সেন্ট হেলেনাতে নেপোলিয়ন বিস্ময়ে বলেছিলেন- “আমার গোটা জীবনে আমি ছয়টি সুখী দিনের কথাও জানি না।”
খলিফা হিশাম ইবনে আব্দুল মালেক বলেছেন- “আমি আমার জীবনের সুখী দিনগুলোকে স্মরণ করে তা গণনা করতে চেয়েছিলাম আর ওগুলোতে সর্বমোট তেরটি (সুখের দিন) পেয়েছিলাম।”
এবং তার পিতা প্রায়ই আফসোস করে বলতেন- “আমি যদি কখনো খলিফা না হতাম!”
বিখ্যাত ওয়ায়েজ ইবনে সাম্মাক একদা বাদশা হারুনুর রশীদের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। তখন বাদশা পিপাসার্ত হয়ে পানি চাইলেন। ইবনে সাম্মাক বললেন, “হে আমীরুল মু’মিনীন। আপনাকে যদি পানি না দেয়া হয় তবে কি আপনি আপনার অর্ধেক রাজত্বের বিনিময়ে পানি কিনে নিবেন?” বাদশা বললেন, “হ্যাঁ” তিনি যখন পানি পান করলেন তখন ইবনে সাম্মাক বললেন, “যদি কোনো অসুখের কারণে আপনি এ পানিটুকু (প্রশ্রাবের মাধ্যমে) দেহ থেকে বের করে দিতে না পারেন তবে কি আপনি আপনার দেহ থেকে পানিটুকু বের করে দিতে সক্ষম হওয়ার জন্য আপনার রাজত্বের অর্ধেক সম্পদ (চিকিৎসককে) মূল্য বাবদ দিবেন না?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ” তখন ইবনে সাম্মাক বললেন, যে রাজত্বের মূল্য পানি পানের সমানও নয় তবেতো সে রাজত্বে কোনো লাভও নেই।”
সমগ্র পৃথিবী এবং এতে যা কিছু আছে তার কোনো মূল্য, ওজন ও অর্থই নেই যদি তা ঈমানহীন হয়।
আল্লামা ইকবাল বলেছেন- “যখন ঈমান হারায় তখন শান্তিও হারায়। আর যে ব্যক্তি ধাৰ্মিক জীবনযাপন করে না তার দুনিয়ার জীবনের কোনও মূল্য নেই। আর যে লোক দ্বীনহীন বা ধর্মহীন জীবনে সন্তুষ্ট হলো সেতো ধ্বংসকে তার জীবনের সঙ্গী বানিয়ে নিল ।”
ইমারসন স্বনির্ভরতার উপর তার প্রবন্ধ নিম্নোক্ত কথা কয়টির মাধ্যমে সমাপ্ত করেন—
“রাজনৈতিক বিজয়, বেতন বৃদ্ধি, রোগারোগ্য বা সুখের দিন ফিরে পাওয়া–এসব কিছুই দিগন্তে আপনার জন্য আবছা হয়ে আছে। এগুলোকে বিশ্বাস করবেন না; কেননা, আপনি যেমনটি আশা করেন তেমনটি (কখনো) হবেন না এবং এ কারণে যে, আপনি নিজে ছাড়া আপনাকে অন্য কেউ শান্তি এনে দিতে পারবে না।”
ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً فَادْخُلِي فِي عِبَادِي وَادْخُلِي جَنَّتِي
“সন্তুষ্টচিত্তে ও সন্তোষভাজন হয়ে তোমার প্রভুর নিকট ফিরে আস! অতপর আমার (সম্মানিত) বান্দাদের পরিমণ্ডলে প্রবেশ কর।” (৮৯-সূরা আল ফাজর: আয়াত-২৮-২৯)
একজন প্রসিদ্ধ দার্শনিক ও নাট্যকার বলেছেন- “আমাদের দেহ থেকে টিউমার আপসারণ ও রোগ-ব্যাধি দূর করার চেয়েও বেশি প্রয়োজন হলো আমাদের চিন্তা-চেতনা থেকে মন্দ ধারণা দূর করা।”
দৈহিক রোগের তুলনায় কুরআনে চিন্তা-ভাবনা ও বিশ্বাসের বা ঈমানের রোগ সম্বন্ধে বেশি সতর্কবাণী আছে।
ফরাসী দার্শনিক মন্টেইন বলেছেন- “যা ঘটছে তার সম্বন্ধে কোনো লোকের মতামত বা ধারণা দ্বারা সে যতটা প্রভাবিত হয়—সে ঘটনার দ্বারা সে ততটা প্রভাবিত হয় না।” (ঘটনার চেয়ে ঘটনা সম্বন্ধে ধারণার দ্বারাই মানুষ বেশি প্রভাবিত হয়।)
নিম্নোক্ত হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করেছেন-
“হে আল্লাহ! আপনার ফয়সালার প্রতি আমাকে সন্তুষ্ট করে দিন, যাতে করে আমি বুঝতে পারি যে, আমার যা কিছু ঘটেছে তা না ঘটার মতো ছিল না এবং যা কিছু ঘটেনি তা ঘটার মতো ছিল না।”