এবং তিনি তাদের জন্য তাকদীর বা সব কিছুরই পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন।

ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন, (وَقَدَّرَ لَهُمْ أَقْدَارًا) এবং তিনি তাদের জন্য তাকদীর বা সব কিছুরই পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন।

....................................

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا

এবং তিনি প্রত্যেক জিনিস সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তার একটি তাকদীর বা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন’’। (সূরা ফুরকান: ২) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ

আমি প্রত্যেক জিনিসকে একটি পরিমাপ অনুযায়ী সৃষ্টি করেছি।[1] (সূরা কামার: ৪৯)।

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَكَانَ أَمْرُ اللَّهِ قَدَرًا مَّقْدُورًا

‘‘এটিই আল্লাহর বিধান। আর আল্লাহর বিধান চূড়ান্ত ও স্থিরকৃত’’। (সূরা আহযাব: ৩৮) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَالّذِي قَدَّرَ فَهَدَىٰ الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّىٰ

‘‘যিনি সৃষ্টি করেছেন এবং সুঠাম করেছেন। যিনি তাকদীর গড়েছেন তারপর পথ দেখিয়েছেন’’। (সূরা আলা: ২-৩)

ছহীহ মুসলিমে আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«قدر اللَّهُ مَقَادِيرَ الْخَلاَئِقِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ بِخَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ قَالَ: وَكان عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ»

আল্লাহ্ তা‘আলা আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সমস্ত মাখলুকের তাকদীর লিখে দিয়েছেন। তখন তার আরশ ছিল পানির উপরে।[2]

[1]. অর্থাৎ দুনিয়ার প্রত্যেক বস্তুরই একটা পরিমাণ আছে। সে অনুসারে প্রত্যেক বস্তু একটা নির্দিষ্ট সময় অস্তিত্ব লাভ করে, একটা বিশেষ রূপ ও আকৃতি গ্রহণ করে। একটা বিশেষ সীমা পর্যন্ত ক্রমবিকাশ লাভ করে, একটি নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত টিকে থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে তার পরিসমাপ্তি ঘটে। এ স্বভাবগত নিয়ম-নীতি অনুসারে এ দুনিয়াটারও একটা 'তাকদীর' বা পরিমিতি ও অনুপাত আছে। সে অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তা চলেছে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়েই তার পরিসমাপ্তি ঘটতে হবে। এর পরিসমাপ্তির জন্য যে সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে তার এক মুহূর্ত পূর্বে এর পরিসমাপ্তি ঘটবে না কিংবা এক মুহূর্ত পরে তা অবশিষ্টও থাকবে না। এ পৃথিবী অনাদি ও চিরস্থায়ী নয় যে, চিরদিনই তা আছে এবং চিরদিন থাকবে। কিংবা কোন শিশুর খেলনাও নয় যে, যখনই তোমরা চাইবে তখনই তিনি এটাকে ধ্বংস করে দেবেন। (আল্লাহ তা‘আলাই সর্বাধিক অবগত রয়েছেন)

[2]. ছহীহ: বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল কাদ্র, ছহীহ মুসলিম ২৬৫৩।