শরহুল আকীদাহ আল-ওয়াসেতীয়া ১৫- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ক্ষমা, রহমত, মর্যাদা ও ক্ষমতা ডঃ সালেহ ফাওযান [অনুবাদ: শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী] ১ টি
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ক্ষমা, রহমত, মর্যাদা ও ক্ষমতা

১৫- وصف الله بالعفو والمغفرة والرحمة والعزة والقدرة

১৫- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ক্ষমা, রহমত, মর্যাদা ও ক্ষমতা:

আল্লাহ তাআলা বলেন,

﴿إِن تُبْدُوا خَيْرًا أَوْ تُخْفُوهُ أَوْ تَعْفُوا عَن سُوءٍ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا قَدِيرًا﴾

‘‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে ও গোপনে সৎকাজ করে যাও অথবা যদি কারো মন্দ ব্যবহারকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখো, তাহলে আল্লাহ বড়ই ক্ষমাকারী ও ক্ষমতাবান’’। (সূরা নিসাঃ ১৪৯) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,

﴿وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنكُمْ وَالسَّعَةِ أَن يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغْفِرَ اللَّهُ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾

‘‘তোমাদের মধ্য থেকে যারা প্রাচুর্য ও সামর্থের অধিকারী তারা যেন এ মর্মে কসম খেয়ে না বসে যে, তারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, গরীব-মিসকীন ও আল্লাহর পথে গৃহ ত্যাগকারীদেরকে সাহায্য করবেনা৷ তাদের উচিৎ ক্ষমা করা ও তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করা৷ তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদের মাফ করেন? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াকারী’’।[1] (সূরা নূরঃ ২২) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,

﴿يَقُولُونَ لَئِن رَّجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ ۚ وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَٰكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ﴾

‘‘এরা (মুনাফেকরা) বলেঃ আমরা মদীনায় ফিরে যেতে পারলে মর্যাদাবান লোকেরা অপদস্ত লোকদেরকে সেখান থেকে বের করে দেবে৷ অথচ সম্মান ও মর্যাদা তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের জন্য৷ কিন্তু মুনাফেকরা তা জানে না’’। (সূরা মুনাফিকুনঃ ৮) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,

﴿قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ﴾

‘‘সে (ইবলীস) বললোঃ তোমার ইজ্জতের কসম, আমি এদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করবোই। তবে একমাত্র তোমার একনিষ্ট বান্দাগণ ছাড়া ’’। (সূরা সোয়াদঃ ৮২-৮৩)


ব্যাখ্যাঃ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ إِن تُبْدُوا خَيْرًا أَوْ تُخْفُوهُ তোমরা যদি প্রকাশ্যে ও গোপনে সৎকাজ করে যাও। অর্থাৎ তোমাদের সৎকর্মগুলোকে মানুষের জন্য প্রকাশ করো অথবা যদি গোপনে সৎকাজ করতে থাকো।

أَوْ تَعْفُوا عَن سُوءٍ অথবা যদি কারো মন্দ ব্যবহারকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখোঃ অর্থাৎ যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করল কিংবা অন্য কোনভাবে কষ্ট দিল, তা যদি তোমরা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখো, তাহলে জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বড়ই ক্ষমা গুণের অধিকারী৷ অথচ তিনি শাস্তি দেয়ার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন। তিনি তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন এবং তাদেরকে মাফ করে দেন। অথচ তারা নিজ হাতে যে অন্যায় কাজ করে, তার কারণে তিনি শাস্তি দিতে পূর্ণ ক্ষমতাবান। সুতরাং হে মুসলিমগণ! তোমরাও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার গুণে গুণান্বিত হও। কেননা তিনি শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা রাখা সত্ত্বেও ক্ষমা করে দেন। সুতরাং তোমাদেরও তাই করা উচিৎ।[2]

وَلْيَعْفُوا তাদের উচিৎ ক্ষমা করাঃ অর্থাৎ আয়াতের প্রথম দিকে সম্মান ও ফযীলতের অধিকারী যেসব মুমিনের আলোচনা করা হয়েছে, তাদের উচিৎ মানুষের অপরাধ ঢেকে রাখা এবং ক্ষমা করে দেয়া।

وَلْيَصْفَحُوا তাদের উচিৎ দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করাঃ সম্মান ও ফযীলতের অধিকারীদের উচিৎ দোষ-ত্রুটি ও অপরাধে লিপ্তদের এড়িয়ে চলা এবং তাদের থেকে চোখ বন্ধ করে রাখা।[3] আল্লাহ তাআলা বলেনঃ তোমরা কি চাওনা যে, তোমাদের ক্ষমার কারণে এবং যারা তোমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে, তাদের থেকে দৃষ্টি এড়িয়ে নেয়ার কারণে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসেন? আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং প্রচুর দয়াবান।

وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ সম্মান-মর্যাদা ও শক্তি তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের জন্যঃ[4] এখানে ঐসব মুনাফেকদের প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা মনে করেছিল মুমিনদের উপর কেবল তাদেরই রয়েছে শক্তি ও সম্মান-মর্যাদা। العزة শব্দের অর্থ শক্তি ও বিজয়।[5] শক্তি ও বিজয় কেবল আল্লাহ তাআলার জন্য এবং তাঁর রাসূল ও তাঁর সৎ বান্দাদের মধ্য হতে যাদেরকে দান করেছেন, কেবল তাদের জন্যই। তারা ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়।

আল্লাহ তাআলা ইবলীস সম্পর্কে বলেন যে, সে বলেছেঃ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ তোমার ইজ্জতের কসম, আমি এদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করবোইঃ অর্থাৎ ইবলীস আল্লাহ তাআলার ইয্যতের শপথ করে বলেছে যে, সে বনী আদমের সামনে প্রবৃত্তির কাম্য বস্ত্তগুলোকে সুসজ্জিত করে দিয়ে এবং তাদের মধ্যে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিয়ে তাদেরকে গোমরাহ না করে ছাড়বেনা।[6] এর ফলে তারা সকলেই গোমরাহ হয়ে যাবে। অতঃপর ইবলীস যখন জানতে পারলো যে, কাফের ও পাপিষ্ঠদের মধ্য হতে যারা তার অনুসারী তার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুধু তাদের মধ্যেই সফল হবে, তখন তার কথার মধ্যে স্বতন্ত্র বক্তব্য প্রয়োগ করল। অর্থাৎ আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাদেরকে গোমরাহীর আওতামুক্ত করে বললঃ إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ তবে একমাত্র তোমার একনিষ্ঠ বান্দাগণ ছাড়া।
উপরোক্ত আয়াতগুলো থেকে প্রমাণ হয় যে আল্লাহ তাআলার জন্য মাফ করা, ক্ষমা করা, রহম করা, ক্ষমতা বিশেষণ রয়েছে। আল্লাহর মর্যাদা ও বড়ত্বের জন্য যেভাবে শোভনীয় ঠিক সেভাবেই এই বিশেষণগুলো সাব্যস্ত করতে হবে।

[1] - এই আয়াতটি আবু বকর (রাঃ)কে কেন্দ্র করে নাযিল হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এই যে, মিসতাহ বিন উছাছাহ ছিল আবু বকরের খালাতো ভাই। সে ছিল মিসকীন। তার কোন সম্পদ ছিলনা। আবু বকর তার জন্য খরচ করতেন। সে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত কারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল। সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে বদর যুদ্ধেও শরীক হয়েছিল।

বনী মুস্তালিক যুদ্ধে যখন মুনাফেকরা আয়েশা (রাঃ)এর পবিত্রতার ব্যাপারে মিথ্যা অপবাদ দিল, তখন কতিপয় ভাল মুমিন লোকও ফিতনায় পড়ে গেলেন। তারাও দু’চার কথা বলে ফেলেছিলো। তাদের মধ্যে আবু বকরের খালাতো ভাই মিসতাও ছিল। আবু বকর (রাঃ) যখন মিছতার ব্যাপারটি জানতে পারলেন, তখন তিনি মিসতার উপর খুব রাগান্বিত হলেন এবং শপথ করে বললেনঃ আমি তোমার জন্য এখন থেকে এক পয়সাও খরচ করবোনা। এই বলে তিনি মিসতার অনুদান বন্ধ করে দিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা উপরোক্ত আয়াত নাযিল করলেন এবং মুমিনদেরকে ক্ষমার বিশেষণে বিশেষিত হওয়ার আদেশ করলেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলা যখন বললেনঃ তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদের মাফ করেন? তখন আবু বকর (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ, আমি অবশ্যই তা চাই। অতঃপর তিনি শপথের কাফফারা আদায় করলেন, মিসতাহকে ক্ষমা করে দিলেন এবং পূর্বের ন্যায় তার জন্য নিয়মিত ভাতা চালু করে দিলেন।

[2] - মূলতঃ ক্ষমা করা তখনই প্রশংসনীয় কাজ হয়, যখন প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষমতা থাকে। এই প্রকার ক্ষমা করাকে আল্লাহ পছন্দ করেন ও ভালবাসেন। তাই তিনি বান্দাদেরকে প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ক্ষমা করে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমেই তাদের ফযীলত প্রকাশিত হবে। অপর পক্ষে ক্ষমা করার ক্ষমতা না থাকার কারণে যে ব্যক্তি ক্ষমা করে দেয়, তার ক্ষমার মধ্যে প্রশংসার কিছু থাকেনা। সম্পদের প্রতি প্রয়োজন না থাকার কারণে যে দান করে, তার দানেরও আল্লাহর নিকট কোন মূল্য হয়না।

[3] - মূলতঃ এখানে এমন দোষ-ত্রুটি ও অপরাধ গোপন রাখা ও ক্ষমা করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, যা গোপন রাখলে ও ক্ষমা করে দিলে তেমন কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে অপরাধ যদি মারাত্মক হয় এবং যা গোপন রাখলে ও শাস্তি না দিলে সমাজে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে সমাজ থেকে অন্যায় কাজের মূলোৎপাটন করার জন্য তাতে অবশ্যই শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। (আল্লাহই অধিক জানেন)

[4] - এই আয়াতটি মুনাফেকদের নেতা আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের প্রতিবাদে নাযিল হয়। সহীহ বুখারীতে জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেনঃ আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে একবার যুদ্ধের জন্যে বের হলাম। মুহাজিরদের মধ্য হতে বহু লোক এ যুদ্ধে তাঁর সাথে অংশ গ্রহণ করলেন। মুহাজিরদের মধ্যে এক লোক ছিল খুব রসিক। তিনি একজন আনসারী সাহাবীর শরীরে খোঁচা মারলেন। এতে আনসারী খুব রাগান্বিত হয়ে গেলেন। পরিশেষে প্রত্যেকই নিজ নিজ গোত্রকে আহবান করতে লাগল। আনসারী বললেনঃ হে আনসারগণ! সাহায্য করো। মুহাজিরও বলতে লাগলেনঃ হে মুহাজিরগণ! সাহায্য কর। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বের হয়ে এলেন এবং বলতে লাগলেনঃ কী হল? জাহেলী যুগের ন্যায় হাঁক-ডাক কেন? তারপর তিনি বললেনঃ তাদের ব্যাপারটা কী? তখন মুহাজির কর্তৃক আনসারীকে খোঁচা মারার কথাটি তাঁকে জানানো হল। জাবের বলেনঃ অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ জাহেলী যুগের হাঁক-ডাক পরিত্যাগ কর। কেননা এটাতো অত্যন্ত ঘৃণ্য ও ন্যাক্কারজনক কাজ। মুনাফেক সরদার আব্দুল্লাহ্ ইবনে উবাই ইবনে সুলুল তখন বললঃ এরা আমাদের বিরুদ্ধে হাঁক দিচ্ছে? আমরা মদীনা ফিরে গেলে মদীনার সম্ভ্রান্ত লোকেরা ইতর লোকদেরকে নিশ্চয়ই বের করে ছাড়বে। তখন উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি এই পঁচা লোকটির অর্থাৎ আব্দুল্লাহ্ ইবনে উবাইয়ের গর্দান উড়িয়ে দিব না? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ যদি তাই করা হয়, তাহলে লোকেরা বলবেঃ মুহাম্মাদ তাঁর সাথীদের হত্যা করছে। তখন এই আয়াতটি নাযিল হয়েছে।

[5] - العزيز (পরাক্রমশালী, বিজয়ী, পরাজিতকারী) আল্লাহর নাম। পরাজিত করা, শক্তিশালী হওয়া আল্লাহর সুউচ্চ সিফাত বা বিশেষণ। তিনি সকল মাখলুকের উপর বিজয়ী হন, কেউ তাকে পরাজিত করতে পারেনা। এই হিসাবে তিনি আযীয (বিজয়ী)। বলা হয় عز يعُزُّ অর্থাৎ তিনি অন্যের উপর বিজয়ী হয়েছেন, শক্তির মাধ্যমে অন্যকে দাবিয়ে দিয়েছেন ও পরাজিত করেছেন। দাউদ (আঃ)এর নিকট মুকদ্দমা পেশকারীদের একজনের উক্তি وعزني في الخطاب কথা ও যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সে আমার উপর বিজয়ী হয়েছে এবং আমাকে দাবিয়ে দিয়েছে। সৃষ্টির উপর আল্লাহর ইচ্ছা ও আদেশ বিজয়ী হয়। সে হিসাবে তিনি আযীয। তাঁর শত্রুদের উপর তিনি বিজয় লাভ করেন। এই অর্থেও তিনি আযীয। আর যদি আইন বর্ণে যবর দিয়ে عز يعَزُّ পড়া হয়, তাহলে অর্থ হবে قوي অর্থাৎ তিনি নিজেই এমন শক্তিশালী হয়েছেন, যার উপর অন্য কেউ শক্তিশালী হতে পারেনা। আর যদি আইন বর্ণে যের দিয়ে عزيعِزُّ পড়া হয়, তা হলে অর্থ হবে শক্ত হওয়া, কঠোর হওয়া। বলা হয়الأرض العزاز (শক্ত যমীন)। এটি হচ্ছে আযীযের সর্মনিম্ন অর্থ। সর্বোচ্চ হচ্ছে প্রথমটি, তারপর দ্বিতীয়টি। সুতরাং এই সবগুলো অর্থ ও সিফাতই আল্লাহ তাআলার নাম العزيز -এর মধ্যে রয়েছে। আল্লাহ নিজেই শক্তিশালী, শক্তির মাধ্যমে অন্যকে পরাজিতকারী এবং তিনি অত্যন্ত কঠোর।

[6] - আল্লাহ তাআলা যখন ফেরেশতাদেরকে আদমের জন্য সিজদা করার আদেশ দিলেন, তখন ইবলীসও সেই আদেশের আওতায় ছিল। ফেরেশতাগণ সিজদা করলেন। কিন্তু ইবলীস অহংকার করল এবং সিজদা করা হতে বিরত রইল। এতে আল্লাহ তাআলা ইবলীসের উপর ক্রোধান্বিত হলেন এবং তাকে লা’নত করলেন। ইবলীস মনে করলো, আদমই যেহেতু তার অভিশপ্ত হওয়ার একমাত্র কারণ, তাই হিংসার বশবর্তী হয়ে শপথ করে বলল যে, সে আদম ও তার সন্তানদের থেকে প্রতিশোধ নিবে এবং তাদেরকে গোমরাহ করে ছাড়বে।

ঐদিকে আল্লাহ তাআলা বললেনঃ ইবলীস কেবল তার বন্ধু ও চেলাদের উপরই দাপট ও ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। যারা আল্লাহর খাঁটি বান্দা হবে, তাদের উপর ইবলীসের কোন জারিজুরি খাটবেনা। ইবলীস যদিও আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাদেরকে গোমরাহ করার চেষ্টা করে, কিন্তু সে তাদেরকে গোমরাহ করতে পারেনা। কারণ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তার চক্রান্ত হতে রক্ষা করেন। এটিই সঠিক কথা। ইবলীস কেবল তাদেরকেই গোমরাহ করে, যারা তাকে বন্ধু বানায়। যেসব কাফের, মুশরেক ও পাপিষ্ঠ তাকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করে, সে তাদের উপর শক্তিশালী হয়। শাস্তি স্বরূপ আল্লাহ তাআলা ইবলীসকে তাদের উপর চাপিয়ে দেন। (আল্লাহই অধিক জানেন)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে