সকল প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য, যিনি প্রত্যাশাকারীকে প্রত্যাশার ওপরে পৌঁছান এবং প্রার্থনাকারীকে প্রার্থনার বেশি দেন। তাওবাকারীর ওপর ক্ষমা ও গ্রহণের দ্বারা অনুগ্রহকারী, সৃষ্টি করেছেন মানুষ এবং তৈরী করেছেন একটি ঘর সেখানে অবতরণের জন্য, আর দুনিয়াকে করেছেন সেখানে নাযিল হওয়ার একটি পর্যায়রূপে। যারা প্রকৃত ঘরের মর্যাদা সম্পর্কে অজ্ঞ তারা তাদের বোকামীরি কারণে এ দুনিয়াকেই তাদের মূল আবাস বানিয়ে নিয়েছে, অতঃপর তাদেরকে সেখান থেকে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হওয়ার পূর্বেই তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা যে সকল সম্পদ কিংবা সন্তান-সন্তুতি অর্জন করেছিল তা তাদের কোনো কাজে আসে নি, তাদের সবাইকেই এতে পরাজিত হতে হয়েছে; তুমি কি কাকদেরকে তাদের ভগ্নাংশের উপর কাঁদতে দেখনি? কিন্তু যাকে আল্লাহ তাওফীক দিয়েছেন সে দুনিয়াকে সঠিকভাবে চিনতে পেরেছে, ফলে তার সামনে আজ্ঞাবহ হয়ে পড়ে থাকলেও সে দুনিয়া দ্বারা প্রতারিত হয় নি, সে আল্লাহর ক্ষমা ও এমন জান্নাত লাভের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীনব্যাপী। যা শুধু তাদের জন্য তৈরী করা হয়েছে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান এনেছে।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, এমন সাক্ষ্য যে সাক্ষীদাতা সে সাক্ষ্যের দলীল-প্রমাণাদি ও মূলনীতি সম্পর্কে সম্যক অবগত। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাঁর উপর সালাত পেশ করুন, যতদিন মৃদু বাতাস তার উত্তর, দক্ষিন থেকে প্রবাহিত হবে এবং সেটা সামনে ও পিছনে বয়ে যেতে থাকবে। আরও পেশ করুন আবু বকরের উপর যিনি সফর ও অবস্থান সর্বাবস্থায় তাঁর সাথী ছিলেন, অনুরূপ ‘উমারের ওপর, যিনি ইসলামকে এমন তলোয়ার দিয়ে হেফাযত করেছিলেন যার মধ্যে কোনো প্রকার খাঁজ পড়ার ভয় ছিল না, অনুরূপভাবে ‘উসমানের উপর, যিনি তার উপর আপতিত বিপদে ধৈর্যধারণকারী ছিলেন, আর আলীর উপর, যিনি তাঁর উপর কারও হামলা হওয়ার আগেই নিজের বীরত্বে ছিলেন সম্মুখগামী। অনুরূপভাবে রাসূলের সকল পরিবার-পরিজন, সাহাবীগণ এবং যুগ যুগ ধরে তাদের সুন্দর অনুসারীদের উপর। আর আল্লাহ তাদের উপর যথাযথ সালামও প্রেরণ করুন।
প্রিয় ভাইয়েরা! আপনার রবের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে অগ্রসর হোন, যার প্রশস্ততা আসমান এবং জমিনের সমান; যাতে এমন নিয়ামত রয়েছে, যা কোনো চক্ষু কোনো দিন দেখে নি, কোনো কান শুনে নি এবং কোনো অন্তর কল্পনাও করে নি, এমন জান্নাতের প্রতি দ্রুত এগিয়ে চলুন।
* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ ۞مَّثَلُ ٱلۡجَنَّةِ ٱلَّتِي وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُۖ أُكُلُهَا دَآئِمٞ وَظِلُّهَاۚ﴾ [الرعد: ٣٥]
‘মুত্তাকীদের যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, সেটির দৃষ্টান্ত এরূপ, তার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। তার খাদ্যসামগ্রী ও তার ছায়া সার্বক্ষণিক।’ (সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ৩৫)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ مَّثَلُ ٱلۡجَنَّةِ ٱلَّتِي وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۖ فِيهَآ أَنۡهَٰرٞ مِّن مَّآءٍ غَيۡرِ ءَاسِنٖ وَأَنۡهَٰرٞ مِّن لَّبَنٖ لَّمۡ يَتَغَيَّرۡ طَعۡمُهُۥ وَأَنۡهَٰرٞ مِّنۡ خَمۡرٖ لَّذَّةٖ لِّلشَّٰرِبِينَ وَأَنۡهَٰرٞ مِّنۡ عَسَلٖ مُّصَفّٗىۖ وَلَهُمۡ فِيهَا مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ وَمَغۡفِرَةٞ مِّن رَّبِّهِمۡۖ﴾ [محمد: ١٥]
‘মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হল, তাতে রয়েছে নির্মল পানির নহরসমূহ, দুধের ঝর্নাধারা, যার স্বাদ পরিবর্তিত হয়নি, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহরসমূহ এবং আছে পরিশোধিত মধুর ঝর্ণাধারা। তথায় তাদের জন্য থাকবে সব ধরনের ফলমূল আর তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা।” (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ১৫)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿وَبَشِّرِ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ أَنَّ لَهُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُۖ كُلَّمَا رُزِقُواْ مِنۡهَا مِن ثَمَرَةٖ رِّزۡقٗا قَالُواْ هَٰذَا ٱلَّذِي رُزِقۡنَا مِن قَبۡلُۖ وَأُتُواْ بِهِۦ مُتَشَٰبِهٗاۖ وَلَهُمۡ فِيهَآ أَزۡوَٰجٞ مُّطَهَّرَةٞۖ وَهُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ٢٥ ﴾ [البقرة: ٢٥]
‘(হে রাসূল!) আপনি তাদের সুসংবাদ দিন, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে। নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত, যা তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত। যখন জান্নাতবাসীদের কোনো ফল-ফলাদি প্রদান করা হবে, কখন তারা বলবে, এ তো ওই রিযিক যা আমাদেরকে ইতোপূর্বে দেয়া হয়েছিল এবং অনুরুপ ফলও প্রদান কর হয়েছিল। আর তথায় তাদের জন্য রয়েছে পবিত্রতমা স্ত্রীগণ। আর তারা সেখানে স্থায়ী হবে।’ (সূরা আল-বাকারাহ্, আয়াত: ২৫)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ وَدَانِيَةً عَلَيۡهِمۡ ظِلَٰلُهَا وَذُلِّلَتۡ قُطُوفُهَا تَذۡلِيلٗا ١٤ وَيُطَافُ عَلَيۡهِم بَِٔانِيَةٖ مِّن فِضَّةٖ وَأَكۡوَابٖ كَانَتۡ قَوَارِيرَا۠ ١٥ قَوَارِيرَاْ مِن فِضَّةٖ قَدَّرُوهَا تَقۡدِيرٗا ١٦ وَيُسۡقَوۡنَ فِيهَا كَأۡسٗا كَانَ مِزَاجُهَا زَنجَبِيلًا ١٧ عَيۡنٗا فِيهَا تُسَمَّىٰ سَلۡسَبِيلٗا ١٨ ۞وَيَطُوفُ عَلَيۡهِمۡ وِلۡدَٰنٞ مُّخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيۡتَهُمۡ حَسِبۡتَهُمۡ لُؤۡلُؤٗا مَّنثُورٗا ١٩ وَإِذَا رَأَيۡتَ ثَمَّ رَأَيۡتَ نَعِيمٗا وَمُلۡكٗا كَبِيرًا ٢٠ ﴾ [الانسان: ١٤، ٢٠]
‘তাদের উপর সন্নিহিত থাকবে উদ্যানের ছায়া এবং তার ফলমূলের থোকাসমূহ তাদের সম্পূর্ণ আয়ত্তাধীন করা হবে। তাদের চারপাশে আবর্তিত হবে রৌপ্যপাত্র ও স্ফটিক স্বচ্ছ পানপাত্র- রূপার ন্যায় শুভ্র স্ফটিক পাত্র; যার পরিমাপ তারা নির্ধারণ করবে। সেখানে তাদেরকে পান করানো হবে পাত্রভরা আদা-মিশ্রিত সুরা, সেখানকার এক ঝর্ণা যার নাম হবে সালসাবীল। আর তাদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে চিরকিশোরেরা; তুমি তাদেরকে দেখলে বিক্ষিপ্ত মুক্তা মনে করবে। আর তুমি যখন দেখবে তুমি সেখানে দেখতে পাবে স্বাচ্ছন্দ্য ও বিরাট সাম্রাজ্য।’ (সূরা আন-ইনসান, আয়াত: ১৪-২০)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٖ ١٠ لَّا تَسۡمَعُ فِيهَا لَٰغِيَةٗ ١١ فِيهَا عَيۡنٞ جَارِيَةٞ ١٢ فِيهَا سُرُرٞ مَّرۡفُوعَةٞ ١٣ وَأَكۡوَابٞ مَّوۡضُوعَةٞ ١٤ وَنَمَارِقُ مَصۡفُوفَةٞ ١٥ وَزَرَابِيُّ مَبۡثُوثَةٌ ١٦ ﴾ [الغاشية: ١٠، ١٦]
‘তারা সুউচ্চ জান্নাতে অবস্থান কবে, আর তারা সেখানে কোনো অনর্থক কথা-বার্তা শুনতে পাবে না এবং তথায় তাদের জন্য থাকবে প্রবাহমান ঝর্ণাধারা। তথায় রয়েছে সুউচ্চ পালংক, সদা প্রস্তুত পান-পাত্র, সারিবদ্ধ বালিশ ও উন্নত মানসম্পন্ন বিছানাসমূহ।’ (সূরা আল-গাশিয়া, আয়াত: ১০-১৬)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿يُحَلَّوۡنَ فِيهَا مِنۡ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٖ وَلُؤۡلُؤٗاۖ وَلِبَاسُهُمۡ فِيهَا حَرِيرٞ ٢٣ ﴾ [الحج: ٢٣]
‘জান্নাতীদের স্বর্ণের ও মনিমুক্তার অলঙ্কার পরিধান করানো হবে এবং রেশমী কাপড়ের পোশাক পরিধান করানো হবে। (সূরা আল-হজ, আয়াত: ২৩)
* আল্লাহ আরো বলেন:
﴿عَٰلِيَهُمۡ ثِيَابُ سُندُسٍ خُضۡرٞ وَإِسۡتَبۡرَقٞۖ وَحُلُّوٓاْ أَسَاوِرَ مِن فِضَّةٖ وَسَقَىٰهُمۡ رَبُّهُمۡ شَرَابٗا طَهُورًا ٢١ ﴾ [الانسان: ٢١]
‘তাদের উপর থাকবে সবুজ ও মিহি রেশমের পোশাক এবং মোটা রেশমের পোশাক, আর তাদেরকে পরিধান করানো হবে রূপার চুড়ি এবং তাদের রব তাদেরকে পান করাবেন পবিত্র পানীয়।’ (সূরা আল-ইনসান/আদ-দাহর, আয়াত: ২১)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿مُتَّكِِٔينَ عَلَىٰ رَفۡرَفٍ خُضۡرٖ وَعَبۡقَرِيٍّ حِسَانٖ ٧٦ ﴾ [الرحمن: ٧٦]
‘তারা সবুজ বালিশে ও সুন্দর কারুকার্য খচিত গালিচার উপর হেলান দেয়া অবস্থায় থাকবে।’ (সূরা আর-রহমান, আয়াত: ৬৭)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿مُّتَّكِِٔينَ فِيهَا عَلَى ٱلۡأَرَآئِكِۖ لَا يَرَوۡنَ فِيهَا شَمۡسٗا وَلَا زَمۡهَرِيرٗا١٣﴾ [الانسان: ١٣]
‘তারা সেখানে সুউচ্চ আসনে হেলান দিয়ে আসীন থাকবে। তারা সেখানে না দেখবে অতিশয় গরম, আর না অত্যধিক শীত।’ (সূরা আল-ইনসান/আদ-দাহর, আয়াত: ১৩)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿إِنَّ ٱلۡمُتَّقِينَ فِي مَقَامٍ أَمِينٖ ٥١ فِي جَنَّٰتٖ وَعُيُونٖ ٥٢ يَلۡبَسُونَ مِن سُندُسٖ وَإِسۡتَبۡرَقٖ مُّتَقَٰبِلِينَ ٥٣ كَذَٰلِكَ وَزَوَّجۡنَٰهُم بِحُورٍ عِينٖ ٥٤ يَدۡعُونَ فِيهَا بِكُلِّ فَٰكِهَةٍ ءَامِنِينَ ٥٥ ﴾ [الدخان: ٥١، ٥٥]
‘নিশ্চয় মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে, বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাধারার মধ্যে, তারা পরিধান করবে পাতলা ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং বসবে মুখোমুখী হয়ে। এরূপই ঘটবে, আর আমি তাদেরকে বিয়ে দেব ডাগর নয়না হূরদের সাথে। সেখানে তারা প্রশান্তচিত্তে সকল প্রকারের ফলমূল আনতে বলবে।’ (সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ৫১-৫৫)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ٱدۡخُلُواْ ٱلۡجَنَّةَ أَنتُمۡ وَأَزۡوَٰجُكُمۡ تُحۡبَرُونَ ٧٠ يُطَافُ عَلَيۡهِم بِصِحَافٖ مِّن ذَهَبٖ وَأَكۡوَابٖۖ وَفِيهَا مَا تَشۡتَهِيهِ ٱلۡأَنفُسُ وَتَلَذُّ ٱلۡأَعۡيُنُۖ وَأَنتُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ٧١﴾ [الزخرف: ٧٠، ٧٤]
‘তোমরা সস্ত্রীক সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর। স্বর্ণখচিত থালা ও পানপাত্র নিয়ে তাদেরকে প্রদক্ষিণ করা হবে, সেখানে মন যা চায় আর যাতে চোখ তৃপ্ত হয় তা-ই থাকবে এবং সেখানে তোমরা হবে স্থায়ী।’ (সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৭০-৭১)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ فِيهِنَّ قَٰصِرَٰتُ ٱلطَّرۡفِ لَمۡ يَطۡمِثۡهُنَّ إِنسٞ قَبۡلَهُمۡ وَلَا جَآنّٞ ٥٦ فَبِأَيِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ٥٧ كَأَنَّهُنَّ ٱلۡيَاقُوتُ وَٱلۡمَرۡجَانُ ٥٨ ﴾ [الرحمن: ٥٦، ٥٨]
‘সেখানে থাকবে স্বামীর প্রতি দৃষ্টি সীমিতকারী মহিলাগণ, যাদেরকে ইতঃপূর্বে স্পর্শ করেনি কোন মানুষ আর না কোন জিন। সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নি‘আমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে? তারা যেন পদ্মরাগ ও প্রবাল। (সূরা আর-রহমান, আয়াত: ৫৬-৫৭)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ فِيهِنَّ خَيۡرَٰتٌ حِسَانٞ ٧٠ فَبِأَيِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ٧١ حُورٞ مَّقۡصُورَٰتٞ فِي ٱلۡخِيَامِ ٧٢ ﴾ [الرحمن: ٧٠، ٧٢]
‘সেই জান্নাতসমূহে থাকবে উত্তম চরিত্রবতী অনিন্দ্য সুন্দরীগণ। সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে? তারা হূর, তাঁবুতে থাকবে সুরক্ষিতা।’ (সূরা আর-রহমান, আয়াত: ৭০-৭২)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ [السجدة: ١٧]
‘কেউ জানে না তাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কী নিয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ।’ (সূরা আস-সিজদা, আয়াত: ১৭)
* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ ۞لِّلَّذِينَ أَحۡسَنُواْ ٱلۡحُسۡنَىٰ وَزِيَادَةٞۖ وَلَا يَرۡهَقُ وُجُوهَهُمۡ قَتَرٞوَلَا ذِلَّةٌۚ أُوْلَٰٓئِكَ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَنَّةِۖ هُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ٢٦ ﴾ [يونس: ٢٦]
‘যারা সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে হুসনা তথা সুন্দর প্রতিদান এবং তা আরো বাড়তি কিছু। আর তাদের মুখমণ্ডলকে আবৃত করবে না মলিনতা কিংবা অপমান। তারাই জান্নাতের অধিকারী, সেখায় অনন্তকাল বসবাস করতে থাকবে।’ (সূরা ইউনুস, আয়াত: ২৬)
এ আয়াতে বর্ণিত ‘হুসনা’ বা সুন্দর হলো জান্নাত; কেননা জান্নাতের চেয়ে সুন্দর আর কোনো আবাস নেই। আর আয়াতে বর্ণিত আরো বাড়তি কিছু হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার দর্শন। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় করুণা ও দয়ায় আমাদের তা দান করুন।
তাছাড়া জান্নাতের গুণাগুণ, নিয়ামতরাজি, সন্তুষ্টি ও আনন্দদায়ক বিষয়ের বর্ণনায় কুরআনুল কারীমের বহু আয়াত রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাত সম্পর্কে যেসব বিবরণ দিয়েছেন, নমুনা স্বরূপ তার কিছু নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
* আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، حَدِّثْنَا عَنِ الْجَنَّةِ، مَا بِنَاؤُهَا؟ قَالَ: «لَبِنَةُ ذَهَبٍ وَلَبِنَةُ فِضَّةٍ، وَمِلَاطُهَا الْمِسْكُ الْأَذْفَرُ، وَحَصْبَاؤُهَا اللُّؤْلُؤُ وَالْيَاقُوتُ، وَتُرَابُهَا الزَّعْفَرَانُ، مَنْ يَدْخُلُهَا يَنْعَمُ وَلَا يَبْأَسُ، وَيَخْلُدُ وَلَا يَمُوتُ، لَا تَبْلَى ثِيَابُهُ وَلَا يَفْنَى شَبَابُهُ»
‘আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জান্নাত সম্পর্কে বর্ণনা করুন, তা কিসের তৈরি? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ইটের তৈরি, তার গাঁথুনী হবে মিশক আম্বরের। তার নুড়ি বা কংকর হবে মনিমুক্তা ও ইয়াকুত পাথরের। আর তার মাটি যা‘ফরানের। যে তাতে প্রবেশ করবে সে (অশেষ) নিয়ামতপ্রাপ্ত হবে। নিরাশ হবে না, বা অভাব বোধ করবে না, সে তথায় চিরস্থায়ী হবে; মৃত্যুবরণ করবে না। তার পোশাক (কখনও) পুরাতন হবে না। তার যৌবন শেষ হবে না।’[1]
* সহীহ মুসলিমে এসেছে, সাহাবী উৎবাহ ইবন গাযওয়ান একদিন ভাষণ দিতে গিয়ে আল্লাহর প্রশংসা ও তার স্তুতি প্রকাশ করে বললেন,
أَمَّا بَعْدُ، «فَإِنَّ الدُّنْيَا قَدْ آذَنَتْ بِصَرْمٍ وَوَلَّتْ حَذَّاءَ، وَلَمْ يَبْقَ مِنْهَا إِلَّا صُبَابَةٌ كَصُبَابَةِ الْإِنَاءِ، يَتَصَابُّهَا صَاحِبُهَا، وَإِنَّكُمْ مُنْتَقِلُونَ مِنْهَا إِلَى دَارٍ لَا زَوَالَ لَهَا، فَانْتَقِلُوا بِخَيْرِ مَا بِحَضْرَتِكُمْ، فَإِنَّهُ قَدْ ذُكِرَ لَنَا أَنَّ الْحَجَرَ يُلْقَى مِنْ شَفَةِ جَهَنَّمَ، فَيَهْوِي فِيهَا سَبْعِينَ عَامًا، لَا يُدْرِكُ لَهَا قَعْرًا، وَوَاللهِ لَتُمْلَأَنَّ، أَفَعَجِبْتُمْ؟ وَلَقَدْ ذُكِرَ لَنَا أَنَّ مَا بَيْنَ مِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ مَسِيرَةُ أَرْبَعِينَ سَنَةً، وَلَيَأْتِيَنَّ عَلَيْهَا يَوْمٌ وَهُوَ كَظِيظٌ مِنَ الزِّحَامِ »
‘অতঃপর, দুনিয়া তার সমাপ্তির এবং পশ্চাদাপসারণের ঘোষণা দিচ্ছে। দুনিয়ার কিছুই বাকী থাকবে না, একমাত্র ততটুকু যা পাত্রের নিচে অবশিষ্ট থাকে; যা পাত্রের মালিক গ্রহণ করে থাকে। নিশ্চয়ই তোমরা এমন এক বাড়ীর দিকে অগ্রসর হচ্ছো যা শেষ হওয়ার নয়। অতএব তোমরা উত্তম আমলসহ সেদিকে স্থানান্তরিত হও। আর আমাদের কাছে বর্ণনা করা হয়েছে যে, জান্নাতের দরজার দুই কপাটের মধ্যকার ব্যবধান চল্লিশ বছরের রাস্তার সমপরিমাণ। অথচ এমন একদিন আসবে যেদিন সেখানেও প্রচণ্ড ভীড় থাকবে।’[2]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, সাহল ইবন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«فِي الجَنَّةِ ثَمَانِيَةُ أَبْوَابٍ، فِيهَا بَابٌ يُسَمَّى الرَّيَّانَ، لاَ يَدْخُلُهُ إِلَّا الصَّائِمُونَ»
‘জান্নাতের আটটি দরজা আছে, তন্মধ্যে একটি দরজার নাম রাইয়্যান। এ দরজা দিয়ে সিয়াম পালনকারী ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করবে না।’[3]
* হাদীসে আরও রয়েছে:
عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ لِأَصْحَابِهِ: «أَلَا هَلْ مُشَمِّرٍ لِلْجَنَّةِ، فَإِنَّ الْجَنَّةَ لَا خَطَرَ لَهَا هِيَ، وَرَبِّ الْكَعْبَةِ نُورٌ يَتَلَأْلَأُ، وَرَيْحَانَةٌ تَهْتَزُّ، وَقَصْرٌ مُشَيَّدٌ، وَنَهْرٌ مُطَّرِدٌ، وَفَاكِهَةٌ كَثِيرَةٌ نَضِيجَةٌ، وَزَوْجَةٌ حَسْنَاءُ جَمِيلَةٌ، وَحُلَلٌ كَثِيرَةٌ فِي مَقَامٍ أَبَدًا فِي حَبْرَةٍ وَنَضْرَةٍ فِي دَارٍ عَالِيَةٍ سَلِيمَةٍ بَهِيَّةٍ»، قَالُوا: نَحْنُ الْمُشَمِّرُونَ لَهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «قُولُوا: إِنْ شَاءَ اللَّهُ»
‘উসামা ইবন যায়েদ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাবধান! জান্নাতে যাওয়ার ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টাকারী কেউ আছে কী? কেননা জান্নাত এমন এক বস্তু যার অবস্থা সম্পর্কে কল্পনাও উদিত হয় না। কা‘বার রবের কসম! তা হচ্ছে, উজ্জ্বল আলোকে উদ্ভাসিত, চকচককারী, সুগন্ধি সুবাতাস, সুরম্য অট্রালিকা, প্রবাহমান নদী, পাকা বা সুস্বাদু ফল, অনিন্দ্য সুন্দরী স্ত্রী এবং বাহারী পোশাক, তা হবে শান্তির চিরস্থায়ী নীড়। নিরাপদ বাসস্থান, ফল-মূল, চিরসবুজ, নেয়ামতপূর্ণ ও সুউচ্চ সুদৃশ্য মহল্লা। সাহাবাগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো ওই জান্নাতের প্রতি প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষী ও এর জন্য প্রচেষ্টাকারী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি সাল্লাম বললেন, তোমরা বল ইন-শাআল্লাহ। অতঃপর উপস্থিত লোকেরা বললেন, ইন-শাআল্লাহ।’[4]
* অনুরূপভাবে আবু সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ فِى الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ لَوْ أَنَّ الْعَالَمِينَ اجْتَمَعُوا فِى إِحْدَاهُنَّ لَوَسِعَتْهُمْ».
‘নিশ্চয় জান্নাতের একশ স্তর রয়েছে, যদি পৃথিবীর সকল অধিবাসী তার একটি স্তরে একত্রিত হয়, তবুও তার বিস্তৃতি অক্ষু্ণ্ন থাকবে।’[5]
অন্য এক হাদীসে ‘আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ فِي الجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ، أَعَدَّهَا اللَّهُ لِلْمُجَاهِدِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، مَا بَيْنَ الدَّرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ، فَاسْأَلُوهُ الفِرْدَوْسَ، فَإِنَّهُ أَوْسَطُ الجَنَّةِ وَأَعْلَى الجَنَّةِ - أُرَاهُ - فَوْقَهُ عَرْشُ الرَّحْمَنِ، وَمِنْهُ تَفَجَّرُ أَنْهَارُ الجَنَّةِ»
‘নিশ্চয়ই জান্নাতের একশতটি স্তর রয়েছে। আল্লাহ তার রাস্তায় জিহাদকারীদের জন্য তা তৈরি করেছেন। প্রতি দু’ স্তরের মধ্যে আসমান ও জমিনের ব্যবধান রয়েছে। সুতরাং তোমরা যখন আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করবে, তখন জান্নাতুল ফিরদাউস প্রার্থনা করবে। কারণ তা জান্নাতের মাঝখানে অবস্থিত এবং সর্বোচ্চ জান্নাত, সেখান থেকেই জান্নাতের নদীসমূহ প্রবহিত হয়, এর ওপরই আল্লাহর আরশ অবস্থিত।’[6]
* অন্য হাদীসে আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ أَهْلَ الجَنَّةِ يَتَرَاءَوْنَ أَهْلَ الغُرَفِ مِنْ فَوْقِهِمْ، كَمَا يَتَرَاءَوْنَ الكَوْكَبَ الدُّرِّيَّ الغَابِرَ فِي الأُفُقِ، مِنَ المَشْرِقِ أَوِ المَغْرِبِ، لِتَفَاضُلِ مَا بَيْنَهُمْ» قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ تِلْكَ مَنَازِلُ الأَنْبِيَاءِ لاَ يَبْلُغُهَا غَيْرُهُمْ، قَالَ: «بَلَى وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، رِجَالٌ آمَنُوا بِاللَّهِ وَصَدَّقُوا المُرْسَلِينَ»
‘জান্নাতবাসীরা পরস্পর পরস্পরকে কক্ষে অবস্থানরত উপরের দিকে দেখতে পাবে, যেমন- তোমরা দূর আকাশের প্রান্তদেশে পূর্ব বা পশ্চিমে মোতির ন্যায় উজ্জ্বল তারকারাজী দেখে থাকো। আর এটা হবে তাদের পরস্পরের মর্যাদার ভিত্তিতে। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ওই স্থান কি নবীদের? তথায় তাঁরা ছাড়া আর কেউ কি পৌঁছতে পারবে না? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হ্যাঁ, ওই সত্তার কসম যার হাতে আমার জীবন! তারা হচ্ছে এমন লোক যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে এবং রাসূলদের যথাযথ সত্য বলে বিশ্বাস করেছে।’[7]
* অনুরূপভাবে আবূ মালেক আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« إِنَّ فِي الْجَنَّةِ غُرَفًا يُرَى ظَاهِرُهَا مِنْ بَاطِنِهَا، وَبَاطِنُهَا مِنْ ظَاهِرُهَا» ، فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ تِلْكَ مَنَازِلُ الْأَنْبِيَاءِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعَدَّهَا اللَّهُ لِمَنْ أَطْعَمَ الطَّعَامَ، وَأَفْشَى السَّلَامَ، وَأَدَامَ الصِّيَامَ، وَصَلَّى بِاللَّيْلِ، وَالنَّاسُ نِيَامٌ» .
‘নিশ্চয়ই জান্নাতের মাঝে অনেকগুলো কামরা থাকবে। যার ভেতর থেকে বাইরে এবং বাইরে থেকে ভেতরে দেখা যাবে। আল্লাহ তা তৈরি করেছেন ওই সকল ব্যক্তির জন্য, যারা মানুষকে খাদ্য দেয়, সিয়াম পালন করে এবং মানুষ যখন ঘুমায়, তখন তারা সালাতে মগ্ন থাকে।’[8]
* অন্য হাদীসে আবূ মুসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إِنَّ لِلْمُؤْمِنِ فِي الْجَنَّةِ لَخَيْمَةً مِنْ لُؤْلُؤَةٍ وَاحِدَةٍ مُجَوَّفَةٍ، طُولُهَا سِتُّونَ مِيلًا، لِلْمُؤْمِنِ فِيهَا أَهْلُونَ، يَطُوفُ عَلَيْهِمِ الْمُؤْمِنُ فَلَا يَرَى بَعْضُهُمْ بَعْضًا»
‘নিশ্চয়ই মুমিনদের জন্য জান্নাতে একটি সুরক্ষিত মোতির তাবু থাকবে। আসমানের দিকে তার দৈর্ঘ্য হবে ষাট মঞ্জিল। আর মুমিনদের জন্য সেখানে এমন পরিবারসমূহ থাকবে, মুমিন সে তাঁবুগুলোর চারপাশে ঘোরাফেরা করবে অথচ তাদের কেউ কাউকে দেখতে পাবে না।’[9]
* অনুরূপভাবে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ أَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ القَمَرِ لَيْلَةَ البَدْرِ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ عَلَى أَشَدِّ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً، لاَ يَبُولُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ، وَلاَ يَتْفِلُونَ وَلاَ يَمْتَخِطُونَ، أَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ، وَرَشْحُهُمُ المِسْكُ، وَمَجَامِرُهُمْ الأَلُوَّةُ الأَنْجُوجُ، عُودُ الطِّيبِ وَأَزْوَاجُهُمُ الحُورُ العِينُ، عَلَى خَلْقِ رَجُلٍ وَاحِدٍ، عَلَى صُورَةِ أَبِيهِمْ آدَمَ، سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ»
‘সর্বপ্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের চেহারা হবে পুর্ণিমার চাঁদের ন্যায়। তারপর যে দলটি প্রবেশ করবে তারা হবে আকাশের সবচেয়ে আলোকিত তারকার চেয়ে উজ্জ্বল। যারা জান্নাতে যাবে তারা পেশাব করবে না, পায়খানা করবে না, থুতু আসবে না, কফ-শ্লেষাও আসবে না। তাদের চিরুনী হবে স্বর্ণের, ঘাম হবে মেশকের ন্যায় সুগন্ধিযুক্ত। তাদের সুগন্ধি কাঠ হবে মুল্যবান আলাঞ্জুজ (সুগন্ধিযুক্ত কাঠ) সকলের গঠন হবে আদি পিতা আদম ‘আলাইহিস সালামের ন্যায় লম্বায় ঘাট হাত লম্বা।’[10]
অন্য বর্ণনায় আছে,
« لاَ اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ وَلاَ تَبَاغُضَ، قُلُوبُهُمْ قَلْبٌ وَاحِدٌ، يُسَبِّحُونَ اللَّهَ بُكْرَةً وَعَشِيًّا»
‘তাদের মধ্যে কোনো মতনৈক্য থাকবে না। তারা পরস্পর হিংসা করবে না, তারা সকলে এক আত্মা সদৃশ হবে এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর প্রশংসা করবে।’[11]
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
«وَأَزْوَاجُهُمُ الحُورُ العِينُ»
“আর তাদের স্ত্রীগণ হবেন ডাগর নয়না হূরীগণ”[12]।
* অন্য হাদীসে রয়েছে, জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ يَأْكُلُونَ فِيهَا وَيَشْرَبُونَ، وَلَا يَتْفُلُونَ وَلَا يَبُولُونَ وَلَا يَتَغَوَّطُونَ وَلَا يَمْتَخِطُونَ» قَالُوا: فَمَا بَالُ الطَّعَامِ؟ قَالَ: «جُشَاءٌ وَرَشْحٌ كَرَشْحِ الْمِسْكِ، يُلْهَمُونَ التَّسْبِيحَ وَالتَّحْمِيدَ، كَمَا تُلْهَمُونَ النَّفَسَ»
‘নিশ্চয় জান্নাতীগণ পানাহার করবে অথচ থুতু ফেলবে না, পেশাব-পায়খানাও করবে না, নাকও ঝাড়বে না। সাহাবীগণ বললেন, তাহলে খাদ্যের কি হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা ঢেকুর দেবে এবং মিশকের ন্যায় ঘাম বের হবে। তাদের তাসবীহ ও তাহমীদ শিখিয়ে দেয়া হবে যেমনি তাদেরকে শ্বাস-প্রশ্বাসের ইলহাম হবে।’[13]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, যায়েদ ইবন আরকাম থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ، إِنَّ أَحَدَهُمْ لَيُعْطَى قُوَّةَ مِئَةِ رَجُلٍ فِي الْمَطْعَمِ وَالْمَشْرَبِ وَالشَّهْوَةِ وَالْجِمَاعِ . حَاجَةُ أَحَدِهِمْ عَرَقٌ يَفِيضُ مِنْ جُلُودِهِمْ مِثْلُ رِيحِ الْمِسْكِ، فَإِذَا الْبَطْنُ قَدْ ضَمُرَ».
‘শপথ ওই সত্তার! যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, নিশ্চয়ই তাদের মধ্য হতে অর্থাৎ জান্নাতবাসীদের মধ্য হতে প্রত্যেককে একশত ব্যক্তির ন্যায় পানাহার, সহবাস শক্তি ও চাহিদা প্রদান করা হবে। তাদের শরীরের প্রয়োজন (পয়ঃনিস্কাষণের ব্যবস্থা) হবে শরীরের চামড়ার উপর থেকে বের হওয়া ঘাম, যা মিশকের ন্যায় সুগন্ধিযুক্ত হবে। অতঃপর তাদের পেট আবার খালি হয়ে যাবে।’[14]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وَلَقَابُ قَوْسِ أَحَدِكُمْ، أَوْ مَوْضِعُ قَدَمٍ مِنَ الجَنَّةِ، خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا، وَلَوْ أَنَّ امْرَأَةً مِنْ نِسَاءِ أَهْلِ الجَنَّةِ اطَّلَعَتْ إِلَى الأَرْضِ لَأَضَاءَتْ مَا بَيْنَهُمَا، وَلَمَلَأَتْ مَا بَيْنَهُمَا رِيحًا، وَلَنَصِيفُهَا - يَعْنِي الخِمَارَ - خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا»
“জান্নাতে তোমাদের কারও ধনুক অথবা কারও পা রাখার স্থান দুনিয়া ও তাতে যা আছে তা থেকেও উত্তম। যদি কোনো জান্নাতি মহিলা যমীনের দিকে তাকাতো তবে যমীন পর্যন্ত সকল স্থান আলোকিত হয়ে যেতো, আর তার সুগন্ধে এ সকল স্থান পূর্ণ হয়ে যেতো। জান্নাতি মহিলার একটি উড়না দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তা থেকে উত্তম।’[15]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ فِى الْجَنَّةِ لَسُوقًا يَأْتُونَهَا كُلَّ جُمُعَةٍ فَتَهُبُّ رِيحُ الشَّمَالِ فَتَحْثُو فِى وُجُوهِهِمْ وَثِيَابِهِمْ فَيَزْدَادُونَ حُسْنًا وَجَمَالاً فَيَرْجِعُونَ إِلَى أَهْلِيهِمْ وَقَدِ ازْدَادُوا حُسْنًا وَجَمَالاً فَيَقُولُ لَهُمْ أَهْلُوهُمْ وَاللَّهِ لَقَدِ ازْدَدْتُمْ بَعْدَنَا حُسْنًا وَجَمَالاً. فَيَقُولُونَ وَأَنْتُمْ وَاللَّهِ لَقَدِ ازْدَدْتُمْ بَعْدَنَا حُسْنًا وَجَمَالاً».
‘নিশ্চয় জান্নাতে একটি বাজার রয়েছে। জান্নাতীগণ প্রতি শুক্রবার সে বাজারে আসবেন। অতঃপর উত্তরের বাতাস তাদের মুখমণ্ডল ও কাপড়ের উপর প্রবাহিত হবে। এতে তাদের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পাবে। অতঃপর তারা যখন নিজ পরিবারের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, তখন তাদের স্ত্রীরা বলবে, আল্লাহর শপথ! আমাদের কাছ থেকে যাওয়ার পর তোমাদের সৌন্দর্য ও চিত্তাকর্ষকতা আরো বেড়ে গেছে।’[16]
* তাছাড়া অন্য হাদীসে রয়েছে, ‘আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«يُنَادِي مُنَادٍ: إِنَّ لَكُمْ أَنْ تَصِحُّوا فَلَا تَسْقَمُوا أَبَدًا، وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَحْيَوْا فَلَا تَمُوتُوا أَبَدًا، وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَشِبُّوا فَلَا تَهْرَمُوا أَبَدًا، وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَنْعَمُوا فَلَا تَبْأَسُوا أَبَدًا» فَذَلِكَ قَوْلُهُ عَزَّ وَجَلَّ: (وَنُودُوا أَنْ تِلْكُمُ الْجَنَّةُ أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ) [الأعراف: 43]
জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন একজন আহ্বানকারী ঘোষণা করবেন: জেনে রাখ! তোমরা সর্বদা সুস্থ্য থাকবে; অসুস্থ হবে না। জীবিত থাকবে; কখনও মরবে না; সর্বদা যুবক থাকবে; কখনও বৃদ্ধ হবে না। নিয়ামত প্রাপ্ত হবে; কখনও বঞ্চিত হবে না। এটাই হচ্ছে মহান আল্লাহর বাণী: “তোমরা যে (ভালো) আমল করতে, তারই জন্য তোমাদেরকে এই জান্নাতের উত্তরাধিকারী করা হয়েছে।’ (সূরা আল-‘আরাফ, আয়াত: ৪৩)’[17]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
قَالَ اللَّهُ «أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ، فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ» قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: اقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ: (فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ) [السجدة: 17]
‘আল্লাহ তা‘আলা বলছেন: আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য এমন সব নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছি, যা কখনও কোনো চক্ষু দেখে নি, কোনো কান শুনে নি এবং কোনো অন্তকরণ কল্পনাও করে নি। (তিনি বলেন) এর সত্যতা প্রমাণে তোমরা ইচ্ছা করলে এই আয়াতটি পাঠ করতে পার। “কোনো প্রাণী জানে না, কৃতকর্মের প্রতিদানস্বরূপ চক্ষু শীতলকারী আনন্দদায়ক কী ধরনের নিয়ামত তাদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।” (সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ১৭)’[18]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, সুহাইব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ، وَأَهْلُ النَّارِ النَّارَ، نَادَى مُنَادٍ: يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ، إِنَّ لَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ مَوْعِدًا يُرِيدُ أَنْ يُنْجِزَكُمُوهُ، فَيَقُولُونَ: وَمَا هُوَ؟ أَلَمْ يُثَقِّلْ مَوَازِينَنَا، وَيُبَيِّضْ وُجُوهَنَا، وَيُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ، وَيُجِرْنَا مِنَ النَّارِ " قَالَ: «فَيُكْشَفُ لَهُمُ الْحِجَابُ فَيَنْظُرُونَ إِلَيْهِ» قَالَ: «فَوَاللَّهِ مَا أَعْطَاهُمْ شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَيْهِ، وَلَا أَقَرَّ لِأَعْيُنِهِمْ»
‘যখন জান্নাতবাসী জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন এক ঘোষক ঘোষণা করে বলবে, হে জান্নাতীগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি পূর্ণ করতে চাও। তারা উত্তরে বলবে সেটা আবার কী? তিনি কি আমাদের আমলের পাল্লাকে ভারী করে দেন নি? আমাদের চেহারা উজ্জ্বল করে দেন নি? আমাদেকে জান্নাতে প্রবেশ করান ন? জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন নি? তিনি বলেন, তখন তাদের জন্য পর্দা উম্মোচন করা হবে। তখন তারা তাঁর (আল্লাহর) দিকে তাকাবেন। আল্লাহর কসম! তাঁর দর্শনের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং চক্ষু শীতলকারী কোনো প্রিয় বস্তুই তিনি মানুষকে দান করেন নি।’[19]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ لِأَهْلِ الجَنَّةِ: أُحِلُّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِي، فَلاَ أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا»
‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জান্নাতীদের বলবেন, আমি তোমাদের ওপর চির দিনের জন্য সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম। আর কখনও অসন্তুষ্ট হব না।’[20]
হে আল্লাহ! আমাদের জান্নাতের স্থায়ী বাসিন্দা করে দিন এবং আমাদের ওপর সন্তুষ্টির অবারিত ঝর্ণাধারা বর্ষণ করুন। আর আপনার দর্শন ও সাক্ষাৎ লাভে ধন্য হবার তাওফীক দান করুন; যে দর্শনে থাকবে না কোনো ধরণের ক্ষতি ও ক্ষতিকারী এবং ভ্রষ্টকারী ফিতনা। হে আল্লাহ! সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও নবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহবীর ওপর।
[2] মুসলিম: ২৯৬৭।
[3] বুখারী: ১৮৯৬; মুসলিম: ১১৫২।
[4] ইবন মাজাহ: ৪৩৩২ ইবন হিব্বান: ৭৩৮১। তবে এর সনদ দুর্বল।
[5] আহমাদ ৩/২৯; তিরমিযী: ২৫৩২; তবে সনদ দুর্বল।
[6] বুখারী: ২৭৯০, ৭৪২৩।
[7] বুখারী: ৩২৫৬; মুসলিম: ২৮৩১।
[8] মুসনাদে আহমাদ ৫/৩৪৩; ইবন আবী শাইবাহ্: ৩৩৯৭২; সহীহ ইবন হিব্বান: ৫০৯।
[9] বুখারী: ৩২৪৩, ৪৮৭৮; মুসলিম: ২৮৩৮।
[10] বুখারী; ৩৩২৭; মুসলিম: ২৮৩৪।
[11] বুখারী: ৩২৪৫; মুসলিম: ২৮৩৪।
[12] মুসলিম: ২৮৩৪।
[13] মুসলিম: ২৮৩৫।
[14] আহমাদ ৪/৩৬৭; সহীহ ইবন হিব্বান: ৭৪২৪।
[15] বুখারী : ৬৫৬৮।
[16] মুসলিম: ২৮৩৩।
[17] মুসলিম: ২৮৩৭।
[18] বুখারী: ৩২৪৪; মুসলিম: ২৮২৪।
[19] মুসলিম: ১৮১; আহমাদ: ১৮৯৪১।
[20] বুখারী: ৬৫৪৯; মুসলিম: ২৮২৯।