নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
السجود على الأرض والحصير মাটি ও চাটাই এর উপর সাজদাহ করা

و کان یسجد علی الارض کثیرا

তিনি মাটির উপরেই বেশীর ভাগ সাজদা করতেন।[1]

كان أصحابه يصلون معه في شدة الحر، فإذا لم يستطع أحدهم أن بمکن جبهته من الارض، بسط ثوبه فسجد علیه

ছাহাবাগণ কঠিন গরমের ভিতর তার সাথে ছালাত আদায় করা কালে যিনি স্বীয় কপাল মাটিতে ঠেকাতে পারতেন না। তিনি তার কাপড় বিছিয়ে দিয়ে তার উপর সাজদা করতেন।[2]

আর তিনি এ কথা বলতেনঃ

وجعلت الأرض کلها لی ولأمتی مسجدا وطهورا، فاینما أدرکت رجلا من امتی الصلاة، فعنده مسجده و عنده طهوره، وکان قبلي يعظمون ذلك، إنما كانوا يصلون في كنائسهم وبيعهم

আমার ও আমার উম্মতের জন্য গোটা পৃথিবীকে মসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের উপযোগী করে দেয়া হয়েছে। অতএব যেখানেই কোন লোকের ছালাত উপস্থিত হবে সেখানেই তার জন্য মসজিদ তথা ছালাতের স্থান এবং পবিত্ৰতা অর্জনের উপাদান রয়েছে। আমার পূর্বেকার লোকেদেরকে এ ব্যাপারে বিরাট অসুবিধা পোহাতে হত, তারা কেবল গীর্জা ও উপাসনালয়গুলোতেই ছালাত আদায় করতে পারত।[3]

কখনো তিনি ভিজা মাটি ও পানির উপর সাজদাহ করতেন, এ ঘটনাই ঘটেছিল একুশ রমযানের রাত্রের ফজরে। সে রাত্রে আসমান থেকে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মসজিদের ছাদ (চাল) বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়েছিল, আর তা ছিল

খেজুরের ডাল দ্বারা নির্মিত। এ কারণেই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পানি ও ভিজা মাটির (কাদার) উপর সাজদাহ করেন। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ

فأبصرت عيناي رسول الله صلى الله عليه وسلم وعلى جبهته وأنفه أثر الماء والطين

আমার চক্ষুদ্বয় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এবং তাঁর কপাল ও নাককে পানি ও মাটির চিহ্ন যুক্ত অবস্থায় দেখেছে।[4]

وکان يصلي على الخمرة أحیانا، وعلی الحصیر احیانا، وصلی علیه مرة وقد أسود من طول ما لبس

তিনি কখনো কাপড়ের টুকরোর[5] উপর আবার কখনো, চাটাই[6] এর উপর ছালাত আদায় করতেন। কখনো তিনি এমন চাটাই এর উপরেও ছালাত পড়েছেন যা দীর্ঘকাল ব্যবহারের কারণে কাল রূপ ধারণ করেছে।[7]

[1] কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মসজিদ চাটাই বা অন্য কিছু দ্বারা কার্পেটিং করা ছিল না। এ বিষয়ে প্রমাণ বহনকারী অনেক হাদীছ রয়েছে। তন্মধ্যে পরবর্তী হাদীছ এবং আবু সাঈদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর আসন্ন হাদীছ প্ৰণিধান যোগ্য।

[2] মুসলিম ও আবু উওয়ানাহ।

[3] আহমাদ, সাররাজ ও বাইহাকী, ছহীহ সনদে।

[4] বুখারী ও মুসলিম।

[5] বুখারী ও মুসলিম। হাদীছে। الخمرة শব্দের অর্থ হচ্ছে তাল জাতীয় বৃক্ষের পাতা দ্বারা তৈরী ছোট চাটাই যার উপর সাজদাকালে কপাল রাখা যায়। خمرة এই পরিমাণ ব্যতীত অন্য কিছুর উপর প্রয়োগ হয়না। ‘আন নিহায়াহ’।

[6] মুসলিম ও আবু উওয়ানা।

[7] বুখারী ও মুসলিম। অত্র হাদীছে একথার প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে যে, কোন বস্তুর উপর বসাকে এক পর্যায়ের পরিধানও বলা যায়। অতএব রেশমী কাপড়ের উপর বসা হারাম প্রমাণিত হল যেহেতু বুখারী মুসলিমসহ অন্যান্য কিতাবে এটা পরিধান করা হারাম সাব্যস্ত হয়েছে। বরং বুখারী-মুসলিমে স্পষ্ট ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাই বড় আলিমদের ভিতর থেকে যিনি একে বৈধ বলেছেন তাঁর কথায় ধোঁকা খাবেন না।