আজই যেন আপনার শেষ দিন এভাবে আজকের দিনটি কাটান। এ ধরনের মানসিকতা ও জীবন সম্বন্ধে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি যদি থাকে তবে রাগ-দুঃখকে প্রশ্রয় দিয়ে আপনার সামান্য যে সময়টুকু আছে তা নষ্ট করার কোন যুক্তি নেই। এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إذا أَصْبَحْتَ فَلا تَنْتَظِرِ المساءَ وإذا أمسيـْتَ فلا تَنْتَظِرِ الصَّباحَ

“সকাল বেলা সন্ধ্যাবেলা দেখার আশা করো না। আর সন্ধ্যাকালে সকাল বেলা দেখার আশা করো না।”

অন্য কথায় অতীত নিয়ে না ভেবে ও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে আত্মা-দেহ-মন নিয়ে জীবন শুধু আজকের জন্যই।

একজন আরব কবি বলেন-

“যা অতীত হয়ে গেছে তা চিরদিনের জন্য চলে গেছে আর যা আশা করা হয় তাতো অজানা –অজ্ঞাত।”

“আর তোমার যা আছে তা হলো বর্তমান মুহূর্তটি।”

অতীতের চিন্তায়-বিভোর হওয়া এবং অতীতের দুঃখ-কষ্টকে বর্তমানে টেনে আনা অস্থির ও অসুস্থ মনের লক্ষণ।

চীনা (চীন দেশীয়) প্রবাদে বলা হয় “সেতুতে পৌছার আগেই সেতু পার হয়ো না।” অন্য কথায়, ঘটনা ঘটার আগেই তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করো না।

আমাদের একজন ধাৰ্মিক পূর্বসূরী বলেছেন-

“হে আদম সন্তান! নিশ্চয় তোমাদের দিন মাত্র তিনটি। গতকাল আর এটা তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আগামীকাল যা এখনও আসেনি এবং আজ। সুতরাং আজকের দিনে আল্লাহকে ভয় কর, তাকে মান্য কর।”

যে নাকি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের উদ্বেগ নিয়ে বেড়ায় সে কিভাবে বাচতে পারে? তা ইতোমধ্যে ঘটে গেছে সর্বদা তার কথা মনে করে করে মানুষ কিভাবে শান্তি পেতে পারে? যে অতীতের দুঃখজনক ঘটনার কথা মনে করে, সে শুধু ব্যথাই পায়, এতে তার কোন লাভ হয় না।

“সকালে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁচার আশা করো না ও সন্ধ্যায় সকাল পর্যন্ত বাঁচার আশা করো না।”

এ কথার অর্থ হল এ পৃথিবীর জন্য আমাদের বড় ধরনের ও দীর্ঘ-কালীন আশা থাকা উচিত নয়। মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষা করুন। নেক আমল করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করুন। আপনার উদ্বেগ ও আকাঙ্ক্ষাকে আজকের দিনের সীমা পেরিয়ে যেতে দেবেন না। এ নীতি আপনাকে মনোযোগী হতে এবং প্রতিদিন উৎপাদনশীল হওয়ার জন্য আপনার সমস্ত শক্তিকে ব্যয় করতে সাহায্য করবে। দক্ষতার সাথে সময়কে কাজে লাগান এবং আপনার আচার-আচরণ, চাল-চলনের উন্নতি করে, আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিয়ে ও অন্যের সাথে আপনার সম্পর্ক দৃঢ় করে আজ কোন কিছু অর্জন করার জন্য আপনার সকল প্রচেষ্টাকে কাজে লাগান।