যে কাজ আনন্দ বয়ে আনে তা হলো বই পড়ে জ্ঞানার্জন করে মনকে উন্নত করা।

আল জাহিয নামে এজন আরব লেখক কয়েক শতাব্দী পূর্বে বই পড়ে উদ্বিগ্নতা দূর করার (জন্য নিম্নরূপ) উপদেশ দিয়েছেন-

“(ভালো) বই এমন এক সঙ্গী যা অমঙ্গল, অকল্যাণ ও ক্ষতির দিকে আপনাকে প্রলোভন দেখায় না। এটা এমন বন্ধু যা আপনাকে বিরক্ত করে না। এটা এমন প্রতিবেশী যা আপনার কোন ক্ষতি করে না। এটা এমন একজন পরিচিত ব্যক্তি যিনি তোষামোদ করে আপনার থেকে কোন সুবিধা বাগিয়ে নিতে চায় না। এটা ছলনা ও মিথ্যার মাধ্যমে আপনাকে প্রতারণা করে না। বইয়ের পাতাগুলো পাঠকালে আপনার অনুভূতি শক্তিশালী ও মেধা তীক্ষ্ণ হয়। জীবনী পড়ে মানুষকে মূল্যায়ন করতে পারবেন।

এমনও বলা হয় যে, মাঝে মাঝে একমাসে বইয়ের যে ক’পাতা পড়ে যা শিখা যায় তা (সাধারণ) জনগণের মুখ থেকে একশত বছরেও শিখা যায় না। এসব কিছুই উপকার করে অথচ এতে সম্পদের ক্ষতি হয় না এবং বেতনের জন্য অপেক্ষাকারী শিক্ষকের দরজায় ধর্ণা ধরতে হয় না অথবা এমন কারো কাছ থেকে শিখতে হয়না যে আচার-আচরণে আপনার চেয়ে নিম্ন মানের। বই দিনে ও রাত্রে, ঘরে ও বাইরে (ভ্রমণকালে) আপনার আনুগত্য করে। বই (শিক্ষকের মতো) তন্দ্রা আসাতে এমনকি গভীর রাতেও (ঘুমে) ক্লান্ত হয়ে পড়ে না।

এটা এমনই শিক্ষক, যখনই আপনার দরকার তখনই এটা আপনার সেবায় নিয়োজিত। এটা এমন শিক্ষক যাকে আপনি বেতন না দিলেও এটা আপনাকে সেবা (তথা জ্ঞান) দিতে নারাজ হয় না। আপনি এটাকে পরিত্যাগ করলেও এটা আপনার আনুগত্য কমিয়ে দেয় না। সবাই যখন আপনার বিরোধী হয়ে শক্রতা দেখায় তখন এটা আপনার পাশে থাকে (ও আপনাকে সাহায্য করে)। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি বইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখবেন ততক্ষণ পর্যন্ত অলসদের সঙ্গ আপনার দরকার নেই।

দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পথচারীদেরকে দেখা থেকে এটা আপনাকে বিরত রাখবে। হ্যাংলা, হাল্কা বা চপল স্বভাব, অশ্লীল ভাষাভাষী ও গণ্ডমূর্খদের সাথে মিলামিশা করা থেকে বই আপনাকে রক্ষা করবে। বইয়ের শুধুমাত্র যদি এ একটাই উপকারিতা থাকত যে, এটা আপনাকে বোকার মতো দিবাস্বপ্ন দেখা থেকে ও হ্যাংলাপনা করা থেকে বিরত রাখে, তবুও এটাকে অবশ্যই আপনার এমন একজন সত্যিকার ও প্রকৃত বন্ধু হিসেবে গণ্য করতে হবে যিনি নাকি আপনাকে মহা অনুগ্রহ দান করেছেন।”