“আল্লাহ অবশ্যই মুসলামনদের উপর তখন সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছেন যখন তারা গাছের নিচে আপনার নিকট আনুগত্যের অঙ্গীকার করছিল। (এ বাইয়াতের) ফলে তাদের অন্তরে যা ছিল তা আল্লাহ্ (প্রমাণসহ) জেনে নিলেন। তাই তিনি তাদের উপর শান্তি অবতীর্ণ করলেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয় পুরস্কার দিলেন।” (৪৮-সূরা আল ফাত্হঃ আয়াত-১৮)

এ আয়াত মু’মিনদের সর্বোচ্চ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা বুঝায়।

সর্বাপেক্ষা মূল্যবান যে জিনিস আপনাকে অর্জন করতে হবে তাহলো আপনার প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্ট হওয়া। প্রথম মুসলিম জাতির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টির কথা এ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য আয়াতে তিনি (আল্লাহ) তাদের প্রতি ক্ষমার কথা উল্লেখ করেন-

“যাতে আল্লাহ তোমার আগে-পিছের সব পাপ ক্ষমা করে দেন।” (৪২-সূরা আশ শুরাঃ আয়াত-২)

“আল্লাহ্ অবশ্যই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে, মুহাজিরদেরকে এবং আনসারদেরকে

ক্ষমা করে দিয়েছেন।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-১১৭)

মক্কা থেকে হিজরত করে যেসব মুসলমান মদীনায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়েছিলেন তাদেরকে মুহাজির আর মদীনার যে সব মুসলমান মুহাজিরদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন তাদেরকে আনসার বলা হয়।

“আল্লাহ্ আপনাকে (হে মুহাম্মাদ!) ক্ষমা করুন। আপনি কেন তাদেরকে অব্যাহতি দিলেন?” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৪৩)

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারা গাছের নিচে তাদের জীবন উৎসর্গ করার অঙ্গীকার করেছিলেন। কেন? তাদের শাহাদাতের মাধ্যমেই দ্বীন বেড়ে উঠেছিল ও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল।

মহান আল্লাহ জানতেন যে, তাদের অন্তরে উচ্চস্তরের ঈমান ছিল। তারা প্রচেষ্টা করেছেন, না খেয়ে থেকেছেন এবং অত্যাচারিত হয়েছেন কিন্তু তারা যা গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন তা হলো আল্লাহ তাদের প্রতি রাজি-খুশি হয়েছেন কি-না। তারা তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, তাদের সম্পদ ত্যাগ করে ও তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে মরু ভ্রমণের তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে ভিন দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন, কিন্তু তারা শুধুমাত্র আল্লাহকে এবং তাদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্ট হওয়াকে পাইতে চেয়েছিলেন বা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চেয়েছিলেন। ইসলামের এসব রক্ষকদের পুরস্কার কি উট, ছাগল বা টাকা-পয়সা ছিল? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অন্তরকে শান্তি করার ক্ষমতা এসব জিনিসের ছিল? কখনও নয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি তার ক্ষমা ও তার চিরকালীন পুরস্কারই তাদের অন্তরকে শান্ত করেছিল।

“আর তারা যে ধৈর্য ধরেছিলেন এজন্য তাদের পুরস্কার হবে জান্নাত ও রেশমী পোশাক। সেখানে তারা সুউচ্চ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে; তথায় তারা সূর্যের অতি উষ্ণতা ও (চন্দ্রের) অতিশয় শীতলতা দেখবে না (যেহেতু জান্নাতে চন্দ্র-সূর্য থাকবে না)। (সেখানে বৃক্ষের) ছায়া তাদের নিকটেই থাকবে এবং এর ফলমূল সম্পূর্ণরূপে (তাদের) আয়ত্বাধীন করা হবে। আর তাদেরকে (পানিয়) পরিবেশন করা হবে রূপার পানপাত্রে এবং ঝকঝকে কাঁচের পেয়ালায় করে। রূপার মতো ঝকঝকে কাচের পাত্রগুলোকে তারা (পরিবেশন কারীরা) যথাযথভাবে (পানিয় দ্বারা) পরিপূর্ণ করবে।” (৭৬-সূরা দাহর বা ইনসানঃ আয়াত-১২-১৬)