کان صلی الله علیه وسلم یبسط کفه الیسری علی رکبته الیسری ویقبض أصابع کفه الیمنی کلها، ويشير بإصبعه التي تلي الإبهام إلى القبلة ويرمى ببصره إليها
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাম হাতের তালু বাম হাঁটুর উপর বিছিয়ে দিতেন, আর ডান হাতের সবগুলো অঙ্গুলি মুষ্টিবদ্ধ করে তর্জনী দ্বারা কিবলার দিকে ইঙ্গিত করতেন এবং এর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেন।[1]
کان أشار بإصبعه وضع إبهامه علی صبعه الوسطی
অঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করা কালে কখনও কখনও তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলিকে মধ্যমার উপর রাখতেন।[2]
وتارة كان يحلق بهما حلقة، وکان رفع إصبعه یحرکها يدعو بها ويقول : لهی أشد علی الشیطان من الحديد يعنى السبابة
আবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও উক্ত অঙ্গুলিদ্বয় দ্বারা গোলাকৃতি করতেন এবং অঙ্গুলি উঠিয়ে নাড়ানো পূর্বক দুআ করতেন[3] এবং বলতেন। এটি (অর্থাৎ তর্জনী) শয়তানের বিরুদ্ধে লোহা অপেক্ষা কঠিন।[4] নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছাহাবাগণ (এটা পরিত্যাগের উপরে) একে অপরকে জবাবদিহি করতেন। অর্থাৎ দু'আতে অঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করার বেলায় তারা এমনটি করতেন।[5] তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উভয় তাশাহহুদেই এই আমল করতেন[6] তিনি এক ব্যক্তিকে দুই অঙ্গুলি দ্বারা দুআ করতে দেখে বললেনঃ একটি দিয়ে কর, একটি দিয়ে কর এবং তর্জনী দ্বারা ইঙ্গিত করলেন।[7]
[2] মুসলিম ও আবু উওয়ানা।
[3] আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনুল জারুদ, “আল-মুনতাকা”তে (২০৮) ও ইবনু খুযাইমাহ (১/৮৬/১-২) ইবনু হিব্বান স্বীয় ‘ছহীহ’ গ্রন্থে (৪৮৫) ছহীহ সনদে। ইবনুল মুলাক্কিন একে ছহীহ বলেছেন (২৮/২) অঙ্গুলি নাড়ানোর হাদীছের পক্ষে ইবনু আব্দীতে সাক্ষ্যমূলক বর্ণনা বিদ্যমান রয়েছে (২৮৭/১)। উছমান বিন মুকসিম নামক বর্ণনাকারী সম্পর্কে বলেন- ضعيف يكتب حديثه এমন পর্যায়ের যয়ীফ যার হাদীছ লিখা যাবে। হাদীছের শব্দ يدعوبها অর্থ- “এর মাধ্যমে দুআ করতেন” এর মর্ম সম্পর্কে ইমাম ত্বাহাবী বলেন- এতে এ কথার প্রমাণ রয়েছে যে, এটি ছালাতের শেষাংশে ছিল। আমি বলতে চাইঃ এতে প্রমাণিত হচ্ছে— সুন্নাত হলো সালাম ফিরানো পর্যন্ত আঙ্গুলের ইঙ্গিত ও দুআ চালু রাখা, কেননা দু'আর ক্ষেত্ৰ সালামের পূর্বে, এটি ইমাম মালিক ও অন্যান্যদের গৃহীত মতও বটে। ইমাম আহমাদকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ ছালাতে কি মুছল্লী ব্যক্তি স্বীয় অঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করবে? প্রতি উত্তরে তিনি বলেনঃ হ্যাঁ কঠিনভাবে, এটি ইবনু হানী স্বীয় ‘মাসায়িল আনিল ইমাম আহমাদ’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ৮০)-তে উল্লেখ করেন। আমি বলতে চাইঃ এথেকে প্রমাণিত হয় যে, তাশাহহুদে আঙ্গুলি নাড়ানো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সুসাব্যস্ত সুন্নাত। যার উপর আহমাদ ও অন্যান্য হাদীছের ইমামগণ আমল করেছেন। অতএব যে সব লোকেরা এ ধারণা পোষণ করেন যে, এটি ছালাতের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অনৰ্থক কাজ এবং এ কারণে সাব্যস্ত সুন্নত জানা সত্ত্বেও অঙ্গুলি নাড়ায় না- উপরন্তু আরবী বাকভঙ্গির বিপরীত ব্যাখ্যার অপচেষ্টা চালায় যা ইমামদের বুঝেরও বিপরীত, তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে। আরও আশ্চর্যের বিষয় এই যে, তাদের কেউ কেউ এই মাসআলাটি ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে হাদীছ বিরোধী কথায় ইমামের ছাফাই গায় এই যুক্তিতে যে, ইমামের ভুল ধরা তাকে দোষারোপ করা ও অসম্মান করা, কিন্তু এক্ষেত্রে তারা সেকথা ভুলে গিয়ে এই সুসাব্যস্ত হাদীছ পরিত্যাগ করে এবং এর উপর আমলকারীদেরকে বিদ্রুপ মশকারী করে। অথচ সে জানুক আর নাই জানুক তার এ বিদ্রুপ ঐসব ইমামদেরকেও জড়াচ্ছে যাদের বেলায় তার অভ্যাস হল বাত্বিল দ্বারা হলেও তাদের ছাফাই গাওয়া। বস্তুতঃ এক্ষেত্রে তারা সুন্নাহ সম্মত কথাই বলেছেন। বরং তার এই বিদ্রুপ স্বয়ং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর্যন্ত গড়াচ্ছে কেননা তিনিই তো আমাদের নিকট এটি নিয়ে এসেছেন। অতএব এটিকে কটাক্ষ করা মানে তাঁকে কটাক্ষ করারই নামান্তর - فماجزاء من يفعل ذلك منكم الا অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এমনটি করে তাদের ... ছাড়া আর কী প্রতিদান হতে পারে। আর ইঙ্গিত করার পরেই অঙ্গুলি নামিয়ে ফেলা অথবা ‘লা’ বলে উঠানো ও ‘ইল্লাল্লাহ’ বলে নামানো হাদীছে এগুলোর কোনই প্রমাণ নেই, বরং এ হাদীছের বক্তব্য অনুযায়ী তা হাদীছ বিরোধী কাজ। এমনিভাবে যে হাদীছে আছে إنه كان لا يحركها যে, তিনি অঙ্গুলি নাড়াতেন না, এ হাদীছ সনদের দিক থেকে সাব্যস্ত নয়। যেমনটি জঈফ আবু দাউদে (১৭৫) আমি তদন্ত সাপেক্ষে সাব্যস্ত করেছি। আর যদি সাব্যস্ত ধরেও নেয়া হয়। তদুপরি এটি হচ্ছে না বাচক, আর হ্যাঁ বাচক না বাচকের উপর প্রাধান্যযোগ্য- যা আলিম সমাজে জানা-শুনা বিষয়, অতএব অস্বীকারকারীদের কোন প্রমাণ অবশিষ্ট থাকল না।
[4] আহমাদ, বাযযার, আবু জাফর, বখতুরী “আল-আমালী’ গ্রন্থে (৬০/১) ত্বাবারানী ‘আদদু'আ' গ্রন্থে (কাফ ৭৩/১) আব্দুল গানী মাকদিসী 'আসসুন্নান' গ্রন্থে (১২/২) হাসান সনদে, রুইয়ানী তার মুসনাদ গ্রন্থে (২৪৯/২) ও বাইহাকী।
[5] ইবনু আবী শাইবাহ (২/১২৩/২) হাসান সনদে।
[6] নাসাঈ ও বাইহাকী ছহীহ সনদে।
[7] ইবনু আবী শাইবাহ (১২/৪০/১) ও (২/১২৩/২), নাসাঈ, হাকিম এটাকে ছহীহ প্রমাণ করেছেন এবং যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন এবং এর সাক্ষ্যমূলক বর্ণনা ইবনু আবী শাইবাহর নিকট রয়েছে।