عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ لَوْ أنَّ أهْلَ الْعِلْمِ صَانُوْا الْعِلْمَ وَ وَضَعُوْهُ عِنْدَ أهْلِهِ لَسَادُوْا بِهِ أهْلَ زَمَانِهِمْ وَلَكِنَّهُمْ بَذَلُوْهُ لِأَهْلِ الدُّنِيَا لِيَنَالُوْا بِهِ مِنْ دُنْيَاهُمْ فَهَانُوْا عَلَيْهِمْ سَمِعْتُ نَبِيَّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنْ جَعَلَ الْهُمُوْمَ هَمًّا وَاحِدًا هَمَّ آخِرَتِهِ كَفَاهُ اللهُ هَمَّ دُنْيَاهُ وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُوْمُ فِيْ أحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللهُ فِيْ أيِّ أوْدِيَتِهَا هَلَكَ.
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, যদি আলেমগণ ইলমের হিফাযত করতেন এবং উপযুক্ত ব্যক্তিদের হাতে তা সমর্পণ করতেন তবে নিশ্চয়ই তারা ইলমের বদৌলতে নিজেদের যামানার লোকদের নেতৃত্ব দিতেন। কিন্তু তারা তা দুনিয়াদারদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন, যাতে তারা ইলমের মাধ্যমে দুনিয়াদারদের নিকট হ’তে দুনিয়া উপার্জন করতে পারে। ফলে তারা দুনিয়াদারদের কাছে লাঞ্ছিত হয়ে পড়েছে। আমি তোমাদের নবীকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার সকল চিন্তাকে একই চিন্তায় পরিণত করবে আর তা হবে একমাত্র আখেরাতের চিন্তা, তাহ’লেআল্লাহ তার দুনিয়ার যাবতী চিন্তার জন্য যথেষ্ট হবেন। পক্ষান্তরে যাকে দুনিয়ার নানা উদ্দেশ্য নানা চিন্তা ব্যতিব্যস্ত করে রাখে, তার জন্য আল্লাহ কোন চিন্তা বা পরোয়া করেন না। সে দুনিয়ার যে কোন স্থানে ধ্বংস হ’তে পারে’ (ইবনু মাজাহ, তাহক্বীক্বে মিশকাত হা/২৬৩ সনদ হাসান)।
আলোচ্য হাদীছে দু’টি জিনিস সুস্পষ্ট হয়েছে। (১) যে সমস্ত আলেম তাদের সমস্ত কাজ একমাত্র পরকালের চিন্তায় করে তাদের দুনিয়ার যাবতীয় সমস্যার সমাধানের জন্য আল্লাহ যথেষ্ট। (২) যারা দুনিয়া উপার্জনের উদ্দেশ্যে বক্তব্য পেশ করে অথবা দ্বীন শিক্ষা দেয় কিংবা যে কোন ধর্মীয় কাজ করে। আল্লাহ তার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন না। কেননা সে দুনিয়ার যে কোন স্থানে ধ্বংস হ’তেপারে। এরাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ।
عَنْ زِيَادِ بْنِ حُدَيْرٍ قَالَ قَالَ لِيْ عُمَرُ هَلْ تَعْرِفُ مَا يَهْدِمُ الإسْلاَمَ قُلْتُ لاَ قَالَ يَهْدِمُهُ زَلَّةُ الْعَالِمِ وَجِدَالُ الْمُنَافِقِ بِالْكِتَابِ وَحُكْمُ الأئِمَّةِ الْمُضَلِّيْنَ.
তাবেঈ যিয়াদ ইবনু হুদাইর (রাঃ) বলেন, ওমর (রাঃ) আমাকে বলেছেন, তুমি কি জান, ইসলামকে কিসে ধ্বংস করে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, আলেমদের পদস্খলন, আল্লাহর কিতাব নিয়ে মুনাফিকের বাদ-প্রতিবাদ এবং নেতাদের শোষণ’ (দারেমী, মিশকাত হা/১৬৯, সনদ ছহীহ)।
অত্র হাদীছে ওমর (রাঃ) তিন শ্রেণীর লোককে তীব্র নিন্দা করেন। (১) আলেমদের পদস্খলন, ইসলাম ধ্বংস করে অর্থাৎ আলেম যখন ইসলামকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে, ধর্মের নামে দুনিয়া উপার্জন করে, না জেনে না শুনে ফৎওয়া প্রদান করে এবং শরী‘আত তদন্ত না করে বক্তব্য পেশ করে।
(২) আল্লাহর কিতাব নিয়ে বাদ-প্রতিবাদ করে অর্থাৎ যারা মুনাফিক্ব আলেম তারা কুরআনের অস্পষ্ট আয়াতগুলির অর্থ বের করার চেষ্টা করে এবং কুরআনের আয়াতে পরষ্পর বিরোধ প্রমাণের চেষ্টা করে। এ ধরনের মুনাফিক্ব আলেম হচ্ছে ইসলাম ধ্বংসের কারণ।
(৩) ভ্রষ্ট নেতার শাসন অর্থাৎ স্বৈরাচারী অত্যাচারী নেতা। যখন কুরআন এবং ছহীহ হাদীছ বিরোধী আমল করবে এবং অধীনস্থ লোককে কুরআন এবং ছহীহ হাদীছ বিরোধী আমল করতে বাধ্য করবে, তখন ইসলাম ধ্বংস হবে।
عَنْ ثَوْبَانَ مَوْلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ... وَإِنَّ مِمَّا أَتَخَوَّفُ عَلَى أُمَّتِى أَئِمَّةً مُضِلِّينَ وَسَتَعْبُدُ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِى الأَوْثَانَ وَسَتَلْحَقُ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِى بِالْمُشْرِكِيِنَ.
রাসূল (ছাঃ)-এর দাস ছাওবান (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ) বলেছেন, আমি সবচেয়ে যাদের বেশী ভয় করি, তারা হচ্ছে- (১) তারা ভ্রান্ত আলেম সমাজ (২) আর অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে (৩) আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক হিন্দু বা বিজাতীদের সাথে মিশে যাবে (ইবনু মাজাহ হা/৩৯৫২)।