, ব্যভিচার হারাম। এর জন্য শাস্তি ও লাঞ্ছনা রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ব্যভিচারের সুনির্দিষ্ট শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। আর শিরক ও কুফরী হতে নিষেধ করার জন্য তিনি রসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। সুতরাং অবাধ্যতা, কুফরী, শিরক ও ভ্রষ্টতার মাধ্যমে জাহিলরা কিভাবে আল্লাহ তা‘আলার উপর দলীল পেশ করে? অথচ তাদের নিকট কোন দলীলই নেই। বরং তাদের বিরূদ্ধে আল্লাহ তা‘আলারই দলীল রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,

(قُلْ فَلِلَّهِ الْحُجَّةُ الْبَالِغَةُ) [الأنعام: 149]

সুতরাং যদি তিনি চান অবশ্যই তোমাদের সবাইকে হিদায়াত দেবেন (সূরা আন‘আম ৬:১৪৮,১৪৯)।

কেবল বালা-মুছীবত, বিপদাপদে তাক্বদীরকে দলীল হিসাবে পেশ করা যাবে। কেউ বিপদগ্রস্থ হলে যেন ধৈর্য না হারায়। বরং মেনে নিবে, বিপদাপদ আল্লাহরই ক্ষমতা, তিনি যা চান তাই করেন। তাই বিপদে ধৈর্য ধারণ ও ছাওয়াবের প্রত্যাশা করবে। আর অবাধ্যতার ক্ষেত্রে ভাগ্যের কৈফিয়ত পেশ করা যাবে না। বরং আল্লাহ তা‘আলার নিকট তাওবাহ করা, পাপাচারীতা ও মন্দকর্ম হতে বিরত থাকাই বান্দার উপর আবশ্যক। আর অন্যায় কাজের উপর ভাগ্যের মাধ্যমে দলীল পেশ করাই জাহিলী কর্ম।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে