الدرجة الثانية وما تتضمنه
তাকদীরের দ্বিতীয় স্তর ও তাতে যা শামিল রয়েছে:
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেন,
وَأَمَّا الدَّرَجَةُ الثَّانِيَةُ فَهِيَ مَشِيئَةُ اللَّهِ النَّافِذَةُ وَقُدْرَتُهُ الشَّامِلَةُ وَهُوَ الْإِيمَانُ بِأَنَّ مَا شَاءَ اللَّهُ كَانَ وَمَا لَمْ يَشَأْ لَمْ يَكُنْ وَأَنَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِنْ حَرَكَةٍ وَلَا سُكُونٍ إِلَّا بِمَشِيئَةِ اللَّهِ سُبْحَانَهُ لَا يَكُونُ فِي مُلْكِهِ مَا لَا يُرِيدُ وَأَنَّهُ سُبْحَانَهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ مِنَ الْمَوْجُودَاتِ وَالْمَعْدُومَاتِ فَمَا مِنْ مَخْلُوقٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ إِلَّا اللَّهُ خَالِقُهُ سُبْحَانَهُ لَا خَالِقَ غَيْرُهُ وَلَا رَبَّ سِوَاهُ
তাকদীরের প্রতি ঈমান আনয়নের দ্বিতীয় স্তর বলতে আল্লাহ তাআলার ঐ ইচ্ছাকে বুঝায়, যা প্রত্যেক জিনিষের উপরই বাস্তবায়ন হয় এবং তাঁর ঐ সার্বভৌম ক্ষমতাকে বুঝায়, যা সকল বস্ত্তর উপর পরিব্যাপ্ত। সুতরাং এই বিশ্বাস করা আবশ্যক যে, আল্লাহ তাআলা যা ইচ্ছা করেন, তাই হয়। তিনি যা ইচ্ছা করেন না, তা কখনো সংঘটিত হয়না। আরো বিশ্বাস করা আবশ্যক যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ইচ্ছা ব্যতীত আসমান ও যমীনের কোন কিছুই নড়াচড়া করেনা কিংবা স্থির হয়না এবং তাঁর রাজ্যের মধ্যে তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই সংঘটিত হয়না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা অস্তিত্বশীল এবং অস্তিত্বহীন সকল বস্ত্তর উপরই ক্ষমতাবান। আসমান ও যমীনে যত মাখলুক রয়েছে, তার সবগুলোর স্রষ্টাই একমাত্র আল্লাহ। তিনি ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই, তিনি ব্যতীত অন্য কোন রবও নেই।
ব্যাখ্যাঃ এখানে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) তাকদীরের প্রতি ঈমানের তৃতীয় এবং চতুর্থ স্তর বর্ণনা করেছেন।[1] তৃতীয় স্তরের প্রতি তিনি এই বলে ইঙ্গিত করেছেন যে, উহা হলো আল্লাহ তাআলার ঐ ইচ্ছা, যা অবশ্যই কার্যকর হয় এবং তাঁর ঐ সার্বভৌম ক্ষমতাকে বুঝায়, যা সকল বস্ত্তর উপর পরিব্যাপ্ত। আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা অবশ্যই বাস্তবায়ন হয়। তা কেউ প্রতিহত করতে পারেনা। আল্লাহ তাআলার সার্বভৌম ক্ষমতা বলতে সেই ক্ষমতাকে বুঝায়, যা অস্তিত্বশীল ও অস্তিত্বহীন সকল বস্ত্তর উপরই বিদ্যমান।
وَهُوَ الْإِيمَانُt তাকদীরের প্রতি ঈমান আনয়নের এই স্তরের অর্থ হলো এই বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তাআলা যা সৃষ্টি ও নির্ধারণ করতে চান, তাই সৃষ্টি ও নির্ধারণ হয়। আর যা তিনি সৃষ্টি ও নির্ধারণ করার ইচ্ছা করেন না, তা কখনো সৃষ্টি ও নির্ধারণ হয়না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ইচ্ছা ব্যতীত আসমান ও যমীনের কোন কিছুই নড়াচড়া করেনা কিংবা স্থির হয়নাঃ অর্থাৎ তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত উপরোক্ত বিষয়গুলোর কোন একটিও সংঘটিত হয়না।
তাঁর রাজ্যের মধ্যে তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই সংঘটিত হয়নাঃ অর্থাৎ তাঁর সৃষ্টিগত ও নির্ধারণগত ইচ্ছার বাইরে কোন কিছুই সংঘটিত হয়না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা অস্তিত্বশীল এবং অস্তিত্বহীন সকল বস্ত্তর উপরই ক্ষমতাবানঃ কেননা আল্লাহ তাআলা অনেক আয়াতে সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। অস্তিত্বশীল এবং অস্তিত্বহীন সকল বস্ত্তই এই ব্যাপকতার অধীন। অর্থাৎ তিনি অস্তিত্বশীলকে বিলীন করে দিতে এবং অস্তিত্বহীনকে অস্তিত্বে আনয়ন করতে সক্ষম।
فَمَا مِنْ مَخْلُوقٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ إِلَّا اللَّهُ خَالِقُهُ سُبْحَانَهُ আসমান ও যমীনে যত মাখলুক রয়েছে, তার সবগুলোর স্রষ্টাই একমাত্র আল্লাহঃ এই অংশের মধ্যে শাইখুল ইসলাম তাকদীরের চতুর্থ স্তরের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। এটি হচ্ছে সৃষ্টি করা এবং অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বে আনয়নের স্তর। আল্লাহ ছাড়া যা আছে, সবই মাখলুক। বান্দার ভাল-মন্দ সকল কর্মই আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং তিনি ব্যতীত আর কোন রবও নেই।
শাইখ যখন তাকদীরের প্রতি ঈমান আনয়নের স্তরগুলো উল্লেখ করে শেষ করলেন, তখন এর সাথে সম্পৃক্ত আরো কিছু মাসআলার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন।
প্রথম মাসআলাঃ তাকদীর ও শরীয়ত পরস্পর বিরোধী ও সাংঘর্ষিক নয়। তাই তাকদীর দ্বারা দলীল গ্রহণ করে শরীয়তের বিরোধিতা করা হারাম।
দ্বিতীয় মাসআলাঃ আল্লাহ তাআলার নির্ধারণে পাপাচার সংঘটিত হওয়া এবং পাপাচারের প্রতি আল্লাহর ঘৃণা থাকাও পরস্পর বিরোধী ও সাংঘর্ষিক নয়। আল্লাহ তাআলাই একমাত্র স্রষ্টা। তাই ঈমান, সৎ আমল, কুফরী ও পাপাচার সবই তাঁর সৃষ্টি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তিনি কুফরী ও পাপাচারকে ভালবাসেন। তিনি পাপাচারকে কখনো ভালবাসেন না; বরং ঘৃণা করেন।
তৃতীয় মাসআলাঃ আল্লাহ তাআলা বান্দাদের সকল কাজ-কর্ম সৃষ্টি ও নির্ধারণ করেন। বান্দারা তাদের ইচ্ছা ও এখতিয়ার দ্বারা সেই কাজ-কর্ম সম্পাদন করেন। এই দু’টি বিষয় পরস্পর বিরোধী ও সাংঘর্ষিক নয়।