সর্বশক্তিমান আল্লার প্রতি ঈমান সুখ-শান্তির দিকে নিয়ে যায়, পক্ষান্তরে অবিশ্বাস বা কুফুরি বিভ্রান্তি ও দুঃখ-দুর্দশার পথে পরিচালিত করে। আমি বিশেষ ধরনের অনেক মেধাবী লোক-সম্বন্ধে পড়াশোনা করেছি; এদের কিছু লোককে প্রতিভাবানও বলা চলে; এরা প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও এদের অন্তর হেদায়েতের আলোবর্জিত এবং সত্যিকার অর্থে এরা শরীয়ত সম্বন্ধে মন্দ কথাই বলেছে। দুটি উদাহরণ মনে পড়ল-
আবুল আলা আল মুয়ারররি শরীয়ত সম্বন্ধে বলেছে, “পরস্পর বিরোধী, যার সম্বন্ধে আমরা চুপ থাকা ছাড়া কিছুই করতে পারি না।” দ্বিতীয়টি হলো ইবনে সীনার উক্তি, “যা কিছু প্রকৃতির উপর প্রভাব ফেলে তা হলো কার্যকর মেধা।”
এভাবে আমি বুঝতে পারলাম যে, আল্লাহর প্রতি যতটুকু ঈমান থাকবে ততটুকুই সুখী হওয়া যাবে।
অতি আধুনিককালের কিছু কথার অর্থ উপরের দুটি কথার অর্থের মতই, এগুলো প্রাচীনকালের ফেরআউনের কথার উত্তরসূরী-
“ফেরআউন বলেছিল, হে পরিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন ইলাহ আছে বলে আমার জানা নেই।" (২৮-সূরা আল কাছাছ: আয়াত-৩৮)
“ফেরআউন বলেছিল : আমি তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভু।” (৭৯-সূরা আল হাশর : আয়াত-২৪)
‘How Man Thinks’ গ্রন্থের গ্রন্থকার জেমস এলেন বলেছেন, “মানব জাতি বুঝতে পারবে যে, বস্তু ও মানুষ সম্বন্ধে তাদের ধারণা সতত পরিবর্তনশীল এবং বস্তু ও মানুষও পরিবর্তনশীল। ধরুন কেহ তার ধারণা পাল্টাল আর আমরা জেনে আশ্চর্য হব যে, কত শীঘ্রই তার পার্থিব জীবন পরিবর্তিত হয়ে যায়। অতএব যে পবিত্র বস্তু আমাদের উদ্দেশ্যকে গঠন করে তা, আমরা নিজেরাই। ভুল ধারণা ও তার কুফল সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন-
“বরং তোমরা ধারণা করেছিলে যে, রাসূল ও মু’মিনগণ কখনো তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে আসতে পারবে না এবং এটা তোমাদের মনে সুন্দর লেগেছিল। তোমরা মন্দ ধারণা করেছিলে এবং তোমরা ধ্বংসশীল জাতি হয়ে গিয়েছিল।” (৪৮-সূরা আল ফাতহ: আয়াত-১২)
“তারা জাহেলদের মতো আল্লাহ সম্বন্ধে ভুল ধারণা করেছিল; তারা বলত, কাজে আমাদের কি কোনো ভূমিকা আছে? (হে মুহাম্মাদ!) বলুন, নিশ্চয় সকল কাজই আল্লাহ অধিকারে।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৫৪)
জেমস এলেন আরো বলেছেন- “মানুষ যা করে তা তার ব্যক্তিগত চিন্তার প্রত্যক্ষ ফল এবং তার চিন্তার মধ্য দিয়ে তার লক্ষ্য অর্জন ও জয় করে নিতে সক্ষম। সে যদি একথা অস্বীকার করে তবে সে দুর্বল ও দুর্দশাগ্রস্ত থেকে যাবে।”
সর্বশক্তিমান আল্লাহ সত্যিকার দৃঢ় প্রত্যয় ও সঠিক চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে বলেছেন-
“যদি তারা অভিযানে বের হবার ইচ্ছা করত তবে তারা এর জন্য প্রস্তুতি নিত; কিন্তু আল্লাহ তাদের প্রেরণকে অপছন্দ করেছেন, তাই তিনি তাদেরকে পিছনে (বসিয়ে) রেখেছেন।” (৯-সূরা তাওবা: আয়াত-৪৬)
“তাদের মাঝে কোনো কল্যাণ আছে বলে যদি আল্লাহ জানতেন তবে তিনি তাদেরকে শ্রবণ করাতেন।” (৮-সূরা আনফাল: আয়াত-২৩)
“তাদের অন্তরে যা ছিল আল্লাহ তা জেনে নিয়েছেন এবং তিনি তাদেরকে পুরস্কার হিসেবে আসন্ন বিজয়ের সংবাদ প্রদান করেন।” (৪৮-সূরা আল ফাতহ: আয়াত-১৮)