মানুষের পরকালীন কল্যাণ নির্ভর করে কিভাবে সে এ জীবনে নিজের সাথে আচরণ করে তার উপর। এ জীবন ও পরবর্তী জীবনের মাঝে যে সম্পর্ক তা মনে রাখা প্রত্যেক মানুষের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়। কেননা, কেউ কেউ ভুলক্রমে ভেবে নিয়েছে যে, একমাত্র এ পৃথিবীই সব (পরকাল বলতে কিছু নেই)। তারা সম্পদ জমা করে এবং এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের প্রতি আসক্ত হয়ে তাদের বুকের ভিতর অপূর্ণ রাখে এবং তা ভুলে গিয়ে মারা যায়।
মাঝে মাঝে আমি এ পৃথিবীতে আমাদের দীর্ঘকালীন আশা-আকাঙ্ক্ষা ও এমন জীবনের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রত্যাশাতে বিস্ময়বোধ করি যে, জীবনে মানুষ যে কোন মুহুর্তে মারা যেতে পারে।
وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ
“কেউ জানে না সে আগামীকাল কী উপার্জন করবে আর কেউ জানে না সে কোথায় মরবে।” (৩১-সূরা লোকুমানঃ আয়াত-৩৪)
নিজেকে এ প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করুন-
১. আপনি কি সত্যি সত্যিই মনে করেন যে, আপনার প্রভুর প্রতি অসন্তুষ্ট থেকে বা তার তকদীর বা বিধানের প্রতি অসন্তুষ্ট থেকে এবং আপনার রিযিক ও মেধা নিয়ে অসন্তুষ্ট থেকে আপনি শান্তি ও প্রশান্তি খুঁজে পাবেন?
২. আপনি কি আপনার প্রভুর কল্যাণ ও অনুগ্রহের জন্য যথাযথভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন, যাতে আপনি অন্যান্য অনুগ্রহ চাওয়ার যোগ্য হতে পারেন? যে ব্যক্তি অল্প কাজ পরিচালনা করতে অক্ষম, তার তো অধিক কাজ পরিচালনা করতে আরো বেশি অক্ষম হওয়ার কথা।
৩. আল্লাহ আমাদেরকে যে মেধা দান করেছেন তাকে যখন আমরা উন্নত ও সংস্কার করতে ব্যর্থ হই, তখন কেন আমরা তিনি যেটুকু মেধা দিয়েছেন তা থেকে উপকৃত হই না? যদি সে মেধাকে কাজে লাগাতাম তবে আমরা অন্যদেরকে কিছু দিতে পারতাম এবং সমাজে অবদান রাখতে পারতাম।
কাঙ্ক্ষিত গুণাবলি ও মেধা প্রায়ই আমাদের ভিতরে লুকায়িত থাকে। তবুও আমাদের অনেকের মাঝে মেধা মূল্যবান খনিজ পদার্থের মতো ভূ-গর্ভে লুকায়িত থাকে। এসব খনিজ পদার্থকে একমাত্র অভিজ্ঞ ব্যক্তিই খুঁড়ে বের করতে পারে এবং ধুয়ে-মুছে ও ঘষে-মেজে চকচকে করে তুলতে পারে। সুতরাং আমাদের কাজ হলো আমাদের মেধাকে খুঁড়ে তোলা ও তারপর একে উন্নত করা।