নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
جمعه ﷺ بين النظائر وغيرها فى الركعة নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক এক রাক'আতে সমাৰ্থবোধক ও অন্য সূরার সংযুক্তি করণ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমাৰ্থবোধক[1] লম্বা (মুফাসসাল) সূরাগুলো একত্রিত করতেন। যেমন তিনি এক রাকাআতে সূরা “আর-রহমান” (৫৫ : ৭৮)[2] ও “আন-নজম” (৫৩ : ৬২) পড়তেন এবং ইকতারাবাত (৫৪ : ৫৫) ও “আলহা-ক্কাহ” (৬৯ : ৫২) অপর রাকাআতে পড়তেন। সূরা “আত্-তুর” (৫২ : ৪৯) ও “আয-যারিয়াত” (৫১ : ৬০) এক রাকাআতে পড়তেন এবং সূরা “ইযা অকআত” (৫৬ : ৯৬) ও “নূন” (৬৮ : ৫২) অপর রাকাআতে পড়তেন। সূরা “সাআলা সায়িল” (৭০ : ৪৪) ও “আন-নাযিআত” (৭৯ : ৪৬) এক রাকাআতে পড়তেন এবং সূরা “ওয়াইলুললিল মুতাফফিফীন” (৮৩ : ৩৬) ও “আবাসা” (৮০ : ৪২) অপর রাকাআতে পড়তেন। সূরা “মুদ্দাসসির” (৭৪ : ৫৬) ও “আল-মুযযাম্মিল” (৭৩ : ২০) এক রাকাআতে পড়তেন এবং সূরা “হাল আতা” অর্থাৎ সূরা ইনসান (৭৬ : ৩১) ও “লা-উকসিমু বিইয়াউমিল কিয়ামাহ” (৭৫ : ৪০) অপর রাকাআতে পড়তেন। আবার “আম্মা ইয়াতাসা-আলুন” (৭৮ : ৪০) ও “আল মুরসালা-ত” (৭৭ : ৫০) এক রাকাআতে পড়তেন এবং “আদ্দুখান” (৪৪ : ৫৯) ও “ইজাশ শামসু কুভভীরাত” (৮১ : ২৯) অপর রাকাআতে পড়তেন।[3]

কখনো তিনি (السبع الطوال) সাতটি লম্বা সূরা থেকে একাধিক সূরা একত্রিত করতেন। যেমন সূরা “বাকারা”, “নিসা” ও “আলে-ইমরান”-কে রাত্রের নফল ছালাতের এক রাকাআতে পাঠ করতেন, যার বর্ণনা অচিরেই আসছে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ افضل الصلاة طول القيام অর্থঃ সর্বোত্তম ছালাত হচ্ছে দীর্ঘ কিয়াম বিশিষ্ট ছালাত।[4]

তিনি যখন أَلَيْسَ ذَٰلِكَ بِقَادِرٍ عَلَىٰ أَنْ يُحْيِيَ الْمَوْتَىٰ অর্থাৎ এই আল্লাহ্‌ কি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম নন? এই আয়াত পড়তেন তখন বলতেন- سبحانك فبلى অর্থঃ আমি তোমার পবিত্রতা জ্ঞান পূর্বক বলছি, হ্যাঁ। আর যখন পড়তেন- سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى অৰ্থঃ তুমি স্বীয় প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা জ্ঞাপন করা তখন বলতেনঃ سبحان ربى الأعلى অর্থাৎ- হে আমার মহান প্রতিপালক! আমি তোমার পবিত্ৰতা জ্ঞাপন করছি।[5]

[1] তথা অর্থগতভাবে এক অপরের সাদৃশ্যপূর্ণ। যেমন উপদেশ বিধান ও কাহিনী ইত্যাদি। “আল মুফাসসিল” দীর্ঘ সূরার শেষ সীমা সবার ঐকমত্যে কুরআনের শেষ পর্যন্ত এবং এর শুরু সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতানুযায়ী সূরা “কাফ” থেকে।

[2] প্রথম সংখ্যাটি সূরার ক্রমিক নং এবং দ্বিতীয় সংখ্যাটি হচ্ছে- আয়াতের সংখ্যা। প্রথম সংখ্যাটি আমাদের জন্য স্পষ্ট করছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ সূরাগুলো একত্রে পাঠকালে কুরআনে এগুলোর যে ধারাবাহিকতা রয়েছে সেদিকে নযর দেননি। সুতরাং এর দ্বারা ধারাবাহিকতা ক্ষুন্ন করার বৈধতা প্রমাণিত হল। “রাত্রিকালীন (নফল) ছালাতে কির'আতের ব্যাপারও তাই যা অচিরেই আসছে। তবে ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করাই উত্তম।

[3] বুখারী ও মুসলিম।

[4] মুসলিম ও ত্বাহাবী।

[5] ছহীহ সনদে আবু দাউদ ও বাইহাকী। এ নিয়মটি উন্মুক্ত তাই ছালাতের ভিতর ও বাহির উভয় অবস্থা এবং ফরয ও নফল উভয় ছালাতে এর অন্তর্ভুক্ত হবে। ইবনু আবী শাইবাহ (২/১৩২/২) আবু মূসা আশয়ারী ও মুগীরাহ থেকে বর্ণনা করেন যে, তারা উভয়ে এগুলো ফরয ছালাতে বলতেন। পক্ষান্তরে উমার ও আলী (রাঃ) থেকে উন্মুক্তরূপে তা উদ্ধৃত হয়েছে।