ঈমান বা বিশ্বাস এর ধন-ভাণ্ডার হতে যারা রিক্তহস্ত তারাই প্রকৃত অর্থে হতভাগা। তারা সর্বদাই দুর্দশাগ্রস্ত ও ক্রুদ্ধ।
وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا
যে লোক আমার স্মারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (যে এ কুরআনে বিশ্বাসও করে না এবং কুরআনের বিধানানুযায়ী আমলও করে না) তার জন্য এক কষ্টদায়ক জীবন রয়েছে আর আখিরাতে আমি তাকে অন্ধ করে তুলব। (২০-সূরা ত্বাহা: আয়াত ১২৪)
আত্মাকে পবিত্র করার, উদ্বিগ্নতা ও দুশ্চিন্তা দূর করার একমাত্র উপায় হল সমগ্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর উপর পুরোপুরি ঈমান রাখা। প্রকৃতপক্ষে, যখন কারো ঈমান থাকে না তখন জীবনে কোন প্রকৃত অর্থ থাকতে পারে না।
একজন পাকা নাস্তিক যদি সে ঈমান না আনে তবে সে সর্বাপেক্ষা ভালো যে কাজটি করতে পারে তা হলো- সে আত্মহনন করতে পারে। এমনটি করে কমপক্ষে সে যে অন্ধকারাচ্ছন্ন ও হতভাগা জীবন-যাপন করছে তার থেকে সে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে। ঈমানহীন জীবন কতই না হীন ও তুচ্ছ!
আল্লাহর সীমা লঙ্ঘনকারীদের জীবন কতইনা চিরন্তনভাবে অভিশপ্ত!
“(হেদায়েত পথ হতে) আমি তাদের মনোভাবের (তাদের দৃষ্টিভঙ্গির) তেমনি পরিবর্তন করে দিব যেমনি তারা এর প্রতি প্রথমবার বিশ্বাস স্থাপন করেনি (তথা ঈমান আনেনি) এবং আমি তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াতে দিব।” (৬-সূরা আল আন’আম : আয়াত-১১০)
আল্লাহ ছাড়া কারো উপাস্য হওয়ার অধিকার নেই। এ প্রশ্নাতীত ঈমান (বিশ্বাস) রাখার সময় কি পৃথিবীতে আসেনি? মূর্তিতে বিশ্বাস যে হাস্যকর, নাস্তিকতা যে অযৌক্তিক, নবীগণ যে সত্যবাদী ছিলেন এবং আকাশসমূহ ও পৃথিবীর মালিকানা যে একমাত্র আল্লাহরই শত শত বছর অভিজ্ঞতার পরেও কি মানবজাতিকে এ বাস্তবতার দিকে পরিচালিত হওয়া উচিত নয়? সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য এবং তিনি সবকিছুর ওপরই ক্ষমতাবান।
আপনার ঈমানের সবলতা বা দুর্বলতা ও দৃঢ়তা বা কোমলতার স্তর অনুপাতেই আপনি সুখী হবেন।
“খাটি ঈমানদার হয়ে তোমাদের মধ্য থেকে যে পুরুষ বা নারী নেক আমল সম্পাদন করে অবশ্যই তাকে আমি একটি পবিত্র জীবন দান করব। (অর্থাৎ এ দুনিয়ার সম্মান, পরিতৃপ্তি ও হালাল রিযিক দিব) এবং তারা যে উত্তম কাজ করত তদনুপাতে আমি তাদেরকে অবশ্যই পুরস্কার দিব।” (১৬-সূরা আন নাহল: আয়াত-৯৭)
এ আয়াতে ‘পবিত্র জীবন’ বলতে আমাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতির প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও একটি অবিচল হৃদয় যা তাকে ভালোবাসে এর কথা বলা হচ্ছে। যে লোকেরা এ ‘পবিত্র জীবন’ যাপন করে তারা যখন সমস্যা কবলিত হয় তখন তাদের স্নায়ু (মন) শান্তও থাকে বটে। তাদের ওপর আপতিত সব কিছুর প্রতিই তারা সন্তুষ্ট থাকবে। কেননা, (তারা নিশ্চিত জানে যে) এটা তাদের জন্য (ভাগ্যে) লিখা ছিল। আরো এ কারণে যে, আল্লাহকে তারা তাদের প্রভু হিসেবে, ইসলামকে তাদের জীবন বিধান হিসেবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাদের নবী ও রাসূল হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিয়েছে।