১. যিকর ও তাকবীর

১০ যিলহজ কুরবানীর দিন। এ দিনটি মূলত আইয়ামে তাশরীকের অন্তর্ভুক্ত। আইয়ামে তাশরীক হলো, যিলহজের ১০, ১১, ১২ এবং (যিনি বিলম্ব করেছেন তার জন্য) ১৩ তারিখ। তাশরীকের এই দিনগুলোতে হাজী সাহেবদের করণীয় হলো, বেশি বেশি আল্লাহ্‌র যিকর করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ۞وَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ فِيٓ أَيَّامٖ مَّعۡدُودَٰتٖۚ فَمَن تَعَجَّلَ فِي يَوۡمَيۡنِ فَلَآ إِثۡمَ عَلَيۡهِ وَمَن تَأَخَّرَ فَلَآ إِثۡمَ عَلَيۡهِۖ لِمَنِ ٱتَّقَىٰۗ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّكُمۡ إِلَيۡهِ تُحۡشَرُونَ ٢٠٣ ﴾ [البقرة: ٢٠٣]

‘আর আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিনসমূহে। অতঃপর যে তাড়াহুড়া করে দু’দিনে চলে আসবে, তার কোন পাপ নেই। আর যে বিলম্ব করবে, তারও কোন অপরাধ নেই। (এ বিধান) তার জন্য, যে তাকওয়া অবলম্বন করেছে। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় তোমাদেরকে তাঁরই কাছে সমবেত করা হবে।’[1]

আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রা. বলেন, أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ দ্বারা উদ্দেশ্য, আইয়ামে তাশরীক।

নুবাইশা আল-হুযালী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَيَّامُ التَّشْرِيقِ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ ... وَذِكْرٍ لِلَّهِ»

‘আইয়ামের তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার...ও আল্লাহ তা‘আলার যিকরের দিন।’[2]

২. ওয়াজ-নসীহত

এদিন হজের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ মানুষদেরকে দীন শিক্ষা দেয়ার জন্য খুতবা প্রদান করবেন। আবূ বাকরা রা. বর্ণিত হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে যে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উটের ওপর বসা ছিলেন আর এক ব্যক্তি তার লাগাম ধরে ছিল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«أَىُّ يَوْمٍ هَذَا؟ فَسَكَتْنَا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ سِوَى اسْمِهِ. قَالَ أَلَيْسَ يَوْمَ النَّحْرِ قُلْنَا بَلَى. قَالَ فَأَىُّ شَهْرٍ هَذَا فَسَكَتْنَا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ فَقَالَ أَلَيْسَ بِذِى الْحِجَّةِ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ بَيْنَكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا ، فِى شَهْرِكُمْ هَذَا ، فِى بَلَدِكُمْ هَذَا لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ ، فَإِنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أَنْ يُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ مِنْهُ».

এটি কোন্ দিন? আমরা এই ভেবে চুপ করে রইলাম যে, হয়তো তিনি এদিনের পূর্বের নাম ছাড়া অন্য কোন নাম দেবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, অবশ্যই। তিনি আবার বললেন, এটি কোন্ মাস? আমরা এই ভেবে চুপ রইলাম যে, হয়তো তিনি এর পূর্বের নাম ছাড়া অন্য কোন নাম দেবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা কি যিলহজ মাস নয়? আমরা বললাম, অবশ্যই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের পারস্পরিক সম্মান তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই মাস এবং তোমাদের এই শহরের মতই হারাম তথা পবিত্র ও সম্মানিত। উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে এ কথা পঁŠছে দেয়। কারণ উপস্থিত ব্যক্তি হয়তো এমন ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেবে যে তার চেয়ে অধিক হেফাযতকারী হবে।’[3]

তাছাড়া মানুষকে সঠিক পথের দিশা দান করা এবং শিক্ষা প্রদান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আলিম ও দা‘ঈদের জন্য অপরিহার্য হলো, যথাযথভাবে তাদের এ দায়িত্ব পালন করা।

[1]. বাকারা : ২০৩।

[2]. মুসলিম : ১১৪১।

[3]. বুখারী : ৬৭।