মহৎ হৃদয়ের মানুষেরা জনসেবা করেন কিন্তু জনগণকে তার সেবা করার সুযোগ দেন না। অতএব তিনি এমন প্রকল্প গ্রহণ করেন না যার জন্য তাকে অন্যের উপর নির্ভর করতে হয়।
(অন্যের উপর নির্ভর করে লাভ নেই) কেননা অন্যকে সাহায্য করার ব্যাপারে মানুষের একটি সীমা আছে সে সীমার ভিতরে থেকেই তারা অন্যের চেষ্টা ও উৎসর্গ করতে চায় এবং এ সীমার বাইরে তারা যায় না বললেই চলে। উদাহরণস্বরূপ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাতি ও আলী (রাঃ)-এর ছেলে হুসাইন (রাঃ)-এর কথা বিবেচনা করে দেখুন। তিনি খুন হলেন অথচ জাতি তার জন্য আন্দোলন করল না বরং তার খুনিরা তাদের বিজয়ের জন্য আল্লাহর প্রশংসা ধ্বনি দিয়ে দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় আমোদ উল্লাস করেছিল। একজন আরব কবি লিখেছেন-
جاءوا برأسك يا ابن بنت محمد ٭ متزملا بدمائه تزميلا
ويكبرون بأن قُتلت وإنما ٭ قتلوا بك التكبير والتهليلا
“হে মুহাম্মদের নাতি! তারা তোমার রক্তাক্ত শির নিয়ে এসেছে, (এটা নিয়ে) তারা (রাস্তায় রাস্তায়) আমোদ-উল্লাস করছে, তুমি নিহত হয়েছ তাই তারা আল্লাহর প্রশংসা ধ্বনি দিচ্ছে, অথচ তারা তোমাকে হত্যা করে তারা তাদের আল্লাহর প্রশংসাকরণকে ও তাদের ধর্মকে হত্যা করেছে।”
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ)-কে ভীষণভাবে চাবুক মেরে অত্যাচার করা হয়েছিল। তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হয়ে গিয়েছিলেন অথচ কেউ তাকে সাহায্য করার জন্য এক ইঞ্চিও এগিয়ে আসেনি। (সুতরাং অন্যের উপর নির্ভর করে কী লাভ?)
ইমাম ইবনে তাইমিয়াকে বন্দী করে গাধার পিঠে চড়িয়ে প্রদর্শন করে অপমান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে যে বিশাল জনতার দল তার জানাযার সালাতে শরীক হয়েছিল, এ ঘটনা যখন ঘটে তারা তো তখন কিছুই করেনি।
কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও এর কারণ শুধুমাত্র এই যে, অন্যকে সাহায্য করার ব্যাপারে লোকের একটা সীমা আছে, তারা সে সীমা অতিক্রম করে অন্যকে সাহায্য করে না। (অতএব, অন্যের উপর নির্ভর করে লাভ নেই)।
“সুতরাং তুমি আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডেক না।” (২৬-সূরা আশ শেয়ারা: আয়াত-২১৩)
“এবং তারা তাদের নিজেদের কোন ক্ষতি বা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না এবং তারা মৃত্যু, জীবন ও উত্থানের উপর কোন ক্ষমতা রাখে না।” (২৫-সূরা আল ফুরকান: আয়াত-৩)
“হে নবী (মুহাম্মদ), আপনার জন্য এবং যে সমস্ত ঈমানদারগণ আপনাকে অনুসরণ করে তাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।” (৮-সূরা আনফাল: আয়াত-৬৪)
“এবং (হে মুহাম্মদ!) সে চিরঞ্জীবের উপর নির্ভর করুন যিনি কখনও মৃত্যুবরণ করবেন না।” (২৫-সূরা আল ফুরকান: আয়াত-৫৮)
“(আল্লাহ যদি তোমাকে শাস্তি দিতে চান তবে) তারা আল্লাহর মোকাবিলায় তোমার কোনই উপকার করতে পারবে না।” (৪৫-সূরা আল জাছিয়াহ: আয়াত-১৯)