উপদেশ ২৭. জান্নাত ও জাহান্নাম আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ১ টি

عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِى كَرِبَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِلشَّهِيْدِ عَنِ اللهِ خِصَالٌ يُغْفَرُ لَهُ فِى اَوَّلِ دَفْعَةٍ مِنْ دَمِهِ وَيُرَى مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنّةِ وَيُحَلّى حُلْيَةُ الْاِيْمَانِ وَيُزَوّجُ اِثْنَتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ زَوْجَةً مِنَ الْحُوْرِ الْعِيْنِ وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَيأمنُ مِن الْفَزْعِ الاكْبَرِ ويُوْضَعُ عَلى رَاْسِه تَاجٌ الوَقَارِ اليَاقُوْتَةِ مِنْهُ خيْرُ مِنَ الدّنْيَا وَمَافِيها ويُشفَّعُ فِى سَبْعِيْنَ اِنْسَانًا مِنْ اَهْلِ بَيْتِهِ.

মিক্বদাম ইবনে মা‘দীকারাব (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, শহীদদের জন্য আল্লাহর নিকট কয়েকটি বিশেষ অধিকার রয়েছে। ১. তার শরীর থেকে প্রথম রক্তের ফোঁটা ঝরতেই তাকে ক্ষমা করা হয়। ২. তাকে ঐ সময় তার জান্নাতের স্থান দেখানো হয় ৩. তাকে ঈমানের গয়না পরানো হয় ৪. আখিরাতে হুরদের মধ্য হ’তে ৭২ জন নারীর সাথে তার বিবাহ দেওয়া হবে ৫. কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করা হবে। ৬. জাহান্নামের শাস্তি থেকে নিরাপদে রাখা হবে। ৭. কিয়ামতের মাঠে তাকে মর্যাদার টুপি পরানো হবে যা দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম এবং ৮. তার পরিবারের ৭০ জনের ব্যাপারে সুপারিশ গ্রহণ করা হবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৯৪)। জান্নাতী সাধারণ মুমিন বান্দাগণের তুলনায় শহীদ জান্নাতীগণের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। জান্নাতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী স্ত্রী হবে ২জন আর সাধারণ স্ত্রী হবে ৭০জন।

عَنْ اَبِى اُمَامَةَ الْبَاهِلِى قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ أَتَانِى رَجُلاَنِ فَأَخَذَا بِضَبْعَىَّ فَأَتَيَا بِى جَبَلاً وَعْرًا فَقَالاَ: اِصْعَدْ فَقُلْتُ: إِنِّى لاَ أُطِيقُهُ فَقَالاَ : إِنَّا سَنُسَهِّلُهُ لَكَ فَصَعِدْتُ حَتَّى إِذَا كُنْتُ فِى سَوَاءِ الْجَبَلِ إِذَا أَنَا بَأَصْوَاتٍ شَدِيدَةٍ فَقُلْتُ : مَا هَذِهِ الأَصْوَاتُ قَالُوا : هَذَا عُوَاءُ أَهْلِ النَّارِ ، ثُمَّ انْطُلِقَا بِى فَإِذَا أَنَا بِقَوْمٍ مُعَلَّقِينَ بِعَرَاقِيبِهِمْ مُشَقَّقَةٌ أَشْدَاقُهُمْ تَسِيلُ أَشْدَاقُهُمْ دَمًا قَالَ قُلْتُ : مَنْ هَؤُلاَءِ قَالَ : هَؤُلاَءِ الَّذِينَ يُفْطِرُونَ قَبْلَ تَحِلَّةِ صَوْمِهِمْ فَقَالَ : خَابَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَقَالَ سُلَيْمَانُ : مَا أَدْرِي أَسَمِعَهُ أَبُو أُمَامَةَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمْ شَيْءٌ مِنْ رَأْيِهِ؟ ثُمَّ انْطَلَقَ ، فَإِذَا بِقَوْمٍ أَشَدَّ شَيْءٍ انْتِفَاخًا وَأَنْتَنِهِ رِيحًا، وَأَسْوَئِهِ مَنْظَرًا ، فَقُلْتُ: مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ فَقَالَ: هَؤُلاَءِ قَتْلَى الْكُفَّارِ، ثُمَّ انْطَلَقَ بِي، فَإِذَا بِقَوْمٍ أَشَدَّ شَيْءٍ انْتِفَاخًا، وَأَنْتَنِهِ رِيحًا، كَأَنَّ رِيحَهُمُ الْمَرَاحِيضُ، قُلْتُ : مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ : هَؤُلاَءِ الزَّانُونَ وَالزَّوَانِي، ثُمَّ انْطَلَقَ بِي، فَإِذَا أَنَا بِنِسَاءٍ تَنْهَشُ ثُدِيَّهُنَّ الْحَيَّاتُ، قُلْتُ: مَا بَالُ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ : هَؤُلاَءِ يَمْنَعْنَ أَوْلاَدَهُنَّ أَلْبَانَهُنَّ ، ثُمَّ انْطَلَقَ بِي، فَإِذَا أَنَا بِالْغِلْمَانِ يَلْعَبُونَ بَيْنَ نَهْرَيْنِ، قُلْتُ: مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ: هَؤُلاَءِ ذَرَارِي الْمُؤْمِنِينَ، ثُمَّ شَرَفَ شَرَفًا ، فَإِذَا أَنَا بِنَفَرٍ ثَلاَثَةٍ يَشْرَبُونَ مِنْ خَمْرٍ لَهُمْ ، قُلْتُ: مَنْ هَؤُلاَءِ؟ قَالَ: هَؤُلاَءِ جَعْفَرٌ، وَزِيدٌ، وَابْنُ رَوَاحَةَ، ثُمَّ شَرَفَنِي شَرَفًا آخَرَ، فَإِذَا أَنَا بِنَفَرٍ ثَلاَثَةٍ، قُلْتُ : مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ : هَذَا إِبْرَاهِيمُ ، وَمُوسَى، وَعِيسَى، وَهُمْ يَنْظُرُوْنَكَ -

আবু উমামা বাহেলী (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -কে বলতে শুনেছি, তিনি বলছিলেন, আমার নিকট দু’জন ব্যক্তি আসল তারা দু’জন আমার দু’বাহুর মাঝামাঝি ধরে আমাকে এক ভয়াবহ কঠিন পাহাড়ের নিকট নিয়ে আসল। তারা দু’জন বলল, আপনি এ পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমি এ পাহাড়ে উঠতে সক্ষম নই। তারা দু’জন বলল, আমরা আপনাকে পাহাড়ে উঠার কাজটি সহজ করে দিব। আমি উঠলাম, এমনকি পাহাড়ের উপরে চলে আসলাম। হঠাৎ আমি খুব কঠিন আওয়াজ শুনলাম। আমি বললাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বলল, এটা হচ্ছে জাহান্নামীদের বিলাপ-আর্তনাদ ও কান্না। তারপর তারা আমাকে নিয়ে যেতে লাগল। হঠাৎ আমি দেখি একদল লোককে পায়ের সাথে বেঁধে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয়েছে। তাদের চোয়াল ফেটে দীর্ণ বিদীর্ণ হয়ে আছে এবং চোয়াল হ’তে রক্ত ঝরছে। নবী করীম(সা.) বলেন, আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা ঐ সব লোক যারা তাদের ছিয়াম শেষ হওয়ার পূর্বেই ছিয়াম ছেড়ে দিত। ছিয়াম অবস্থায় মিথ্যা কথা বলত। তখন তিনি বললেন, ইহুদী নাছারারা ধ্বংস হোক। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। হঠাৎ দেখি কিছু লোক খুব ফুলে ওঠে মোটা হয়ে আছে। আর খুব দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আছে। তাদের দৃশ্য খুব কাল বিদঘুটে। আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা ঐ সব লোক যারা কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। হঠাৎ দেখি কিছু লোক ফুলে মোটা হয়ে আছে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আছে। এত দুর্গন্ধ যেন তারা শৌচাগার। আমি বললাম, এরা কারা? তারা দু‘জন বলল, এরা হচ্ছে ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণী। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল দেখি কিছু মহিলা, প্রচুর সাপ তাদের স্তনগুলিতে বার বার ছোবল মারছে। আমি বললাম এদের কি হয়েছে? এদের এ অবস্থা কেন? তারা বলল, এরা ঐ সব মহিলা, যারা বাচ্চাদের দুধ পান করাতো না। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। হঠাৎ দেখি বেশকিছু ছেলে তারা দু নদীর মাঝে খেলা করছে। আমি বললাম, এ সমস্ত ছেলে কে? তারা বলল এগুলি মুমিনদের শিশু। তারপর তারা আমাকে আর একটি উঁচু পাহাড়ে নিয়ে গেল। হঠাৎ দেখি তিনজন মানুষ তারা অতীব মিষ্টি পরিস্কার শরাব পান করছে। আমি বললাম, এ লোকগুলি কে? তারা বলল, এ লোকগুলি হচ্ছে জাফর, যায়েদ ও ইবনে রাওহা (এ তিনজন লোক মুতার যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন)। তারপর তারা আমাকে অন্য একটি উঁচু পাহাড়ে নিয়ে গেল, দেখি তিনজন লোক। আমি বললাম, এ লোকগুলি কে? তারা বলল, এ লোকগুলি হচ্ছেন ইবরাহীম, মূসা ও ঈসা (আঃ) তারা আপনার অপেক্ষায় রয়েছেন (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৩০)