আর সকলেই আল্লাহর ইচ্ছার অধীনে এবং সবাই তারই অনুগ্রহ ও এ ন্যায়বিচারের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।

ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন, (وَكُلُّهُمْ يَتَقَلَّبُونَ فِي مَشِيئَتِهِ بَيْنَ فَضْلِهِ وَعَدْلِهِ) আর সকলেই আল্লাহর ইচ্ছার অধীনে এবং সবাই তারই অনুগ্রহ ও এ ন্যায়বিচারের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।

.............................................................

ব্যাখ্যা: মানুষের অবস্থা ঠিক তেমনই, যেমন আল্লাহ তা‘আলা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,

هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ فَمِنكُمْ كَافِرٌ وَمِنكُم مُّؤْمِنٌ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

‘‘তিনি সবকিছইু করতে সক্ষম। তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে কেউ কাফের এবং কেউ মুমিন। তোমরা যা করছো আল্লাহ তা দেখছেন’’। (সূরা তাগাবুন: ২)

সুতরাং তিনি যাকে ঈমানের প্রতি হেদায়াত করেছেন, তা কেবল তার অনুগ্রহের কারণেই। এতে তার প্রশংসা করা আবশ্যক। আর যাকে তিনি গোমরাহ করেছেন, তা কেবল তার ন্যায়বিচারের কারণেই।[1] এতেও তার প্রশংসা করা আবশ্যক। এ অর্থে আরো বিস্তারিত আলোচনা সামনে আসবে, ইনশা-আল্লাহ। কেননা শাইখ একস্থানে তাকদীরের সকল মাস‘আলা একত্র করেননি। বরং কিতাবের বিভিন্ন স্থানে আলোচনা করেছেন। তাই আমরাও তারই ধারায় উহা আলোচনা করবো।

[1]. এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, মানুষ ঈমান, হেদায়াত এবং অন্যান্য যেসব নেয়ামত লাভ করে, প্রকৃতপক্ষে তারা তার হকদার নয়; বরং তা আল্লাহ তা‘আলার একান্ত অনুগ্রহ ও দয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়। মানুষ যতই তার ইবাদত বন্দেগী করুক না কেন, কোনো ক্রমেই তারা উহার হকদার হতে পারবে না। আর মানুষের উপর গোমরাহীসহ যত বিপদাপদ ও বালা-মুসীবত আপতিত হয়, তাতে তাদের উপর বিন্দু মাত্র যুলুম করা হয় না। বরং তা তাদের পাপাচারের কারণে তাদের উপর ন্যায়বিচার স্বরূপই হয়ে থাকে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কারো উপর যুলম করেন না। কুরআনে এ মর্মে অনেক দলীল রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিপদাপদ ও বালা-মুসীবতে নিপতিত ব্যক্তি যদি অমুসলিম হয়, তাহলে এ মুসীবত ঐ আযাবের নমুনা স্বরূপ, যা তার জন্য মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে অপেক্ষা করছে। সেখানে সে আরো ভয়াবহ শাস্তিতে নিপতিত হবে।

আর যদি বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি মুমিন হয়, তাহলে এ বিপদ তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে পরিগণিত হবে। অথবা তার জন্য ঈমানের পরীক্ষা হিসেবে ধরে নেয়া হবে, যা পরকালে তার মর্যাদা বৃদ্ধি ও নাজাতের উসীলা হবে।