শীতল, বিশুদ্ধ পানির জন্য যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয় না, সে অট্টালিকা ও জমকালো গাড়ির জন্যও তার প্রতি কৃতজ্ঞ হবে না। গরম রুটি (টাটকা খাবার) খেয়ে যে কৃতজ্ঞ হয় না সে হঠাৎ করে দামী খাবারে ধন্য হলেও কৃতজ্ঞ হবে না; কেননা, অকৃতজ্ঞ কম ও বেশিকে একই রকম দেখে। আমাদের পূর্বে বহু লোকই আল্লাহর সাথে বাধ্যবাধকতাপূর্ণ অঙ্গীকার করেছে যে, যদি আল্লাহ তাদেরকে নেয়ামত দান করেন, তবে এর বদলে তারা কৃতজ্ঞ হবে ও দান-খয়রাত করবে।
“আর তাদের (মধ্য থেকে) কেউ কেউ আল্লাহর সাথে এ অঙ্গীকার করেছিল যে, যদি তিনি নিজ অনুগ্রহ থেকে আমাদেরকে কিছু দান করেন তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই সদকা দিব ও অতি অবশ্যই সংকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হব। যখন তিনি তাদেরকে নিজ অনুগ্রহ থেকে কিছু দান করলেন, তখন তারা সে বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিরূপভাবে মুখ ফিরিয়ে নিল।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৭৫-৭৬)
প্রতিদিনই আমরা এ ধরনের লোক দেখি, যারা মানসিকভাবে দুঃখিত, অন্তঃসারশূন্য ও তাদের প্রভুর প্রতি ত্যাক্ত-বিরক্ত আর তা এ কারণে যে, তিনি তাদেরকে আরো বেশি দান করেননি। তারা সুস্থ অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও এবং তাদের প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাবার সত্ত্বেও তারা এ রকমটা ভাবে। তাদের যে সব মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস আছে তার সবটা উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। তারা এসব জিনিসের জন্য কৃতজ্ঞও নয় এবং তাদের যে অবসর সময় আছে তার জন্যও কৃতজ্ঞ নয়। যদি তাদেরকে প্রাসাদ বা অট্টালিকা দান করা হতো তাহলে কি ঘটনা ঘটত! আসলে তারা তাদের প্রভুর পথ থেকে এমনকি আরো বেশি বিচ্যুত হয়ে যেত এবং তারা আরো বেশি ঔদ্ধত্য ও অবজ্ঞা প্রকাশ করত।
যে খালি পায়ে হাটে সে বলে, “আমার প্রভুর প্রতি আমি তখন কৃতজ্ঞ হব, যখন তিনি আমাকে জুতা দিয়ে (দানে) ধন্য করবেন”। অথচ জুতাওয়ালা একটি দামী গাড়ি পাওয়া পর্যন্ত তার কৃতজ্ঞ হওয়াকে বিলম্বিত করে। আমরা কল্যাণকে নগদে গ্রহণ করি আর বাকিতে কৃতজ্ঞ হই। আল্লাহর কাছ থেকে আমাদের আশা অশেষ। অথচ তার আদেশ পালনে আমরা ধীর ও অলস।