ডা. জেমস গর্ডন গিলকী বলেছেন- “আত্ম পরিচিতির অভাবের সমস্যা বা সংকট প্রাগৈতিহাসিক এবং এটা সকল মানুষের বেলায় একই রকমের; একই রকমভাবে আত্মপরিচয়ের অভাবহীনতাও একটি সমস্যা, যা বহু ব্যক্তিগত ভারসাম্যহীনতা ও সমস্যার উৎস।”
অন্য একজন বলেছেন- “সৃষ্টির মাঝে আপনি এক অনন্য সৃষ্টি; কোনো কিছুই হুবহু আপনার মতো নয়, আর আপনি হুবহু অন্য কোনও কিছুর মতো নন। কারণ, স্রষ্টা সৃষ্টির মাঝে বিভিন্নতা সৃষ্টি করেছেন।”
إِنَّ سَعْيَكُمْ لَشَتَّىٰ
“নিশ্চয় তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন রকমের।" (৯২-সূরা আল লাইল: আয়াত-৪)
শিশু শিক্ষা বিষয়ে এনজেলো ব্যাটারো তেরোটি বই ও হাজার হাজার প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি একবার লিখেছেন- “যে ব্যক্তি নিজের মতো (অর্থাৎ স্বাধীনভাবে) বড় না হয়ে অন্যের আকৃতি ও চিন্তা-চেতনার অনুকরণে বড় হয়েছে তার চেয়ে হতভাগা আর কেউ নেই।”
“তিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, ফলে উপত্যকাসমূহ পরিমাণমত প্লাবিত হয়।” (১৩-সূরা হুদঃ আয়াত-১৭)
প্রত্যেক ব্যক্তিরই নিজস্ব স্বভাব বৈশিষ্ট্য, মেধা ও ক্ষমতা আছে, সুতরাং, কারো উচিত নয় তার ব্যক্তিত্বকে অন্যের মাঝে গলিয়ে বা বিকিয়ে দেয়া।
নোট: এ পুস্তকে এ ধরনের কথা বারবার এসেছে। তবে পাঠকগণ মনে রাখবেন যে, ধর্মীয় বিধি-বিধান, আদর্শ, রীতি-নীতি তথা আল্লাহ প্রেরিত আদর্শ মহামানব মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ, রীতি-নীতি, বিধি-বিধান ইত্যাদির ক্ষেত্রে এ ধরনের কথাবার্তা প্রযোজ্য নয়। —বঙ্গানুবাদ।
নিঃসন্দেহে আপনাকে সীমিত উপায়-উপকরণ ও ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। এগুলো আপনাকে অতি নির্দিষ্ট ও সীমিত উদ্দেশ্য সম্পাদনে সাহায্য করবে। একথা বিজ্ঞতার সাথেই বলা হয়েছে যে, নিজেকে বুঝতে ও চিনতে চেষ্টা কর; তাহলেই তুমি তোমার জীবনের উদ্দেশ্য কী তা জানতে পারবে।
ইমারসন তার আত্মবিশ্বাস বা স্ব-নির্ভরতা বিষয়ক প্রবন্ধে বলেছেন- “এমন এক সময় আসবে যখন মানুষের জ্ঞান এমন স্তরে পৌছবে যেখানে তার বিশ্বাস জন্মাবে যে, হিংসা হলো মূর্খতা এবং অনুকরণ হলো আত্মহত্যার শামিল। এবং প্রত্যেকেই নিজে যেমন তেমনই রীতিনীতি গ্রহণ করবে-পরিবেশ যেমনই থাক না কেন; (আল্লাহর পছন্দনীয় রীতি-নীতির পক্ষেই এ কথা গ্রহণীয় নচেৎ নয়। -অনুবাদক) কেননা, এতেই তার ভাগ্য। গোটা দুনিয়া কল্যাণে ভরপুর থাকলেও যতক্ষণ না কেউ তার নিজের জমিতে ফসলের চারা রোপণ করবে ও তার যত্ন করবে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউই কিছুই অর্জন করতে পারবে না। (অর্থাৎ নিজের কল্যাণ নিজেই সাধন করতে হবে। -অনুবাদক)
প্রত্যেকের মাঝে যে (নতুন নতুন) প্রতিভা লুকায়িত আছে তা পৃথিবীর নিকট নতুন এবং কেউই চেষ্টা না করে এ ক্ষমতার বিস্তার সম্বন্ধে জানতে পারে না।”
“এবং হে মুহাম্মদ! বলুন, “আমল কর। কেননা, শীঘ্রই আল্লাহ, তার রাসূল ও মু’মিনগণ তোমাদের আমল দেখবেন।”
“বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা পাপ করে নিজেদের উপর যুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়।” (সূরা-৩৯ আয-যুমার আয়াত-৫৩)
“এবং যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে এবং (পাপ করে) নিজেদের প্রতি জুলুম করে ফেললে (তৎক্ষণাৎ আল্লাহকে স্মরণ করে নিজেদের গুণাহ ক্ষমা চায়, আর আল্লাহ ছাড়া কে গুনাহ মাফ করতে পারে এবং তারা যা করে ফেলেছে জেনে শুনে তারা তা করতে থাকে না।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৫৩)
“আর যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করে বা (পাপ করে) নিজের প্রতি জুলুম করে পরে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে সে আল্লাহকে অতি ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময় পাবে।” (৪-সূরা আন নিসা: আয়াত-১১০)
“এবং যখন আমার বান্দাগণ আপনাকে আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে তখন (তাদেরকে বলে দিন যে,) আমি নিকটেই। যখন আহবানকারী আমাকে আহবান করে তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও যেন আমার আহবানে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে- যাতে করে তারা সঠিক পথ পায়।” (২-সূরা বাকারা: আয়াত-১৮৬)
“(না-কি তিনি উত্তম) যিনি দুর্দশাগ্রস্তরা যখন তাকে ডাকে তখন তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেন এবং দুঃখ দুর্দশা দূর করেন এবং তোমাদেরকে (যুগে যুগে) পৃথিবীর প্রতিনিধি বানান (না-কি তোমাদের প্রভুগণ উত্তম)? আল্লাহর সাথে অন্য কোনো ইলাহ বা উপাস্য আছে কি? তোমরা খুব কমই উপদেশগ্ৰহণ কর।” (২৭-সূরা আন নামল: আয়াত-৬২)
“যে সব ঈমানদারদিগকে মুনাফিকরা বলেছিল যে, নিশ্চয় (কাফির) লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে (যুদ্ধ করার জন্য) জমায়েত হয়েছে। অতএব, তাদেরকে ভয় কর; এতে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং তারা বলেছিলঃ ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি (আমাদের) কতইনা উত্তম অভিভাবক। সুতরাং তারা আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহ নিয়ে বিজয়ী হয়ে ফিরে এল- তাদের কোন ক্ষতিই হয়নি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহের অধিকারী।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৭৩-১৭৪)
“আর আমি আমার বিষয়কে আল্লাহর নিকট সোপর্দ করছি। নিশ্চয় আল্লাহ বান্দাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখেন। অতএব আল্লাহ তাকে তাদের চক্রান্ত থেকে রক্ষা করলেন।” (৪০-সূরা আল মু'মিন: আয়াত-৪৪-৪৫)