একবার আমি আবু রীশাহ'র একটি কবিতা পড়লাম আর সাথে সাথে তার কথার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গেলাম। আমি কবিতাটি মুখস্থ করলাম এবং আবু রীশাহ’র ঢং নিয়ে গবেষণা করলাম। এর অল্প কিছু দিন পরেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবৃত্তি আনুষ্ঠানে আমাকে কবিতা উপস্থাপন করতে হয়েছিল।
তখন আমি আবু রীশারীর স্টাইলকে অনুকরণ করতে চেষ্টা করলাম- কিন্তু একমাত্র সমস্যা ছিল যে, আমি আবু রীশাহ নই। একারণেই যেসব কথা বেরিয়ে এলো তা ছিল অসংলগ্ন এবং ব্যাপক অর্থে কবিতা ছিল বাসি, নীরস ও স্বাদহীন। সেদিনের পর থেকে আমি অন্য লোকের স্টাইলকে অনুকরণ করা বন্ধ করে দিলাম। আমি যা ভাবতাম সে অনুসারেই আমি লিখতে শুরু করলাম আর এভাবেই আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আমার কাব্যে আমার ব্যক্তিত্বকে সঞ্চারিত করতে পারলাম।
একবার আমি জেদ্দাতে এক ইমামের পিছনে সালাত পড়লাম। তিনিও অনুরূপভাবে এক বিখ্যাত আবৃত্তি কারকের অনুকরণ করতে চেষ্টা করছিলেন, তবুও তিনি কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করার ধারে কাছেও ছিলেন না। তার কণ্ঠস্বর বিখ্যাত আবৃত্তিকারের কণ্ঠস্বরের চেয়ে খুবই ভিন্ন রকমের ছিল এবং তার অনুকরণের চেষ্টাকে দৃষ্টিকটুভাবে বা নিলজ্জভাবে কৃত্রিম মনে হয়েছিল। তার চেষ্টাকে সহ্য করা আমার পক্ষে সহজ ছিল না; কারণ, বরাবরই আমি অনুভব করছিলাম যে, সাদৃশ্যে পৌছার জন্য সে কত কঠোর প্রচেষ্টা করছিল [অর্থাৎ সেই বিখ্যাত আবৃত্তিকারের মত (সদৃশ) করে আবৃত্তি করার জন্য সে প্রাণপণ চেষ্টা করছিল তা আমি বুঝতে পারছিলাম এবং আমার কাছে তা হাস্যকর ও বিরক্তিকর লাগছিল।] আমি বুঝতে পারলাম যে, আল্লাহ প্রত্যেক লোককে বিশেষ গুণাবলি, বৈশিষ্ট্য ও মেধা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
“তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমি বিধান ও স্পষ্ট (বা সরল) পথ নির্ধারণ করে দিয়েছি।” (৫-সূরা মায়িদাঃ আয়াত-৪৮)
আপনি যদি কোন কিছুতে চমৎকার হতে চান তবে এমন এক পদ্ধতির অনুসরণ করুন যা আপনার প্রকৃতি ও ক্ষমতা (বা দক্ষতা) উভয়ের সাথে খাপ খায়।
قُلْ كُلٌّ يَعْمَلُ عَلَىٰ شَاكِلَتِهِ
(হে মুহাম্মাদ!) আপনি বলে দিন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ প্রকৃতি অনুসারে কাজ করে।” (১৭-সূরা বনী ইসরাঈলঃ আয়াত-৮৪)