বর্ণিত আছে যে, ইমাম আহমদ (রহঃ) বাকী ইবনে মুখাল্লিদকে তাঁর অসুখের সময় দেখতে গেলেন এবং তাকে বললেন- “হে বাকী! আল্লাহর পুরস্কারের শুভ সংবাদে খুশি হও! সুস্থ থাকাকালীন দিনগুলো অসুস্থতা থেকে মুক্ত আর অসুস্থ থাকাকালীন দিনগুলো সুস্থতা থেকে মুক্ত।” অর্থাৎ সুস্থতার সময়ে কেউ অসুস্থতার কথা কল্পনাও করে না, কেননা, তখন যেমনটি আশা করে তেমনটিই পরিকল্পনা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায়। যাহোক, সাংঘাতিক অসুস্থতার সময়ে মানুষ সুস্থতার সময়ের বিষয়াদি ভুলে যায়।
দুর্বল হতাশা অসুস্থ আত্মার ভিতরেই পরিবেষ্টিত থাকে এবং এভাবেই হতাশা প্রবল হয়।
মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “আর যদি আমি মানুষকে আমার পক্ষ থেকে রহমত আস্বাদন করাই, অতঃপর তার থেকে তা ছিনিয়ে নেই, তবে সে অবশ্যই হতাশ ও অকৃতজ্ঞ হয়। আর যদি দুঃখ-কষ্ট তাকে স্পর্শ করার পর আমি তাকে সুখ-শান্তি আস্বাদন করাই তবে সে অবশ্যই বলবে যে, “আমার কাছ থেকে সব দুঃখ দূর হয়ে গেছে” তখন সে নিশ্চয় উৎফুল্ল ও অহংকারী হয়। তবে যারা ধৈর্য ধরে ও আমলে সালেহ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।”
এ আয়াত কয়টির ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসীর লিখেছেন-
“আল্লাহ মানুষের মন্দ চরিত্র সম্বন্ধে বর্ণনা দিচ্ছেন; তবে যেসব মু’মিন বান্দাগণের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন তারা এর ব্যতিক্রম। সাধারণত মানুষ যদি স্বচ্ছলতার পর অভাব-অনটনে পড়ে তবে সে ভবিষ্যতে আদৌ কল্যাণ দেখা থেকে হতাশ হয়ে যায়। সে অতীত সম্বন্ধে ঘৃণা প্রদর্শন করে-যেন সে কখনো সুদিন ভোগ করেনি এবং সে ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে হতাশ হয়ে যায় যেন সে কখনো উদ্ধার ও মুক্তির আশা করে না।”
যখন সে দুঃখ-কষ্ট অভাব-অনটনের পর স্বচ্ছলতার অভিজ্ঞতা লাভ করে তখন তার অবস্থা নিম্নরূপই হয়-
ذَهَبَ السَّيِّئَاتُ عَنِّي
আমার কাছ থেকে সব দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে গেছে। (১১-সূরা হুদ: আয়াত-১০) অন্যকথায়, এরপর আমার উপর মন্দ কোনো কিছুই আপতিত হবে না।
“নিশ্চয় সে উৎফুল্ল ও অহংকারী হয়।” (১১-সূরা হুদ: আয়াত ১০)
“তবে যারা ধৈর্য ধরে এবং আমলে সালেহ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। (১১-সূরা হুদ: আয়াত-১১)